তৈরি করে জমিয়ে রাখুন

>ব্যস্ত জীবনে নিয়মিত দীর্ঘ সময় রান্নাঘরে থাকাও কঠিন। কিছু খাবার আছে যা একবার বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দেওয়া যায়। পরে মন চাইলেই এই হিমায়িত খাবার ঝটপট ভেজে নিলেই হলো। তেমন কিছু খাবারের রেসিপি দিয়েছেন রীমা জুলফিকার
চিকেন নাগেট
চিকেন নাগেট

চিকেন নাগেট

উপকরণ: মুরগির কিমা আধা কেজি, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ২ টেবিল চামচ, ময়দা ২ টেবিল চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, ময়দা ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ টেবিল চামচ ও কাঁচা মরিচ বাটা ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি: মুরগির মাংস হাড় ছাড়িয়ে কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে। সব মসলা, কর্নফ্লাওয়ার ও ময়দা দিয়ে মাংসের কিমা মেখে নিন। অন্য একটি হাঁড়িতে অর্ধেকের কম পানি দিয়ে চুলায় বসান। একটি ছিদ্র করা পাত্রের (সমতল) মধ্যে মুরগির মিশ্রণ বিছিয়ে দিন। এবার ফুটন্ত পানির হাঁড়ির মুখে পাত্রটি বসিয়ে ঢেকে দিন। মাঝামাঝি জ্বালে ভাপে সেদ্ধ করতে হবে। সেদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে নানান আকারের ছাঁচে কেটে নিন নাগেট। ময়দায় গড়িয়ে ডিমে ডুবিয়ে নিন। আবার ব্রেড ক্র্যাম্বে গড়িয়ে একটি সমান পাত্রে ডিপফ্রিজে ২-৩ ঘণ্টা রেখে দিন। সংরক্ষণের জন্য ২ ঘণ্টা পর বের করে একটি বাক্সে ভরে আবার ডিপ ফ্রিজে রাখতে হবে।

সবজি রোল
সবজি রোল

সবজি রোল

উপকরণ-১: ময়দা ৪ কাপ, ডিম পরিমাণমতো, টেস্টিং সল্ট আধা চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পানি পরিমাণমতো ও চিনি ৪ টেবিল চামচ।

উপকরণ-২: গরুর কিমা ২ কাপ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, চিনি ২ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা-চামচ, সয়া সস ৩ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, পেঁপে, গাজর ও বরবটি ৮ কাপ, কাঁচা মরিচকুচি কয়েকটা, ধনেপাতাকুচি এক গোছা, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, ডিম ৩-৪টি, পাউরুটির গুঁড়া ২ কাপ, অ্যারারুট ২ টেবিল চামচ এবং গুঁড়া দুধ ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি: উপকরণ-১ থেকে ময়দা, লবণ ও চিনি একসঙ্গে নিন। অন্য পাত্রে পানি নিয়ে ডিমের সঙ্গে মেশান। এবার ডিমের মিশ্রণ ময়দায় মিশিয়ে গোলা তৈরি করে নিন। পাটিসাপটা পিঠার গোলার মতো হবে।

উপকরণ-২ থেকে কোরানি দিয়ে সবজি কুরিয়ে নিন। সয়া সস, লবণ ও টেস্টিং সল্ট দিয়ে সবজি মাখিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। অল্প তেলে পেঁয়াজ দিয়ে একটু নেড়ে আদা, রসুনবাটা দিয়ে কষিয়ে মাংসের কিমা দিয়ে রান্না করে নিন। যেসব উপকরণ আছে, তা দিয়ে সবজি অল্প আঁচে ঢেকে রান্না করে হয়ে এলে ধনেপাতা আর কাঁচা মরিচ দিয়ে স্বাদ দেখে কর্নফ্লাওয়ার ও ময়দা মিশিয়ে ওপরে ছড়িয়ে দিয়ে নেড়ে ৫ মিনিট রেখে নামিয়ে ফেলুন। খেয়াল রাখতে হবে সবজির রং যেন ঠিক থাকে।

অন্য একটি চুলায় ফ্রাইপ্যান দিয়ে গরম হলে তেল ব্রাশ করুন। এবার অল্প পরিমাণ গোলা নিয়ে ফ্রাইপ্যানে ছড়িয়ে ঢেকে দিন। পাতলা রুটির মতো হবে। অনেকগুলো রুটি বানিয়ে প্রতিটি রুটির মাঝখানে রান্না করা সবজি দিয়ে রোলের আকার দিন। রুটির দুই মাথা মুড়িয়ে নিন। এবার ডিমে ডুবিয়ে ক্র্যাম্বে গড়িয়ে ডিপ ফ্রিজে ২-৩ ঘণ্টা রাখুন। এরপর বক্সে ভরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।

সমুচা
সমুচা

সমুচা

উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, মুরগি বা গরুর মাংসের কিমা ২ কাপ, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, গরমমসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ ও কাঁচা মরিচকুচি ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি: মুরগি বা গরুর কিমা আদা, রসুন ও লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। তেলে পেঁয়াজ দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে সেদ্ধ কিমা দিয়ে দিন। ভালো করে রান্না হয়ে এলে গরমমসলার গুঁড়া দিয়ে স্বাদ দেখে নামিয়ে নিন।

অন্যদিকে ময়দা লবণ পানি দিয়ে শক্ত করে খামির তৈরি করে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। এবার ছোট ছোট রুটি বানিয়ে রুটির ওপর তেলের প্রলেপ দিয়ে তার ওপর ময়দা ছিটিয়ে দিন। পরপর চারটি রুটি দিন। ওপরে একটি রুটি দিয়ে এবার বেলে নিন। রুটি বড় ও পাতলা করুন।

এবার বড় তাওয়ায় হালকা করে সেঁকে নিন একটি একটি করে মোট ৫টি রুটি। হালকা সেঁকা রুটি লম্বা করে কেটে সমুচার পুর ভরে কাঁচা ময়দার গাম লাগিয়ে সমুচা বানিয়ে নিন। বেশি করে বানিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। ফ্রিজ থেকে বের করে ডুবো তেলে ভেজে গরম গরম বিভিন্ন সস দিয়ে পরিবেশন করুন।

ফিশ ফিঙ্গার
ফিশ ফিঙ্গার

ফিশ ফিঙ্গার

উপকরণ: রুই বা ভেটকি মাছের কিমা ২ কাপ, গ্রেট করা চিজ আধা কাপ, আদাবাটা আধা চা-চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, পাউরুটি ২ টুকরো, চিনি ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ মিহি চপকাট ৩ টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, ভাজা মরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, ভাজা জিরার গুঁড়া আধা চা-চামচ, ডিম পরিমাণমতো, ধনেপাতাকুচি ২ টেবিল চামচ, পাউরুটির গুঁড়া পরিমাণমতো ও লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: মাছে হালকা হলুদ-মরিচের গুঁড়া ও লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে কাঁটা বেছে কিমা করে নিন। এবার পাউরুটির টুকরো একটু পানি দিয়ে ভিজিয়ে হাতে চিপে ফেলে মাছ দিয়ে অন্যান্য মসলা, চিজ ও লেবুর রস দিয়ে একটা ডিম ভেঙে ভালো করে মেশান। স্বাদ দেখে আঙুলের আকার করে ময়দায় গড়িয়ে ডিমে ডুবিয়ে ক্র্যামে গড়িয়ে নিন। ২-৩ ঘণ্টা ডিপ ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করতে হবে জিপারযুক্ত মুখ বন্ধ ব্যাগে।

শিঙাড়া
শিঙাড়া

শিঙাড়া

উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, তেল আধা কাপ, লবণ পরিমাণমতো, পানি পরিমাণমতো, কালোজিরা ১ চা-চামচ, আলু কিউব কাট আধা কেজি, বাদাম আধা ভাঙা পরিমাণমতো, মাংস কিমা ও মুরগির কলিজা ১ কাপ, পেঁয়াজ কিউব কাট আধা কাপ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ, ধনেপাতা ১ গোছা ও তেল পরিমাণমতো (ভাজার জন্য)

প্রণালি: ময়দা, তেল, লবণ ভালো করে মেখে নিন। এবার অল্প অল্প পানি দিয়ে খামির করার মাঝামাঝি কালোজিরা দিন। খামিরটা শক্ত হবে। কিছু সময় ঢেকে রাখুন। এবার ছোট ছোট গোল্লা বানিয়ে প্রতিটি গোল্লা দিয়ে রুটি বেলে নিন। মাঝখানে কেটে রুটির পিস দিয়ে শিঙাড়ার পুর ভরে ভাঁজ দিয়ে নিন।

শিঙাড়ার পুর: আলু ছোট কিউব কাট করে কেটে তেলে ভেজে সেদ্ধ ভাব করে নিন। এবার অন্য হাঁড়িতে কিউব কাট পেঁয়াজ, তিন টেবিল চামচ তেল দিয়ে ভাজা ভাজা করে একটু নেড়ে রান্না কিমা, আলু ভাজা ও চিনাবাদাম দিয়ে দিন। এবার ভালো করে নেড়ে স্বাদ দেখে নামিয়ে নিন।

কিমা কর্নফ্লেক্স রোল
কিমা কর্নফ্লেক্স রোল

কিমা কর্নফ্লেক্স রোল

উপকরণ-১: মাংসের কিমা ২ কাপ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ ও লবণ পরিমাণমতো।

উপকরণ-২: ময়দা ১ কাপ, ডিম ২টি, লবণ স্বাদমতো ও শুকনা মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ।

প্রণালি: উপকরণ-১-এর মাংসের কিমার সঙ্গে বাকি মসলা ও পাউরুটির গুঁড়া দিয়ে মেখে নিন। উপকরণ-২-এর ময়দা, ডিম, লবণ, গুঁড়া মরিচ ও পানি দিয়ে মিশিয়ে গোলা তৈরি করুন।

কোটিংয়ের জন্য: পরিমাণমতো কর্নফ্ল্যাক্স হাত দিয়ে একটু ভেঙে গুঁড়া করে নিন। মাখানো কিমার পুর দিয়ে লম্বা লম্বা রোল বানিয়ে গোলায় ডুবিয়ে কর্নফ্লেক্স দিয়ে কোটিং করে ডোবা তেলে সোনালি করে ভেজে নিন। ভাজার আগে চাইলে বক্সে রেখে ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন।