চীন ও পাকিস্তানকে মোদির হুঁশিয়ারি

নরেন্দ্র মোদি
নরেন্দ্র মোদি

স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে জাতির প্রতি ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীন ও পাকিস্তানকে হুঁশিয়ার করে দিলেন। বললেন, ‘এলওসি (নিয়ন্ত্রণরেখা) থেকে এলএসি (প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা) পর্যন্ত যেখানে যারা দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, ভারতীয় বাহিনী তাদের যোগ্য জবাব দিয়েছে।’

দেশের ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসে আজ শনিবার দেওয়া এই হুঁশিয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী অবশ্য পাকিস্তান বা চীন কোনো দেশেরই নাম উচ্চারণ করেননি। যদিও এলওসি ও এলএসির মধ্য দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, ওই হুঁশিয়ারির লক্ষ্য যথাক্রমে পাকিস্তান ও চীন। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যবর্তী বিবাদগ্রস্ত সীমান্ত এলাকা ‘লাইন অব কন্ট্রোল’ বা এলওসি নামে পরিচিত, ভারত-চীনের ক্ষেত্রে যার পরিচয় ‘লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল’ বা এলএসি।

পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে গত ১৫ জুন এলএসি বরাবর ভারত ও চীনের সৈন্যদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর লাদাখে গিয়ে মোদি নাম না করে চীনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। শনিবার লালকেল্লার ভাষণেও সেই সংঘর্ষের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের একতা ও অখণ্ডতা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জওয়ানেরা কী পারেন, দেশ কী করতে পারে, গোটা পৃথিবী তা লাদাখে প্রত্যক্ষ করেছে।’

লাদাখে গিয়ে চীনের নাম না করলেও প্রধানমন্ত্রী ‘সম্প্রসারণবাদের’ সমালোচনা করেছিলেন। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে শুক্রবার রাতে জাতির প্রতি ভাষণে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও চীনের নাম না করে সে দেশের সম্প্রসারণবাদের সমালোচনা করেন। বলেন, ‘গোটা পৃথিবীকে যখন এক পরিবার হিসেবে দেখা হচ্ছে, তখন আমাদের এক প্রতিবেশী কৌশলে তাদের সম্প্রসারণবাদী নীতির বাস্তবায়নে দুঃসাহস দেখাচ্ছে।’ শনিবার মোদিও সেই সুরে বলেন, সন্ত্রাসবাদ হোক বা সম্প্রসারণবাদ, ভারত দুই বিপদের বিরুদ্ধেই লড়াই করছে।

লাদাখ-কাণ্ডের পর থেকে বারবার মোদিকে শুনতে হচ্ছে একটাই প্রশ্ন। ভারতীয় জমি চীনা ফৌজ দখলে রেখেছে কি না। একবারও প্রধানমন্ত্রী তার স্পষ্ট উত্তর দেননি। শনিবারও সে বিষয়ে উচ্চবাচ্য না করে তিনি ভারতীয় জওয়ানদের বীরগাথা তুলে ধরেন। লালকেল্লা থেকে তাঁদের কুর্নিশও জানান।

গেরুয়া-সাদা পাগড়ি পরে প্রায় দেড় ঘণ্টার ভাষণে মোদি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ ‘মেক ফর ওয়ার্ল্ড’ এবং সম্ভাব্য করোনা প্রতিষেধকের উল্লেখও করেন। বলেন, এই মুহূর্তে দেশে তিনটি করোনা প্রতিষেধক নিয়ে কাজ চলছে। গবেষকদের সবুজসংকেত পেলেই করোনা টিকার উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। প্রত্যেকের কাছে প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়ার রূপরেখাও সরকার তৈরি করে ফেলেছে।

রাশিয়া করোনার টিকা আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেছে। সেই দাবি নিয়ে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। ভারতে তৈরি টিকা ‘কোভ্যাক্সিন’-এর দ্বিতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল চলছে। এর আগে এমন একটা ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল যে স্বাধীনতা দিবসের দিনই টিকা আবিষ্কারের কথা জানানো হবে। শনিবারই ভারতে মোট করোনা-আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২৫ লাখ পেরিয়ে যায়।