হাম হলে করণীয়

সময়মতো চিকিত্সা করানো না হলে হাম থেকে নিউমোনিয়া, কানে ইনফেকশন এমনকি মস্তিষ্কে ম্যালিডাইসিস রোগও হতে পারে। তাই হামের নিরাপদ চিকিত্সা করানো খুবই জরুরি। ছবিটি প্রতীকী।
সময়মতো চিকিত্সা করানো না হলে হাম থেকে নিউমোনিয়া, কানে ইনফেকশন এমনকি মস্তিষ্কে ম্যালিডাইসিস রোগও হতে পারে। তাই হামের নিরাপদ চিকিত্সা করানো খুবই জরুরি। ছবিটি প্রতীকী।

বর্ষা শেষে আসছে ভাদ্রের তাল-পাকা গরম। ভাদ্র-আশ্বিন থেকে শুরু করে এই সময়ের রোগব্যাধি বলতে হামই বেশি হয়। তবে সঠিক সময়ে প্রতিষেধক টিকা দিলে হাম হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। তবে শিশুরই হোক বা বড়দের, ঠিকমতো চিকিত্সা না হলে এই রোগ ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। হাম এবং হাম হলে করণীয় সম্পর্কে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক সৈয়দ আফজালুল করিম।
হাম কী?
হাম ভাইরাসজনিত একটি রোগ। জার্মান মিজলস নামেও পরিচিত হাম। ঠিকমতো এ রোগের চিকিত্সা না করা হলে রোগী নানা জটিলতায় পড়তে পারে। তবে হাম সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য। শিশুরাই হামে বেশি আক্রান্ত হয় বলে এক বছর থেকে ১৮ মাস বয়সী শিশুদের হামের ভ্যাকসিন দেওয়া যায়।
শিশু ও বড়দের হাম
শিশুদের মতো বড়দেরও হাম হতে পারে। তাই এখন হামের প্রতিষেধক হিসেবে বড়দের জন্যও আছে ‘এমএমআর’ ভ্যাকসিন। এ ভ্যাকসিন দেওয়া না থাকলে হাম হওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে। তবে, সাধারণত একবার হাম হলে দ্বিতীয়বার আর এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। তবে সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে, কেননা হাম ছোঁয়াচে।

হামের লক্ষণ

হাম হলে প্রথমে জ্বর হয় ও শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে বা হালকা ব্যথা লাগে। প্রথম এক-দুই দিন অনেক তীব্র জ্বরও হতে পারে। চোখ-মুখ ফুলে উঠতে পারে। চোখ লাল হয়ে যেতে পারে, চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে। নাক দিয়ে পানি পড়তে পারে এবং হাঁচিও হতে পারে। শরীরে র্যাশ বা ছোট ছোট লালচে গুটি/ফুসকুড়ি দেখা দেয় এবং দ্রুতই তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ সময় বিশেষত শিশুরা কিছুই খেতে চায় না এবং ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ে।   

হাম হলে করণীয়

হাম হলে অবশ্যই চিকিত্সকের কাছে যেতে হবে। চিকিত্সক রোগীকে ভালোভাবে দেখার পর শনাক্ত করতে পারবেন আসলেই হাম হয়েছে কিনা। সাধারণত তিন দিনের চিকিত্সাতেই এই রোগের জ্বর ভালো হয় এবং সাত দিনের মধ্যেই হামে আক্রান্ত রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে। হামে আক্রান্ত রোগীকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। আর একটু পর পর ভেজা তোয়ালে/গামছা বা নরম কাপড় দিয়ে শরীর মুছিয়ে দিতে হবে। রোগীর বেশি জ্বর হলে বমিও হতে পারে। তবে এতে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। এ ক্ষেত্রে ওষুধ খেতে হবে। তবে কোনো ভাবেই চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়া রোগীকে ওষুধ খাওয়ানো যাবে না।

বিশ্রাম ও পানি

হাম হলে রোগীকে পুরোপুরি বিশ্রামে থাকতে হয়। এ সময় বাসা থেকে বের না হওয়াই ভালো। অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। আর স্বাভাবিক খাবারদাবারের পাশাপাশি রোগীকে বেশি বেশি তরল খাবারও দিতে হবে।

চিকিত্সা না হলে

সময়মতো চিকিত্সা করানো না হলে হাম থেকে নিউমোনিয়া, কানে ইনফেকশন এমনকি মস্তিষ্কে ম্যালিডাইসিস রোগ হতে পারে। তাই হামের নিরাপদ চিকিত্সা করানো খুবই জরুরি।