প্লিজ, এই দুটি অসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখুন!

প্রতীকী ছবি: এএফপি
প্রতীকী ছবি: এএফপি
ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্ত্তী
ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্ত্তী

সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশন (উচ্চ রক্তচাপ) মহামারি আকারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, পত্রপত্রিকায় চিকিৎসাবিষয়ক অনেক লেখালেখি প্রকাশিত হওয়ার পরও মানুষের সচেতনতা আশানুরূপ বাড়ছে না। ফলে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীরা জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যে অসুখটাকে মাত্র অল্প কিছু টাকার ওষুধ খেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, শুধু সচেতনতা ও সঠিক নির্দেশনার অভাবে লাখ লাখ টাকা খরচ করেও অনেক সময় শেষ রক্ষা হচ্ছে না। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবার ও দেশ।

লক্ষ করলে দেখা যাবে, অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও হঠাৎ করে মারা যাচ্ছেন। কিন্তু এমনটি হওয়ার কথা নয়! যদি সঠিক সময়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা থাকত, নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে পরামর্শের জন্য যেতেন, তাহলে অবশ্যই সঠিক নির্দেশনা পেলে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা এভাবে বিনা চিকিৎসায় অকাল প্রয়াণ হতেন না।

প্রতীকী ছবি: রয়টার্স
প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

কিন্তু হতাশার কথা হচ্ছে, রোগীরা ডাক্তারদের সম্পর্কে অনাকাঙ্ক্ষিত নেতিবাচক কথা বলেন, অহেতুক পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভিযোগ তোলেন, যা সত্য নয়। বিদেশে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক, কিন্তু আমাদের দেশে উল্টো চিত্র। তাই প্রয়োজন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি রোগ, রক্তে উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল, রক্তনালির অসুখ বার্জার্স জিনিসসহ নানা প্রাণঘাতী অসুখ এই দুটি রোগের জটিলতার অন্যতম কারণ।

অথচ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই সহজ। ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় সর্বত্র ডায়াবেটিস সেন্টারসহ হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের উপস্থিতি অনেক সহজ হয়ে গেছে। প্রয়োজন ব্যক্তিগত সচেতনতা, চিকিৎসক ও চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, কায়িক পরিশ্রম বৃদ্ধি, প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ মিনিট হাঁটা, কাঁচা লবণ, গরু ও খাসির মাংস, ডিমের কুসুম, চর্বিজাতীয় দ্রব্য এবং ধূমপানসহ তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার বন্ধ করা। চিকিৎসক হিসেবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এ দুটো অসুখ নিয়ন্ত্রণে থাকলে কারও প্রিয়জনকে অকালে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিতে হবে না।

লেখক: ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (সাবেক আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতাল), ঢাকা