শিশুর তোতলানো

তোতলামিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা খুব একটা কম নয়। তোতলামির ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত তিনটি ব্যাপার থাকে: ১. শব্দ বা কথা পুনরাবৃত্তি করা (যেমন: আগামী আগামী আগামীকাল যাব)। ২. শব্দের প্রথম অক্ষর বা উচ্চারণ লম্বা করে বলা (যেমন: পাপাপাপাপানি খাব)। ৩. বাক্যের মধ্যে বা শব্দের মধ্যে হঠাৎ করে থেমে যাওয়া বা আটকে যাওয়া, মুখ নাড়ানোর চেষ্টা সত্ত্বেও কোনো আওয়াজ বের হয় না। ঠোঁট-মুখ বেঁকে যায়, মুখ থেকে হালকা থুতুও বের হয়, কিন্তু কথাটা পুরো হয় না।

তোতলামির কারণ
মূলত পরিবেশ ও জিনগত কারণে তোতলামির সমস্যা হয়ে থাকে। আমরা যখন কথা বলি, তখন অনেক স্নায়ু দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে। এই কর্মযজ্ঞে ঝামেলা হলে কথার জড়তা পেয়ে বসে। একধরনের তোতলামি রয়েছে, যা শিশু অনুকরণ করে শেখে। যেসব মা-বাবা শিশুর কথার জড়তাকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেন, সেসব শিশুর মধ্যে সমস্যা বেশি দেখা যায়। মানসিক উদ্বেগ, ইচ্ছার অবদমন, প্রতিকূল পারিবারিক পরিবেশ প্রভৃতিকে শিশুর তোতলামির উল্লেখযোগ্য কারণ বলে ধরা হয়। যেসব শিশু নিজেকে নিয়ে বেশি সচেতন, ভয় পেলে বা রেগে গেলে তাদের কথার অস্পষ্টতা বা তোতলামি বেড়ে যায়।

তোতলামির চিকিৎসা
তোতলামির জন্য অনেকে পানি পড়া, ঝাড়ফুঁক কিংবা মুখে পারদ বল দিয়ে থাকে। এর কোনোটিই কাজে আসে না। বকুনি আর শাসনেও তোতলামি সারে না; বরং সহানুভূতি, মমতা, ধৈর্য দেখালে শিশু এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে। বাড়ি ও স্কুলের পরিবেশ আনন্দময়, নিরুদ্বেগ ও শিথিল করা জরুরি। শিশু যখন তোতলায় তখন তাকে বারবার বিষয়টি ধরিয়ে দেওয়া, তাকে থামিয়ে দেওয়া কিংবা একবার উচ্চারণ করা কথার পুনরাবৃত্তি করার জন্য চাপ দেওয়া ঠিক নয়। বরং ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ বাক্য শুনুন এবং চোখে চোখ রেখে কথা বলতে উৎসাহিত করুন। তাকে প্রতিটি আওয়াজ ধীরে ধীরে ও চাপ দিয়ে বলার অভ্যাস করান।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বয়স বাড়লে কথার জড়তা আপনাতেই কেটে যায়। শিশুর মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে মনোবিদের পরামর্শ নিতে পারেন। সমস্যা বেশি গুরুতর মনে হলে স্পিচ থেরাপিস্টের সাহায্য নেওয়া যায়।

আগামীকাল পড়ুন: চামড়ায় নখ ঢুকে সংক্রমণ

প্রশ্ন=উত্তর
প্রশ্ন: বয়স ২৭ বছর। তিন-চার বছর যাবৎ আমার একটু ঠান্ডা বা ধুলাবালু লাগলেই হাঁচি শুরু হয় (প্রায় সারা দিনই চলে) এবং নাক দিয়ে অনবরত পানির মতো সর্দি পড়ে। ডাক্তার বলেছেন স্থায়ী কোনো চিকিৎসা নেই। করণীয় কী?
উত্তর: অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের স্থায়ী কোনো চিকিৎসা নেই। ধুলাবালু ও যেসব বস্তুতে আপনার অ্যালার্জি আছে, সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। অ্যান্টিহিস্টামিন–জাতীয় ওষুধ নিয়মিত খেতে হতে পারে। ডা. আ ফ ম হেলালউদ্দিন, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রয়েছে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেক সময় ঘরে বসে কিংবা জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব। আপনার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান। উত্তর দেবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বয়স লিখতে ভুলবেন না।
ই–মেইলে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান: [email protected]