ডায়াপার থেকে ফুসকুড়ি যেন না হয়

ডায়াপার পরানোর ব্যাপারে সচেতন থাকা জরুরি। মডেল: জুয়াইফির, ছবি: সুমন ইউসুফ
ডায়াপার পরানোর ব্যাপারে সচেতন থাকা জরুরি। মডেল: জুয়াইফির, ছবি: সুমন ইউসুফ

কাপড় নাকি ডায়াপার পরাবেন, এই ভাবনায় দ্বিধান্বিত থাকেন অনেক বাবা-মা। শিশুদের ডায়াপার পরানো এখন সাধারণ ব্যাপার। কর্মজীবী মায়ের সময় যেমন বাঁচায়, তেমনই বাড়িঘর বা কাপড় নোংরা করা থেকেও মুক্তি দেয়। কিন্তু প্রায়ই বাচ্চাদের যে সমস্যাটা দেখা দেয় সেটা হচ্ছে ডায়াপার র‌্যাশ। এই র‌্যাশ বাচ্চার জন্য অস্বস্তিকর ও কষ্টদায়ক।

ডায়াপার থেকে হওয়া র‌্যাশ বা ফুসকুড়ি একধরনের ত্বকের প্রদাহ। ডায়াপার র‌্যাশের ফলে শিশুর নিতম্বে লাল লাল ছোপের মতো হতে পারে। এর কারণ অনেক। শিশুকে পরানো ভেজা ডায়াপার সময়মতো পরিবর্তন না করলে, ডায়াপারের ওপর প্লাস্টিকের প্যান্ট পরালে, শিশুকে প্রথমবারের মতো শক্ত খাবার দেওয়া হলে, শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হলে বা ডায়রিয়ার কারণেও ডায়াপার র‌্যাশ হতে পারে। আবার যেসব মা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান তাঁরা নির্দিষ্ট কিছু খাবার খেলে শিশুর ডায়াপার র‌্যাশ হয়ে থাকে। তবে ঘরোয়া চিকিৎসার সাহায্যে খুব সহজেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ডায়াপার ঝামেলা থেকে বাঁচায় ভ্রমণের সময়, রাতে বাচ্চাকে ঘুমানোর সময়। কেউ কেউ সারা দিনও পরিয়ে রাখেন। যখনই পরান না কেন খেয়াল রাখুন চার থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যেই ডায়াপার পরিবর্তন করে ফেলতে হবে। বাচ্চা যদি প্রস্রাব বা পায়খানা করে তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিবর্তন করে দিতে হবে। ছেলে শিশুকে ডায়াপার পরানোর সময় সাবধানে পরাতে হবে যেন প্রস্রাব করলে তা গড়িয়ে ঠিকমতো শোষিত হতে পারে।

 ডায়াপার র‌্যাশ ও করণীয়

*    শিশুর কোমল সংবেদনশীল ত্বক যখন বেশ কিছু সময় ধরে অথবা বারবার প্রস্রাব ও পায়খানার সংস্পর্শে আসে, তখন আর্দ্রতার কারণে ত্বকের তৈলাক্ত প্রাকৃতিক স্তরের প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। এতে ত্বকের ওপর লাল চাকার মতো হয়ে ফুলে ওঠে। অর্থাৎ ত্বকে ফুসকুড়ির মতো দেখা যায়।

*    প্রয়োজনে বারবার পোশাক বা ডায়াপার বদলে দিন। কোনোটাই বেশিক্ষণ ভেজা অবস্থায় রাখা উচিত নয়। ভ্রমণের সময় তাই অতিরিক্ত ডায়াপার রাখুন।

*    ডায়াপারের ওপর প্লাস্টিক–জাতীয় প্যান্ট পরানো ঠিক হবে না। কারণ, প্লাস্টিক আবরণ আর্দ্রতাকে ভেতরে আটকে রাখবে। এটি ডায়াপার র‌্যাশ আরও তীব্র করবে।

*    ডায়াপার বদলানোর পর শিশুর শ্রোণিদেশ ও তলপেট কোমল সাবানের সাহায্যে পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। এভাবে প্রতিটি ডায়াপার বদলে দেওয়ার পর শিশুর ডায়াপার অঞ্চল পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে।

*    ডায়াপার র‌্যাশ হলে চিকিৎসকের পরামর্শে জিংক অক্সাইড জাতীয় মলম ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়।

*ডায়াপার র‌্যাশ আক্রান্ত স্থানে খোলা বাতাস লাগতে দিতে হবে এবং র‌্যাশ ভালো না হওয়া পর্যন্ত ডায়াপারহীন অবস্থায় রাখতে হবে।

 লেখক: চিকিৎসক