কলকাতার ৪৫ অতিসংক্রমিত এলাকায় কাল থেকে ফের লকডাউন

কনটেনমেন্ট জোন আলীপুরের আবাসন সত্যম টাওয়ার ও আলীপুর রোড। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি ।
কনটেনমেন্ট জোন আলীপুরের আবাসন সত্যম টাওয়ার ও আলীপুর রোড। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি ।

কলকাতাসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে করোনার সংক্রমণ এখনো বেশ দাপটেই বিস্তার ঘটিয়ে চলেছে । বাড়ছে দুর্ভোগ, মারা যাচ্ছে মানুষ। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কলকাতা পৌরসভা অতিসংক্রমিত এলাকাগুলো আবার লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।কাল বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতা পৌর এলাকার ৪৫টি অতিসংক্রমিত এলাকাসহ রাজ্যের বিভিন্ন কনটেনমেন্ট জোনে বহাল হবে এই কড়া লকডাউন।

রাজ্য সরকার বলেছে, এখন আর লকডাউন মানছে না বহু মানুষ। মাস্ক না পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এ থেকে রক্ষা পেতে রাজ্য সরকার কলকাতাসহ রাজ্যের সব অতিসংক্রমিত এলাকায় কড়া লকডাউন বহাল রাখছে। কলকাতায় রয়েছে ৪৫টি অতিসংক্রমিত এলাকা। এরআগে চারবার লকডাউন, আনলক-ওয়ান, আনরক-টু বহাল করেও করোনার সংক্রমণ আর মৃত্যুর মিছিল থামানো যায়নি। তাই নতুন করে লকডাউনের রাশ টানতে রাজ্য সরকার ফের ১৪ দিনের কড়া লকডাউন বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছে। কাল বিকেল ৫টা থেকে শুরু হবে এই নতুন লকডাউন।

গতকাল কলকাতার সাবেক মেয়র ও বর্তমান মুখ্য পৌর প্রশাসক ও রাজ্যের পৌর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, কনটেনমেন্ট জোনে মানুষ মানছে না লকডাউন। অনেকেই পরছে না মাস্ক। এতে ছড়িয়ে পড়ছে করোনার সংক্রমণ। সংক্রমণ রোধে পৌরসভা নতুন করে কড়া লকডাউন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গতকাল সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়, ১৪দিনের নতুন লকডাউন চলবে কলকাতার ৪৫টি অতিসংক্রান্ত এলাকাসহ রাজ্যের সব কনটেনমেন্ট জোনে। এ সময় বন্ধ রাখা হবে ওই এলাকার সব সরকারি ও বেসরকারি অফিস। চলবে না যানবাহন। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া সব দোকানপাট ও হাটবাজার বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে হোটেল–রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকান। বন্ধ থাকবে শিল্পকারখানাসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড। বাড়ি থেকে কেউ বের হতে পারবে না বা ওই নির্দিষ্ট এলাকায় কেউ ঢুকতে পারবে না। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও থানায় ফোন করলে পুলিশ বা স্থানীয় প্রশাসনের কর্মীরা প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেবেন।

একই ভাবে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়ও চলবে নতুন করে লকডাউন। মালদহের কালিয়াচক, ইংরেজ বাজার ও ওল্ড মালদহ টাউনকে আনা হয়েছে এই লকডাউনের আওতায়। আনা হচ্ছে উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা সহ উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন কনটেনমেন্ট জোন এলাকাকে।

কলকাতা ছাড়া পাশ্ববর্তী উত্তর ২৪ পরগনায় রয়েছে ২১৯টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৫৫টি ও হাওড়ায় ১৪৬টি কনটেনমেন্ট জোন। এখানেও বহাল হচ্ছে কড়া লকডাউন।

কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল নারায়ণীতে ২০ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় সংক্রমিত হওয়ায় গতকাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই হাসপাতাল। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের বেশ কজন কর্মীও সংক্রমিত করোনায়।

স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে মঙ্গলবারের বুলেটিনে বলা হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় এই রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে ৮৫০ জন। মারা গেছে ২৫ জন। সবমিলিয়ে মৃত্যু ৮০৪ জন। মোট সংক্রমিত ২৩ হাজার ৫৩৭ জন। তবে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ হাজার ৭৯০ জন।