মোদির সঙ্গে মঞ্চে উঠে সুর পাল্টালেন মমতা

রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। আজ শনিবার সন্ধ্যায় আবার এটি প্রমাণ করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে সন্ধ্যায় কলকাতার নজরুল মঞ্চে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তিনিও।

তিনটি সামাজিক প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মমতা তাঁর আগের অবস্থান থেকে উল্টো ঘুরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানালেন একসঙ্গে মিলে উন্নয়নকাজে ব্রতী হওয়ার।

নরেন্দ্র মোদি গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হন। তাঁর সঙ্গে মমতার ছিল আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক। লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ‘দাঙ্গাবাজ’ বলতেও কসুর করেননি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও সুসম্পর্ক রাখেননি তিনি। সব সময় মোদির কঠোর সমালোচনা করেছেন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সঙ্গে তাঁর দল তৃণমূলেরও সুসম্পর্ক নেই।

এমন পরিস্থিতিতে মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আজ প্রথম দুই দিনের সফরে কলকাতায় আসেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই মঞ্চে মোদির পাশে বসে রাজ্যের উন্নয়নের জন্য সাহায্য চাইলেন। মমতা বললেন, ‘কেন্দ্র ও রাজ্যকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। একসঙ্গে কাজ করলে দেশেরই উন্নয়ন হবে।’ এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের সব গ্রামে ব্যাংকিং সুবিধা নেই। সব গ্রামে ব্যাংকের শাখা চাই।’
মোদিও তাঁর ভাষণে মমতার এ দাবির বিষয়ে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত।’
দুই দিনের সফরে নরেন্দ্র মোদি আজ বিকেলে কলকাতায় যান। এসেই নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এখানেই তিনি ভারতের তিনটি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এই তিনটি প্রকল্প হলো-প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা এবং অটল পেনশন যোজনা।
এর আগে মোদি নজরুল মঞ্চে পৌঁছে মঞ্চের সাজঘরে মমতার সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা একান্ত বৈঠক করেন। বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছে তা জানা না গেলেও সরকারি মহল থেকে এটুকু জানা গেছে, মূলত রাজ্যের আর্থিক দাবি-দাওয়া, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের অর্থ ছাঁটাই করা এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মোদি ভাষণ দিতে উঠে বলেছেন, ভারতের ইতিহাসে বাংলার গুরুত্ব অনেক। বাংলা থেকেই পরিবর্তন শুরু। ভারতের আর্থিক বিকাশের একসময় ভিত্তি ছিল এই বাংলা। বহু পরিবর্তনের সূচনা এই বাংলা থেকেই। তিনি কবিগুরুর জন্মদিনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাষণ শুরু করেন। তবে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি বা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে কোনো কথা বলেননি।
নজরুল মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলকাতার রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে যান। এরপর তিনি যান রাজভবনে। এখানে তিনি নৈশভোজে অংশ নেবেন এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।