ফোনে আড়ি পাতা বন্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রে

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান আইনের যেসব বিতর্কিত ধারায় নাগরিকদের ফোনে আড়ি পাতা ও তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল, তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। মার্কিন সিনেটে গত রোববার মতৈক্য না হওয়ায় মেয়াদ নবায়ন সম্ভব হয়নি। রিপাবলিকান পার্টির টিকিটে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী প্রত্যাশী র্যান্ড পলের বিরোধিতায় এটি আটকে যায়।
প্যাট্রিয়ট অ্যাক্ট নামে পরিচিত ওই আইনের ২১৫ ধারাসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ধারার মেয়াদ স্থানীয় সময় রোববার দিবাগত রাত ১২টায় শেষ হয়। ফলে আপাতত মার্কিন নাগরিকদের ফোনে আড়ি পাতা বন্ধ হলো। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) তথ্য সংগ্রহকারী সার্ভারগুলো মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার এক মিনিট আগেই বন্ধ করে দেওয়া শুরু হয়। খবর এএফপি ও বিবিসির।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে সন্ত্রাসী হামলার পর জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাকে (এনএসএ) আবারও কোনো সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা এড়াতে ফোনে আড়ি পাততে অনুমতি দিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু এতে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে।
প্যাট্রিয়ট অ্যাক্টের গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলোর মেয়াদ বাড়াতে একমত হতে না পারায় হোয়াইট হাউসের তরফ থেকে সমালোচনা করা হয়েছে। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে একে সিনেটের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ’ হিসেবেও মন্তব্য করা হয়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় মার্কিন নাগরিকদের ফোনে আড়ি পাতার সাময়িক বৈধতা হারাল এনএসএ। তবে বিদেশি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মার্কিন গোয়েন্দারা আড়ি পাতা ঠিকই অব্যাহত রাখতে পারবেন।
রোববার সিনেটে মূলত র্যান্ড পলের তৎপরতায় এ নিয়ে কোনো মতৈক্য হয়নি। প্যাট্রিয়ট অ্যাক্টের ওই ধারাগুলোর মেয়াদ বৃদ্ধিও তিনিই আটকে দেন। এ বিষয়ে রোববার পল বলেন, ‘আমরা যে জন্য লড়াই করছিলাম, তা শেষ হয়েছে। আমরা কি আর এত সহজে আমাদের স্বাধীনতা ত্যাগ করতে পারি?’
২১৫ ধারার দোহাই দিয়ে লাখো মার্কিন নাগরিকের ব্যক্তিগত ফোনে এনএসএ গণহারে আড়ি পাতে। এ খবর ২০১৩ সালে প্রথম ফাঁস করেন এনএসএর সাবেক চুক্তিভিত্তিক কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেন।
মানুষের টেলিফোনে আড়ি পাতার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। এনএসএ শুধু মার্কিন নাগরিকদের ফোনেই আড়ি পাতেনি। বরং বিশ্বের প্রভাবশালী নেতাদের ফোনেও আড়ি পাতে। এনএসএর এভাবে তথ্য সংগ্রহ করাকে অবৈধ বলে গত মাসে রুল দেন একটি মার্কিন আদালত। ফোনালাপে এনএসএর ওই আড়ি পাতাকে অবৈধ বলে রুল দেওয়ার পাশাপাশি আদালত কংগ্রেসকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।