কাপ-গ্লাসের কোস্টার

একসময় বনেদি পরিবারগুলো জলচৌকিতে শতরঞ্জি বা নকশা করা কাপড় বিছিয়ে খাবার পরিবেশন করত। চায়ের মতো পানীয় বা ছোট কিছু ঢেকে রাখতে দেখা যেত একটা ছোট পিরিচ বা প্লেট দিয়ে। কালে কালে তার ধরন বদলেছে। জলচৌকির জায়গায় এসেছে টেবিল আর শতরঞ্জি; কাপড়ের রূপ বদলে ব্যবহার হচ্ছে টেবিল ম্যাট, রানার, টেবিল ক্লথসহ নানান কিছু। আর কাপ, গ্লাস ঢাকার জন্য এখন পিরিচের বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে কোস্টার। এটা গ্লাসের নিচেও রাখা যায়।

চা-কফির মগের ওপরে বা নিচে পিরিচ না রেখে কোস্টার ব্যবহার করলে নতুনত্ব আসবে পরিবেশনায়। বাজারে নানা ধরনের কোস্টার পাওয়া যায় আজকাল। নকশারও শেষ নেই তাতে। ফুল, আলপনা, ফলমূল, প্রকৃতি, ইমোজি ইত্যাদির নকশা বেশি চলছে কোস্টারে। অনেকে আবার ফরমাশ দিয়ে এসব বানিয়েও নেন।

অপু রহমান কাজ করেন একটা বেসরকারি সংস্থায়। একটু শৌখিন হওয়ায় এবং নিজের টেবিল পরিচ্ছন্ন রাখতে অফিসে মায়ের হাতে বানানো নীল এবং কালো কাপড়ের সুতার কাজ করা দুটো কোস্টার ব্যবহার করেন। একটায় তিনি পানির মগ রাখেন, অন্যটায় যখন চা পান করেন তখন কাপটা নামিয়ে রাখেন।

নিজের অভিজ্ঞতা থেকে অপু রহমান বলেন, ব্যস্ততার মধ্যে কাজের ঝামেলা পোহাতে না চাইলে ব্যবহার করা যেতে পারে কোস্টার। গ্লাস, কাপ রাখার জন্য ছোট্ট কোস্টার বা ম্যাটগুলো অফিসেও ব্যবহার করা যায়। এতে টেবিলে দাগ লাগা বা গরম কিছু রাখার ফলে টেবিলে ফাটল ধরা, রং–চটার আশঙ্কা থাকবে না, আবার দেখতেও লাগবে বেশ। টেবিল ম্যাটের ব্যবহার কেবল নান্দনিকতার জন্য নয়, এটা প্রয়োজনীয়, বললেন আড়ংয়ে ম্যাট কিনতে আসা নালন্দা স্কুলের শিক্ষক ধরিত্রী বর্মা। আরও যোগ করলেন, রান্না শেষে বাটিতে বা প্লেটে খাবার ঢেলে সরাসরি কাঠের টেবিলে রাখলে তাপে কাঠের গায়ের স্বচ্ছ সুন্দর রংটা নষ্ট হতে থাকে। বেশি তাপে কাচের টেবিলে ফাটল ধরতে পারে। এ কারণে রং–নকশার আভিজাত্যের পাশাপাশি প্রয়োজন মেটে, সেদিকটা খেয়াল রেখেই তিনি কিনতে এসেছেন।

বাজার ভরা কোস্টার

বাজার ঘুরে দেখা গেল, হরেক রকমের টেবিল ম্যাট। কোনোটা গোল, কোনোটা চৌকোমতো। কোনোটার গায়ে সুতার কাজ, আবার কোনোটায় ফুলেল নকশার প্রাধান্য। আর বেশির ভাগ ম্যাটই তৈরি হয়েছে দেশীয় উপকরণ দিয়ে। দেশীয় ঐতিহ্য মাথায় রেখে। যেমন বাঁশ, বেত, পাট, পুঁতি, কাঠ, পাটি, কাপড়, নারকেলের ছোবড়া। এসব উপকরণের বাইরেও প্লাস্টিকের হরেক রকমের ম্যাট কিনতে পাওয়া যায়। পছন্দমতো ম্যাট দিয়ে খাবার টেবিল সাজালে যেমন নান্দনিক আবহ ফুটে ওঠে, খাবার খেতে বসে মন ভালো হয়ে যায়, তেমনি বজায় থাকে পরিচ্ছন্নতাও। ওদিকে বাঙালিয়ানাও বজায় থাকে শতভাগ।

যেখানে পাবেন

আড়ং, সোর্স, নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজার, চন্দ্রিমা মার্কেট, গুলশান ডিসিসি মার্কেট, হ্যান্ড টাচ, যাত্রা, আইডিয়াসসহ বিভিন্ন মেগা শপেও পাওয়া যাবে পছন্দসই ম্যাট বা কোস্টার। ২০০ থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন মান এবং উপকরণের ম্যাট সেট কেনা যাবে। এ ছাড়া আলাদা করেও কিনতে পারেন ম্যাট।

কোস্টারের নকশা ও উপকরণ বুঝে দাম নির্ধারণ হয় ৩০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।