হার্ড ইমিউনিটিতে করোনা মোকাবিলা নিয়ে সংশয়

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাসের মহামারি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার পর হার্ড ইমিউনিটির বিষয়টি আলোচনায় আসে। বলা হচ্ছিল, একটি দেশের সিংহভাগ জনগোষ্ঠী সংক্রমিত হলে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন সম্ভব হবে। এতে করোনা মহামারির বিস্তারও কমে আসবে। কিন্তু স্পেনের একটি গবেষণায় এই ধারণার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সিংহভাগ জনগোষ্ঠী সংক্রমিত হলেই যে করোনার বিস্তার কমে যাবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেট গত সোমবার এ-সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে। গবেষণাটি করেছেন স্পেনেরই একদল গবেষক। এতে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েরও অংশগ্রহণ ছিল। ইউরোপে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় পরিসরের গবেষণা। এতে বলা হয়, স্পেনে সংক্রমিত হওয়া ৬০ হাজারের বেশি মানুষের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের উদ্দেশ্য হলো, সিংহভাগ জনগোষ্ঠী আক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে তাদের শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। এই অ্যান্টিবডি পরবর্তী সময়ে শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিহত করে। ফলে নতুন করে আর সংক্রমণ ঘটবে না। এ ক্ষেত্রে শর্ত হলো, একটি দেশের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ মানুষকে সংক্রমিত হতে হবে।

জনস হপকিনসের তথ্যমতে, স্পেনে শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীর সংখ্যা আড়াই লাখের বেশি। মারা গেছেন ২৮ হাজারের বেশি মানুষ।

বিবিসি জানায়, গবেষণা নিবন্ধের রচয়িতারা মন্তব্য করেছেন, স্পেনে করোনার ব্যাপক সংক্রমণ ঘটলেও রোগীদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার হার খুবই কম। এই হার হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের জন্য একেবারেই অপ্রতুল। তাঁরা আরও মন্তব্য করেছেন, কাজেই হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করতে হলে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক মৃত্যু আর স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ব্যাপক চাপ মেনে নিতে হবে। এই পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন মেনে চলা এবং রোগী ও রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত ও পৃথক্‌করণই হতে পারে মহামারি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টার অপরিহার্য কৌশল।