ইন্টারমিটেন্ট ডায়েট মানে কী?

‘ইন্টারমিটেন্ট ডায়েট’ নামের একধরনের ডায়েট চর্চা এখন গোটা পৃথিবীতেই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এই ইন্টারমিটেন্ট ডায়েট আসলে কী?

ইন্টারমিটেন্ট ডায়েট হচ্ছে সপ্তাহে বা দিনে একটা নির্দিষ্ট সময় না খেয়ে থাকার ডায়েট। নারী ও পুরুষভেদে এই না খেয়ে থাকার সময়সূচি আলাদা। সহজ কথায় বললে এটি সপ্তাহে এক দিন, দুই দিন বা কখনো কখনো টানা তিন দিন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শুধু পানি আর ফলের রস পান করে থাকার ডায়েট। যেমন সপ্তাহে দুই দিন মানে ৪৮ ঘণ্টা শুধু পানি বা চিনি ছাড়া ফলের রস পান করা আর পাঁচ দিন স্বাভাবিক খাবার খাওয়া। ওই দুই দিন সারা দিনে ৫০০-৬০০ ক্যালরি খাওয়া যাবে। আবার এক দিন (২৪ ঘণ্টা) না খেয়ে পরদিন স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়াও করা যায়।

ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান ও প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, এটি একধরনের উপবাস বা ফাস্টিং। একে বলে লিন গেইন প্রটোকল। ইন্টারমিটেন্ট ডায়েটের জনপ্রিয় ছয় ধরনের ডায়েট আছে। এর প্রতিটিই একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খাবার না খেয়ে এরপর খাওয়ার পদ্ধতি। সাধারণত আমরা যে ধরনের খাবার খাই, তা আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজন এবং এর সঙ্গে অভ্যস্ততার ব্যাপার আছে। সব ধরনের স্বাস্থ্যকর ও পরিমিত খাবারই শরীরের জন্য উপকারী।

ইন্টারমিটেন্ট ডায়েটে লম্বা সময় ধরে না খেয়ে থাকলে শরীর খারাপ করতে পারে। তা ছাড়া এ ধরনের ডায়েট শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে তাৎক্ষণিকভাবে ওজন কমেছে মনে হলেও পরবর্তী সময়ে এর ফল ভালো হয় না। এতে চুল পড়া, চেহারায় ভাঁজ পড়ে যাওয়া, বয়সের ছাপ, তলপেট বড় হয়ে যাওয়া, কিছুদিন পর হুট করে ওজন বেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অনিয়মিত খাবার খাওয়ার জন্য অনেক সময় খাবার হজমে সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া খাবার খাওয়ার পর বমি, পেট খারাপ, প্রেশার বেড়ে বা কমে যাওয়ার মতো সমস্যাও হয়। নিয়মিত খাবার খেয়ে একটু শারীরিক পরিশ্রম করলে ওজন কমে। কিন্তু কখনো কখনো খাবার খেয়ে এরপর না খেয়ে থাকলে ওজন কমার থেকে শরীরে নানা অসুখের বাসা বাঁধার আশঙ্কাই প্রবল।

সাধারণত কোথাও দাওয়াতে যাওয়ার আগে ওয়ারিয়র ডায়েটের প্রতি সবার আগ্রহ দেখা যায়। এটি হচ্ছে সারা দিন না খেয়ে রাতে এক বেলা ইচ্ছামতো খাওয়ার ডায়েট। তবে এতে ভালোর থেকে খারাপের আশঙ্কাই বেশি। অনেক সময় বাড়িতে কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানের আগে অনেকে হুট করে ওজন কমাতে চাইলে এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ এ ধরনের ডায়েট করেন। খেয়াল রাখতে হবে, এ ধরনের ডায়েটের আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আর যেকোনো ধরনের ইন্টারমিটেন্ট ডায়েট করতে হবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে।

 যাদের জন্য নয়

*গর্ভবতী

*উচ্চ বা নিম্নরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগী হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত যে কেউ

*বুকের দুধ খাওয়ানো মা

*রক্তশূন্যতার রোগী এবং

*২৫ বছরের কম বয়সীদের জন্য এই ইন্টারমিটেন্ট ডায়েট নয়।