ছেলেদের আলাদা সুগন্ধি

ছেলেদের পারফিউমের ধরনই আলাদা। মডেল: আলিফ, ছবি: নকশা
ছেলেদের পারফিউমের ধরনই আলাদা। মডেল: আলিফ, ছবি: নকশা

‘ছেলমেয়ের আবার আলাদা সুগন্ধি কীসের! একটা মাখলেই হলো।’ এই ধারণা যদি আরও অনেকের মতো আপনার মনেও থাকে, তাহলে ঝেড়ে ফেলুন। কারণ, দুই ধরনের সুগন্ধির বৈশিষ্ট্যই আলাদা। এমনকি ছেলে ও মেয়েদের সুগন্ধিতে ব্যবহৃত উপাদানগুলোও ভিন্ন।

মেয়েদের সুগন্ধিতে যেমন ফুলের সৌরভ বেশি থাকে, তেমনি ছেলেদের জন্য কিছুটা মাস্কি বা মৃগনাভি ধরনের সৌরভ থাকে।

ছেলেদের শরীরে নিয়মিত পারফিউম, বডি স্প্রে বা ডিওডরেন্ট ব্যবহার করা জরুরি। ছেলেদের ফ্যাশনবিষয়ক ব্লগ কিং অব ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা শাহজামান মজুমদার বললেন, ‘একটু ঘেমে গেলেই ছেলেদের শরীর থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। তাই সুগন্ধি ব্যবহার করলে সেই দুর্গন্ধ থেকে মুক্ত থাকা যায়। সুগন্ধির ব্যবহার একজন পুরুষের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়া একটি ভালো সৌরভ মনটাকেও ভালো রাখতে সাহায্য করে।’

দুর্গন্ধ কাটিয়ে সুগন্ধ আনতে সাধারণত তিন ধরনের প্রসাধন ব্যবহার করতে দেখা যায় ছেলেদের। এর মধ্যে একটি হলো ডিওডরেন্ট। সাধারণত ভাঁজ রয়েছে, শরীরের এমন জায়গাগুলোতে, বিশেষ করে বগলে (আন্ডার আর্মস) ব্যবহার করা হয় ডিওডরেন্ট। উৎকট গন্ধ ঠেকাতে ডিওডরেন্ট কার্যকর।

এ ছাড়া বাকি দুটি প্রসাধনীর মধ্যে আছে বডি স্প্রে ও পারফিউম। এ দুটি সুগন্ধির মধ্যে পার্থক্যও অনেক। পারফিউমে বেশি মাত্রার সুগন্ধি নির্যাস ও তেল ব্যবহার করা হয়। এর তুলনায় বডি স্প্রেতে হালকা মাত্রার নির্যাস ব্যবহার করা হয়। তাই বডি স্প্রের চেয়ে পারফিউম বেশি সময় ধরে শরীরে লেগে থাকে। দিনে একবার পারফিউম ব্যবহার করলেই সারা দিন এর সৌরভ থাকে। যেখানে বডি স্প্রে ব্যবহারের পর সৌরভ থাকে চার থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত।

ভারতীয় সুগন্ধি প্রস্তুতকারী (পারফিউম ক্রিয়েটর) পুলকিত তানেজা তাঁর একটি লেখায় এ বিষয়টি আরও বিস্তারিত তুলে ধরেছেন, সাদা চোখে দুটিই সুগন্ধি। তবে বডি স্প্রে ও পারফিউমের মধ্যে মূল পার্থক্য গড়ে দেয় তৈরির ধরন। সুগন্ধিতে ব্যবহৃত তেলের ঘনত্ব তো আছেই। এর সঙ্গে পানি ও অন্যান্য উপাদানের মিশ্রণ কী পরিমাণে হচ্ছে, সেটা থেকেই আলাদা করা যায় পারফিউম ও বডি স্প্রে। বডি স্প্রেতে সুগন্ধি তেলের নির্যাস, পানি ইত্যাদি থাকে বেশি পরিমাণে। আর পারফিউম হলো সুগন্ধির বায়বীয় ধরন।

শরীরের নানা জায়গায় বডি স্প্রে ব্যবহার করা যায়। পারফিউম হাত বা ঘাড়ের মতো নির্দিষ্ট কিছু স্থানেই ব্যবহার করতে হয়। তবে শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় কখনো বডি স্প্রে ব্যবহার করা যাবে না।

সাধারণত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই বাংলাদেশে সুগন্ধি আমদানি করা হয়। তবে দেশে কিছু প্রতিষ্ঠান নকল বডি স্প্রে ও পারফিউম তৈরি করে। তাই কেনার আগে যাচাই করে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন মোস্তফা মার্টের এক বিক্রেতা।

 দরদাম

নানা রকম ডিওডরেন্ট বা বডি স্প্রে কেনা যাবে ১৫০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকায়। এ ছাড়া বডি স্প্রে কেনা যাবে ১৮০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায়। তবে পারফিউম কিনতে হলে দাম কিছুটা বেশি পড়বে। ভালো ব্র্যান্ডের পারফিউম কেনা যাবে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়।

 যত ব্র্যান্ড

দেশে পাওয়া যায়, এমন কিছু ডিওডরেন্ট ব্র্যান্ডের মধ্যে আছে—জিলেট, ডাভ, নিভিয়া, স্পিড স্টিক, রেক্সোনা, ডিগ্রি মেন, ওল্ড স্পাইসি, এনইউএক্সই মেন ইত্যাদি।

পারফিউমের ব্র্যান্ডের মধ্যে আছে—সিকে (কেলভিন ক্লেইন), প্লেবয়, সিগনেচার, নাইকি, এক্স, এমকে মেন, ফগ, টম ফোর্ড, স্যাভেজ, ডু ইট, পোলো, নিভিয়া, বন্ডেজ, ইএডি, জিরো জিরো সেভেন, এন ৬৯, ওয়ান, বুলগেরি, কোচ, গুচি, বস, ওয়ান মিলিয়ন, জর্জিও আরমানি, ২১ মেন, ব্লু ফর মেন, ডলচে অ্যান্ড গাবানা ইত্যাদি।