পশ্চিমবঙ্গে করোনার মধ্যে নারদ মামলার নড়াচড়া

নারদ পোর্টলের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েল। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
নারদ পোর্টলের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েল। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ক্ষমতাসীন তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে নারদ কেলেঙ্কারির মামলার নড়াচড়া শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলকার এ মামলার অভিযোগে থাকা ব্যক্তিদের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আয়–ব্যয়ের হিসাব দিতে বলেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। এ সংস্থাই নারদা মামলাটি পরিচালনা করছে।

২০১৬ সালের মার্চ মাসে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের মুখে স্টিং অপারেশনের (গোপনে ভিডিও ধারণ) মাধ্যমে ফাঁস হয়েছিল নারদকান্ড। ওই কান্ডে ভিডিও ফুটেজে ফাঁস করা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের ১৩ নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ও এক পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণের ছবি।

২০১৬ সালের ১৪ মার্চ নারদকান্ডের প্রথম ভিডিওটি ফাঁস করে দিল্লির নারদ নিউজ ডট কম নামের একটি ওয়েব পোর্টাল । এরপরেই তা কলকাতায় ফাঁস করা হয় বিজেপির কার্যালয়ে। দিল্লিতে নারদ নিউজ ডট কম'এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথু স্যামুয়েল এই স্টিং অপারেশনের ভিডিওটি ফাঁস করে দেশব্যাপী আলোড়ন তোলেন। ওই ভিডিওতে ছয় তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায়, সুলতান আহমেদ, সৌগত রায় ,শুভেন্দু অধিকারী, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূণ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ রাজ্য মন্ত্রীসভার দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি, ফিরহাদ হাকিম, সাবেক মন্ত্রী মদন মিত্র , কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক ইকবাল আহমেদ এবং সাবেক আইপিএস পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ এম এইচ মির্জার ঘুষগ্রহণের ছবি ফাঁস করা হয়। পরে ২১ মার্চ ফাঁস হয় দ্বিতীয় ফুটেজ।

এবার সেই মামলা নতুন করে তুলে ইডি অভিযুক্তদের কাছে ইমেল করে সাত বছরের আয় ব্যয়ের হিসাব চেয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত সাংসদ সুলতান আহমেদ মারা গেছেন। মুকুল রায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এর আগে অবশ্য সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় সাত বছরের আয়ব্যয়ের হিসাব দেওয়ায় তাঁর কাছে নোটিশ পাঠানো হয়নি। বাকি সবাইকে ৩১ জুলাইর মধ্যে এই ৭ বছরের আয়ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে বলেছে ইডি। এই আসামিদের মধ্যে কেবল একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। তিনি পুলিশ কর্মকর্তা এসএমএইচ মির্জা। যদিও তৃণমূল বারবারই বলে এসেছে প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকেই ইডি ও সিবিআইকে ব্যবহার করে আসছে বিজেপি। সিবিআই'ও একই মামলা দায়ের করেছে তৃণমূলের এই নেতাদের বিরুদ্ধে।

স্টিং অপারেশনের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা ও মন্ত্রীদের ঘরে ঘরে, হাতে হাতে পৌঁছে যাচ্ছে টাকা।