সতর্ক থাকুন অনলাইন বাতচিতে

স্মার্টফোন এখন প্রায় হাতে হাতে। স্মার্টফোনে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, জিমেইলসহ বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগমাধ্যম কমবেশি সবাই ব্যবহার করেন। স্মার্টফোনের পর্দায় যা দেখা যায়, চাইলেই তার ছবি তুলে রাখা যায়। যাকে বলে স্ক্রিনশট। এখানেই লুকিয়ে আছে বড় বিপদ। আবার প্রমাণ হিসেবেও স্ক্রিনশট ব্যবহার করা হয়।
নিশাত (ছদ্মনাম) কাজ করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। তিনি একজনের কিছু স্ক্রিনশট বিশ্বাস করে ইনবক্স করেছিলেন তাঁরই এক বন্ধুকে। পরে সেটা ছড়িয়ে পড়ে (ভাইরাল) ইন্টারনেটে। নিশাত পড়ে যান বিপদে।
ফেসবুকের স্ট্যাটাসও অনেক সময় স্ক্রিনশট হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই আছেন অনলাইনে লিখে লিখে ব্যক্তিগত কথাবার্তার স্ক্রিনশট রেখে দেন। পরে সেসব ব্যক্তিগত কথোপকথন অন্যকে বিপদে ফেলার জন্য ব্যবহার করেন। এসব সাইবার অপরাধের মধ্যেও পড়ে।
ঢাকার ক্রাইম রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ফাউন্ডেশনের (ক্র্যাফ) প্রেসিডেন্ট এবং জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এর প্রশিক্ষক জেনিফার আলম সাইবার জগতে এ রকম বিপদ থেকে বাঁচতে কী কী ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে, সে ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

* বিভিন্ন উন্মুক্ত বা পাবলিক গ্রুপে অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ থাকে এসব গ্রুপে। কারও কারও মনমানসিকতা ভালো না–ও হতে পারে। এসব গ্রুপ থেকে আইডি পেয়ে পরে বার্তা পাঠাতে পারে।

* ইনবক্সে অপরিচিত কেউ যদি কোনো লিংক, ছবি, পিডিএফ ফাইল দেয়, তবে সেগুলো না খোলাই ভালো। মানে ক্লিক করা যাবে না। অনেক ক্ষেত্রে ওয়েব লিংক বা পিডিএফ মাধ্যমে আপনার যন্ত্রটি হ্যাক করার জন্য ম্যালওয়্যার ঢুকে যেতে পারে।

* যেহেতু আমাদের দেশের বেশির ভাগ ব্যবহারকারী দায়িত্বশীলভাবে এখনো ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে পারেন না, তাই কেউ কেউ অপ্রীতিকর বার্তা পাঠায়। এ ধরনের বার্তা অ্যাকসেপ্ট না করে ডিক্লাইন করা ভালো।

* যদি বারবার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি, আইডি বা এই ব্যক্তি একাধিক আইডি থেকে নানাভাবে বিরক্ত করে কিংবা হুমকি দিতে থাকে, তবে অবশ্যই কাছের থানায় ওই ব্যক্তির আইডির লিংক দিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে হবে।

* কেউ যদি ভুয়া বা সত্যিকারের অ্যাকাউন্ট থেকে মেসেজের মাধ্যমে হুমকি দেয়, হয়রানি করে বা আপত্তিকর ছবি পাঠায়, তবে মেসেজ অপশনে রিপোর্ট করতে পারেন। এতে ফেসবুক সেই আইডি স্থায়ীভাবে সরিয়ে দেবে।

* হয়রানি করতে পাবলিক পোস্টে বাজে মন্তব্য করেন কেউ কেউ। এ ক্ষেত্রে নিজের আইডির পাবলিক কমেন্ট সেটিং অফ করে দিলে ফ্রেন্ডলিস্টে না থাকলে কেউ মন্তব্য করতে পারবে না।

* যদি কেউ আপনার নাম উল্লেখ করে মানহানিকর কোনো পোস্ট বা মেসেজ আদান–প্রদান করে থাকে, সে ক্ষেত্রে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

* জরুরি পুলিশি সহায়তা লাগলে এবং সাইবার অপরাধের শিকার হলে ৯৯৯–এ কল করতে পারেন।

গ্রন্থনা: রাহিতুল ইসলাম