প্রণব মুখার্জির আরোগ্য কামনায় ৭২ ঘণ্টার 'মহামৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞ'

প্রণব মুখার্জি
প্রণব মুখার্জি

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির দ্রুত আরোগ্য কামনায় গতকাল মঙ্গলবার থেকে ৭২ ঘণ্টার ‘মহামৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞ’ শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে তাঁর নিজের গ্রামের বাড়ি বীরভূমের কীর্ণাহারের মিরিটি গ্রামে স্থানীয় কংগ্রেস কর্মী ও তাঁর আত্মীয়–পরিজন এ যজ্ঞ করছেন স্থানীয় যপেশ্বর শিবমন্দিরে।

রোববার রাতে সাবেক রাষ্ট্রপতি দিল্লির বাসভবনের বাথরুমে পড়ে গিয়ে আঘাত পান। গত সোমবার দুপুরে প্রথমে প্রণব মুখার্জির করোনায় সংক্রমণের খবর আসে পশ্চিমবঙ্গে। রাতে আসে তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের খবর। তাই তাঁর করোনা পজিটিভ হওয়ার প্রথম খবরে পশ্চিমবঙ্গে তীব্র উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছে।

এই ‘মহামৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞে’ তিনজন পুরোহিত যোগ দিয়েছেন। গ্রামবাসী বলেছেন, এই যজ্ঞের আগুন জ্বলবে ৭২ ঘণ্টা। চলবে মন্ত্র–স্তোত্র পাঠ এবং আহুতি।

সাবেক রাষ্ট্রপতির ছেলে অভিষেক মুখার্জি জানিয়েছেন, প্রণব মুখার্জি রাতে বাথরুমে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসক এনে চিকিৎসা করে তাঁকে সুস্থ করা হয়। কিন্তু সোমবার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তাঁর বাবা শরীরে অবশ অনুভব করেন। এরপরই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির সেনা হাসপাতালে। সেখানে তাঁর মস্তিষ্কের স্ক্যান করা হয়। একই সঙ্গে করোনারও নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মস্তিষ্কের স্ক্যানে তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার ছবি ধরা পড়ে। এরপরই তাঁর মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার করা হয়। সঙ্গে চলে তাঁর করোনার চিকিৎসা। এখন তাঁর দিল্লির সেনা হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে চিকিৎসা চলছে। তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে লোকসভায় কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা সাংসদ অধীর চৌধুরী, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলের নেতা বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা রাহুল সিনহাসহ রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রণব মুখার্জির দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।

১৯৩৫ সালের ১১ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার কীর্ণাহারের মিরিটি গ্রামে প্রণব মুখার্জি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বয়স ৮৪ বছর। তিনি ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি। ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপতি পদে ছিলেন। এখন তিনি রাজধানী দিল্লিতে অবসর জীবন কাটাচ্ছেন।