পশ্চিমবঙ্গে ত্রাণ না পাওয়ার ৪০ হাজার অভিযোগ

পশ্চিমবঙ্গে আম্পানের ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে বিক্ষোভ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি।
পশ্চিমবঙ্গে আম্পানের ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে বিক্ষোভ। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি।

পশ্চিমবঙ্গের আম্পানবিধ্বস্ত এলাকার ৪০ হাজার মানুষ সরকারি ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছে।

অভিযোগকারীরা বলছেন, গরিব ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দেওয়া নগদ অর্থ, ত্রাণসামগ্রী আত্মসাৎ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত গরিবদের বাদ দিয়ে শাসক দল তৃণমূলের গ্রামপর্যায়ের নেতারা ত্রাণ ও নগদ অর্থ দলীয় লোকজনকে দিয়েছেন। দিয়েছেন আত্মীয়-পরিজনদের। ফলে তিনতলা বাড়ির বাসিন্দারাও পেয়েছেন ত্রাণ ও অর্থ।

ব্যাপক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি কড়া নির্দেশ দেন, যাঁরা ত্রাণ ও অর্থ পাওয়ার যোগ্য নয়, কিন্তু পেয়েছেন, তা অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে।একই সঙ্গে যাঁরা ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট থানায় আবেদন করতে বলেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশনার পর শুরু হয় ক্ষতিগ্রস্ত ও ত্রাণ না পাওয়া গরিব মানুষের আবেদন। ইতিমধ্যে আবেদন করেছেন পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়াসহ অন্যান্য জেলার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ।

পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে ৪০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। প্রতিটি আবেদনে বলা হয়েছে, তাঁরা ত্রাণসামগ্রী ও নগদ ২০ হাজার রুপি পাননি।

ত্রাণ না পাওয়ার সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে। আবেদন সংখ্যা ৭ হাজার ৫০০। হাওড়া জেলায় ৬ হাজার। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ৪ হাজার ৫০০। উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ২ হাজার ৫০০। থানায় ৪০ হাজার আবেদন জমা পড়লে তা যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয় বিডিও অফিসে। সেখানে যাচাই করে বলা হয়, এর মধ্যে ৩৪ হাজার আবেদনের সত্যতা রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজ্য সচিবালয় নবান্ন থেকে এক নির্দেশিকায় বলা হয়, সামান্য ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হবে ৫ হাজার রুপি করে।
নদীয়ার জেলা প্রশাসক বিভু গয়াল ১০০ জন পঞ্চায়েত প্রতিনিধির ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে দিয়েছেন। নির্দেশে বলা হয়েছে, যতক্ষণ না তাঁরা ২০ হাজার রুপি করে ফেরত দিচ্ছেন, ততক্ষণ তাঁদের ব্যাংক হিসাব বন্ধ থাকবে।

ত্রাণ-অর্থ আত্মসাৎ ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যজুড়ে শাসকদলের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হচ্ছে। দাবি উঠেছে, দুর্নীতির মাধ্যমে নেওয়া ত্রাণ ও অর্থ অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে।

গতকাল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি, হুগলির সিঙ্গুর, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম, পটাশপুর, উত্তর ২৪ পরগনার জলেশ্বর, বীরভূমের নলহাটিতে ব্যাপক আন্দোলন হয়েছে। ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত হানে পশ্চিমবঙ্গে।