দুপুরে অফিসে কী খাবেন

দুপুরের খাবারও পরিমিত খেতে হবে। মডেল: হৃদি। ছবি: অধুনা
দুপুরের খাবারও পরিমিত খেতে হবে। মডেল: হৃদি। ছবি: অধুনা

অফিসে দুপুরে কী খাব? কতটুকু খাব? কর্মজীবীদের প্রায় প্রতিদিন এ নিয়ে ভাবতে হয়। অনেকেরই দুপুরে খাওয়ার পর ঘুম পায়। সে কারণে কেউ কেউ দুপুরে খেতে চান না। মনে রাখতে হবে, দুপুরের খাবার সকালের নাশতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। অফিসে সারা দিন কাজের ব্যস্ততায় দুপুরে বেশি ক্ষুধা লাগে। তাই এ সময় খেতে হয় পুষ্টিকর খাবার। এর পরিমাণ এমন হতে হবে, পেট ভরবে, মনও ভরবে; কিন্তু খাওয়ার পর ভারী বোধ হবে না। দিনের বাকি সময়ে কাজ করার জন্য প্রাণশক্তিও ফিরে আসবে। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের প্রধান আখতারুন নাহার জানান, অফিসে নেওয়ার জন্য সহজে বানানো যায়, খাওয়া যায়, খুব বেশি ঘ্রাণ ছড়ায় না, পর্যাপ্ত পুষ্টিমান নিশ্চিত করে—এমন খাবার নির্বাচন করা উচিত। রুচি বাড়ানো বা ঠিক রাখার জন্য একেক দিন একেক খাবার খেতে পারেন। অফিসে শুকনা খাবার নেওয়া ভালো—নেওয়া সহজ, নষ্টও হয় না। খাবারের পর পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। দুপুরে শুধু সালাদ খাওয়া ভালো নয়। কারণ, শুধু সালাদ খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পাওয়া যাবে না। যত বিকেল হবে, কাজ করার আগ্রহ তত কমে যাবে। কর্মক্ষেত্রে ভাত অল্প খেলে ভালো। এতে ঘুম-ঘুম ভাব আসবে না।

যেসব খাবার অফিসে খাওয়ার উপযোগী
সাদা ভাত: অনেকেই দুপুরে ভাত না খেয়ে থাকতে পারেন না। আবার কারও কারও দুপুরে ভাতের বদলে অন্য কিছু খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। যাঁরা দুপুরে ভাত ছাড়া অন্য কিছু খেতে পারেন না, তাঁরা অফিসে ভাত অল্প খেতে পারেন। ভাতের সঙ্গে সবজি, মুরগির মাংস কিংবা মাছ খেতে পারেন।
রুটি-সবজি: অফিসের জন্য আরেকটি সুবিধাজনক খাবার হলো রুটি-সবজি। বানাতে খুব বেশি সময়ও লাগে না। ডিম-সবজি হলে ভালো, এতে পুষ্টিমান ঠিক থাকে। এ ছাড়া শুকনা খাবার হওয়ায় খেতে খুব বেশি ঝক্কি-ঝামেলাও পোহাতে হয় না। তেমন তেল-মসলা নেই। তাই খাবারের ঘ্রাণে সহকর্মীদেরও সমস্যা হয় না।
নুডলস/ পাস্তা/ চাওমিন: অফিসে দুপুরের খাবারে নুডলস খেতে পারেন। খুব অল্প সময়ে সকালবেলাই রান্না করা যায় এটি। নুডলস-জাতীয় পাস্তা ও চাওমিন নিতে পারেন অফিসে। নুডলস, পাস্তা কিংবা চাওমিনকে পুষ্টিকর করে তোলার জন্য সবজি, মাংস, ডিম ইত্যাদি দিয়ে রান্না করুন। এতে স্বাদও বাড়বে, পুষ্টির অভাবও হবে না।
স্যান্ডউইচ: অফিসে সহজেই খাওয়া যায়, এমন একটি খাবার হলো স্যান্ডউইচ। এটা বানানো খুব সোজা। নিজের স্বাদ ও পছন্দমতো ডিম, মুরগির মাংস কিংবা সবজি দিয়েও স্যান্ডউইচ বানিয়ে নিতে পারেন। সঙ্গে তাজা লেটুসপাতা, শসা, টমেটো ইত্যাদি যোগ করে একে আরও পুষ্টিকর করা যেতে পারে।
সালাদ: যাঁরা ওজন নিয়ে সমস্যায় আছেন কিংবা সালাদ খেতে ভালোবাসেন, তাঁরা অফিসের খাবারে সালাদের পরিমাণ বেশি রাখতে পারেন। অফিসের খাবারে ভাত, রুটি, নুডলস, ডাল—যা-ই খান না কেন, প্রতিদিনের খাবারে চেষ্টা করবেন সালাদের গুরুত্বটা দিতে। সবজি ফলমূল দিয়ে তৈরি সালাদ আপনি ভাত বা রুটির চেয়ে একটু বেশি পরিমাণে খাবেন।
অন্যান্য: দুপুরে যাঁরা ভারী খাবার উপেক্ষা করতে চান, তাঁরা আপেল, কমলা, নাশপাতি ইত্যাদি ফল খেতে পারেন। বাসায় তৈরি সবজির স্যুপও খেতে পারেন। আঁশযুক্ত এই সবজি সারা দিনে যে পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল প্রয়োজন, তা পূরণ করে দেবে।
এ ছাড়া ডেজার্ট যেমন কেক, পুডিং, নানা রকম ফলের মিশ্রণে দই দিয়ে তৈরি অফিসে দুপুরের খাবারে খুব সহজেই খেতে পারেন।

কিছু সতর্কতা
 অফিসে দুপুরের খাবার হিসেবে ভাজা-পোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন।
 অফিসে শুঁটকি-জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়। কারণ, এর ঘ্রাণ অনেকেই সহ্য করতে পারেন না। তাই সহকর্মীদের অসুবিধা হতে পারে।
 ফল হিসেবে কাঁঠাল অফিসে না আনাই ভালো। কারণ, অনেকেই এর গন্ধ পছন্দ করেন না।
 অফিসে খাওয়ার সময় খাবার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা উচিত নয়। খাওয়ার সময় টেবিল কিংবা মেঝেতে খাবার পড়লে সেটা নিজেই পরিষ্কার করে ফেলুন।