ঝটপট রান্নার জন্য রাইস কুকার

বাজারে এখন পাওয়া যায় নানা রকমের রাইস কুকার। ছবি: অধুনা
বাজারে এখন পাওয়া যায় নানা রকমের রাইস কুকার। ছবি: অধুনা

সুবর্ণা মোস্তফা বেসরকারি সংস্থার একজন চাকরিজীবী। ৯-৫টা চাকরি আর সংসার সমানতালেই সামলাচ্ছেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক সময়মতো শেষ করতে প্রতিদিন রাইস কুকারের সাহায্য নেন। ‘অনেক সময় সকালে গ্যাস থাকে না। তখন আমার ভরসা রাইস কুকার। এ ছাড়া রাইস কুকারে রান্না ঝামেলাবিহীন ও কোনো খাবার পুড়ে যায় না। ভ্রমণের সময় বাচ্চাদের জন্য রান্নায়ও আমি ছোট আকারের রাইস কুকার ব্যবহার করি।’
শুধু সুবর্ণা মোস্তফা নন, রাজধানীতে পরিবারের ভরসা রাইস কুকার। বিশেষ করে চাকরিজীবী নারীদের ক্ষেত্রে।

রান্নার ভিন্নতা
ভাতসহ বিভিন্ন উপকরণ রান্না করা যায় রাইস কুকারে। এ ছাড়া মাছ, সবজি, খিচুড়ি, পোলাও, বিরিয়ানি, তেহারিসহ নানা উপকরণ রাইস কুকারে রান্না করতে শুধু বিদ্যুৎ থাকলেই হবে, পরিমাণমতো উপকরণ দিয়ে সুইচ টিপলেই নির্দিষ্ট সময় শেষে রান্না করা হয়ে যাবে। রামপুরার তানিয়া ক্রোকারিজের বিক্রয় ব্যবস্থাপক সালাম মিয়া বলেন, রাইস কুকারে চাল ধুয়ে পরিমাণমতো পানি দিলেই ভাত রান্না করা সম্ভব। এ ছাড়া অন্য কিছু রান্না করতে গেলে পরিমাণমতো উপকরণ দিয়ে সুইচ দিলেই হবে।

বিভিন্ন আকার
ভিশনের মোট ১১টি মডেলের রাইস কুকার বাজারে রয়েছে। ১১টি মডেলের রাইস কুকারে ১৭টি কালারের পাওয়া যাবে। ভিশন ইলেকট্রনিকসের ব্র্যান্ড ম্যানেজার মাহাবুবুর রহমান জানান, ভিশনের মোট চারটি আয়তনের রাইস কুকার রয়েছে। এগুলো হলো ১.৮ লিটার, ২.২ লিটার, ২.৮ লিটার এবং ৩ লিটার। এ ছাড়া বাজারে ট্রান্সটেক, ফিলিপস, এলজি, ওয়ালটন, প্যানাসনিক, বাটারফ্লাই ইত্যাদি পরিচিত ব্র্যান্ডের রাইস কুকারও রয়েছে।

দরদাম
লিটার এবং ওয়াটের ওপর নির্ভর করে রাইস কুকারগুলোর দাম। ভিশনের ১১টি মডেলের রাইস কুকারের দাম ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে। অন্য ব্র্যান্ডের রাইস কুকারের দাম ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার মতো। এ ছাড়া মালয়েশিয়ান ও চায়নিজ রাইস কুকার রয়েছে বাজারে। এগুলোর মধ্যে নোভা, বস, কনিয়ন অন্যতম। দাম ১ হাজার ৯৫ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।

সুবিধা
রাইস কুকারের রান্না ঝামেলাবিহীন এবং আরামদায়ক। ভিশন ইলেকট্রনিকসের ব্র্যান্ড ম্যানেজার মাহাবুবুর রহমান জানান, ভিশনের রাইস কুকারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রান্না যায় এবং খাবার গরম থাকে। একই সঙ্গে খাবার ভাপ দেওয়া যায়। উভয় পাশে উন্নত মানের প্রলেপ ব্যবহার করা হয়েছে। ভেতরের অংশও উন্নত মানের অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে ভিশনের রাইস কুকার তৈরি। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট এবং ওভার হিটেও ভালো থাকে। এক রাইস কুকারে বিভিন্ন রকম রান্না করা যায়। ভিশনের রাইস কুকার ইকো ফ্রেন্ডলি এবং সময় ও বিদ্যুতের খরচ কমায়। ভিশনের রাইস কুকারটি একটি সুইচের মাধ্যমে চালানো যায়।

কোথায় পাবেন
প্রাণ–আরএফএলের রিটেইল চেইনশপ আরএফএল বেস্ট বাই, নিউমার্কেট, স্টেডিয়াম মার্কেট, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, রামপুরাসহ আগোরা, স্বপ্নের মতো সুপারশপে মিলবে রাইস কুকার। পরিচিত ব্র্যান্ডের রাইস কুকারগুলো তাদের নিজস্ব শোরুমগুলোতে পাওয়া যায়।
বাজারে বিদেশ থেকে আমদানি করা নানা আকার ও ব্র্যান্ডের রাইস কুকার রয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের দেশে রাইস কুকার আমদানি করা হয়। আমদানি করা রাইস কুকারের মধ্যে মিয়াকো ব্র্যান্ডের রাইস কুকারের দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। নভেরা ব্র্যান্ডের বিভিন্ন আয়তনের কুকার পাওয়া যায়। ১ হাজার থেকে শুরু করে ২ হাজার ২০০ টাকা। রিকো ব্র্যান্ডের রাইস কুকারের দাম তুলনামূলক কম। এগুলোর দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে।

যত্নআত্তি
* রান্না করার পর পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
* রান্না করার পর পানি দিয়ে পরিষ্কার করার পর ভালোভাবে মুছে ফেলুন।
* খোলামেলা আলো–বাতাস আছে এমন জায়গায় রাইস কুকার রাখতে হয়।
* রান্না করার পর বিদ্যুতের সুইচটি বন্ধ করে রাখুন।
* স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রান্না করা উচিত। রান্না করার সময় তাড়াতাড়ি রান্না সম্পন্ন হওয়ার জন্য বেশি তাপমাত্রা ব্যবহার করা ঠিক নয়।
* রান্না করার মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে সুইচ বন্ধ করে রাখুন। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর রান্না অসম্পূর্ণ থাকা অবস্থায় ঢাকনা খুলবেন না।