ভারতের করোনার ১০ 'হটস্পটের' দুটিই পশ্চিমবঙ্গের

কলকাতায় আজ থেকে শুরু হয়েছে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি ।
কলকাতায় আজ থেকে শুরু হয়েছে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি ।

ভারতে করোনার সংক্রমণের নিরিখে উঠে আসা ১০টি হটস্পট বা ব্যাপক সংক্রমিত এলাকার মধ্যে দুটি নাম উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। এর মধ্যে ৪ নম্বরে উঠে এসেছে কলকাতার নাম। আর ৯ নম্বরে উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গেরই উত্তর ২৪পরগনা জেলার নাম। এ তথ্য দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। 


এই হিসাবে বলা হয়েছে, ভারতে এখন ১০টি শীর্ষ হটস্পটের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্রের পুনে। এরপর কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু। তৃতীয় স্থানে অন্ধ্র প্রদেশের হায়দরাবাদ। চতুর্থ স্থানে কলকাতার পর রয়েছে যথাক্রমে ছত্তিশগড়ের রায়গড়, মহারাষ্ট্রের পালঘর, আসামের কামরূপ, অন্ধ্র প্রদেশের পূর্ব গোদাবরী ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা এবং অন্ধ্র প্রদেশের কুর্নুল। গত জুনের শেষে তৈরি এই ১০-এর তালিকায় শীর্ষে ছিল দিল্লি, মুম্বাই ও আহমেদাবাদ। জুলাইয়ের শেষে হলো পুনে, বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদ।

২৬ জুলাই পর্যন্ত করা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমীক্ষা রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে এই তথ্য।

এদিকে ১ আগস্ট থেকে ভারতে শুরু হচ্ছে আনলক-৩। এর আগে পাঁচবার লকডাউন করার পর আনলক-১ এবং আনলক-২ বহাল হয়েছে দেশজুড়ে। কাল ৩১ জুলাই শেষ হচ্ছে আনলক-২। আর ১ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে আনলক-৩।

গতকাল বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় সরকার এই আনলক-৩-এর নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, আনলক-৩-এ আর দেশব্যাপী থাকছে না রাতের কারফিউ। যোগ অনুশীলন কেন্দ্র এবং জিম খোলা যাবে ৫ আগস্ট থেকে। ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করতে হবে সামাজিক দূরত্ব মেনে। আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল হবে অনুমতি সাপেক্ষে। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে স্কুল, কলেজ ও কোচিং সেন্টার। বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল ও লোকাল ট্রেন। বন্ধ থাকবে সিনেমা হল, সুইমিং পুল, বিনোদন পার্ক, থিয়েটার, অডিটোরিয়াম, পানশালা এবং বার। বন্ধ থাকবে জনসভা, ক্রীড়া এবং শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানও। আর দেশের সব কনটেনমেন্ট জোনে থাকবে কড়া লকডাউন।

কলকাতায় শুরু র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছে করোনার র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট। এই পরীক্ষায় ৩০ মিনিটের মধ্যে জানা যাবে পরীক্ষার ফলাফল। কলকাতা পৌর করপোরেশন ১৪৪টি ওয়ার্ডের ১৬টি এলাকায় চলবে এই অ্যান্টিজেন পরীক্ষা। এতে একটি কীট বা স্ট্রিপে একসঙ্গে ১০ জনের সোয়াব পরীক্ষা করা যাবে। তবে রিপোর্ট আসবে ১০ জনেরই পৃথকভাবে। প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি বরোতে ৫০টি স্ট্রিপে ১০ জন করে ৫০০ জনের পরীক্ষা করা হবে।

প্রাথমিক পর্যায়ে এই অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হবে কলকাতার বিভিন্ন সংক্রমিত এলাকা, হাটবাজার, বস্তি, ঘিঞ্জি এলাকা এবং শ্রমিক আবাসনে। ভারতের আইসিএমআর ইতিমধ্যে এই অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে।

দক্ষিণ কলকাতার চেতলায় এই নতুন পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন রাজ্যের পৌরমন্ত্রী এবং কলকাতার সাবেক মেয়র ও বর্তমান মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গে করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যু বেড়েই চলেছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে প্রকাশিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে আরও নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে ২ হাজার ২৯৪ জন। আর মারা গেছে ৪১ জন। এর মধ্যে আবার কলকাতায় সংক্রমণের সংখ্যা ৬৮৮ এবং মৃত্যু সংখ্যা ১৭ জন। আর উত্তর ২৪ পরগনায় সংক্রমণ সংখ্যা ৫৫৪ জন। পাশাপাশি সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৪ জন। এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৫ হাজার ২৫৮ জন আর মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৪৯০ জন। আর মোট সুস্থ হওয়ার সংখ্যা ৪৪ হাজার ১১৬ জন।