কাঁচকলার পাকা রান্না

সবজি হিসেবে কাঁচকলা কম–বেশি খাওয়াই হয়। সুস্বাদু এ সবজির রান্নায় বৈচিত্র্য আনা যায় ইচ্ছে করলেই। তেমন কিছু রেসিপি দিয়েছেন শুভাগতা দেবাশীষ


কাঞ্জল বা থোড় দিয়ে চিংড়ি

ছবি: খালেদ সরকার
ছবি: খালেদ সরকার

উপকরণ: কাঞ্জল (কলা গাছের কান্ডের ভেতরের সাদা অংশ, অনেক এলাকায় থোড়ও বলে) কুচি করে কাটা ৪ কাপ, ছোট চিংড়ি ২ কাপ, নারকেল কোরানো আধা কাপ, পোস্তবাটা ১ চা-চামচ, আদাবাটা দেড় চা-চামচ, পেঁয়াজবাটা ১ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া পরিমাণমতো, চিনি স্বাদমতো, লবণ পরিমাণমতো, কাঁচা মরিচ ৫–৬টি।

প্রণালি: পানিতে হলুদ ও লবণ মিশিয়ে কাঞ্জল কুচি ভিজিয়ে রাখুন। চুলায় ভেজানো কুচিগুলো কিছুক্ষণ রেখে ফুটিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। কড়াইয়ে তেল দিয়ে পেঁয়াজবাটা, আদাবাটা দিয়ে একটু কষিয়ে একে একে হলুদগুঁড়া মিশিয়ে কষিয়ে নিন। তারপর চিংড়ি ছেড়ে দিন। চিংড়ি কষানো হলে থোড় মিশিয়ে দিন। একটু নাড়াচাড়া করে ২০ মিনিট ঢেকে রাখুন। এরপর নারকেল কোরানো ও পোস্তবাটা মিশিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে কাঁচা মরিচ ছড়িয়ে রেখে দিন। হয়ে গেলে নামিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

কাঁচকলায় ইলিশের ঝোল

উপকরণ: কলা ৭–৮টি লম্বা করে টুকরা করা, ইলিশ ৭–৮ টুকরো, আলু মাঝারি আকারের ১টি, পেঁয়াজবাটা ২ চা-চামচ, জিরাবাটা আধা চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচের গুঁড়া প্রয়োজনমতো, লবণ স্বাদমতো, তেল প্রয়োজনমতো, আস্ত জিরা ফোড়নের জন্য অল্প পরিমাণ।

প্রণালি: প্রথমে হালকা করে কাঁচকলা ভেজে একটি পাত্রে তুলে রাখতে হবে। প্রথমে তেলে জিরা ফোড়ন দিয়ে আলু ছেড়ে দিন। তারপর একে একে সব বাটা মসলা ছেড়ে দিন। পরে সব গুঁড়া মসলা দিয়ে কষিয়ে নিতে হবে। কষানো হয়ে গেলে যখন তেল ভেসে উঠবে, তখন পরিমাণমতো পানি দিন। পানি ফুটে উঠলে হলুদ ও লবণ মাখানো ইলিশ ও ভাজা কাঁচকলা ঝোলে ছেড়ে দিতে হবে। ১০ মিনিট ঢেকে রাখুন। হয়ে এলে ভাজা জিরার গুঁড়া ছিটিয়ে ও কাঁচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে নামিয়ে ফেলুন এবং পরিবেশন করুন (ইচ্ছা করলে ইলিশ ভেজে নিতে পারেন)।

কলার চিপস

উপকরণ: কাঁচকলা ৩-৪টি, লবণ স্বাদমতো, হলুদ অল্প পরিমাণে তেল ভাজার জন্য, চাট মসলা আধা চা-চামচ।

প্রণালি: কাঁচকলা ভালো করে ছিলে গোলাকার (পাতলা) করে কেটে নিতে হবে। হলুদ আর লবণ মেশানো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পানি থেকে উঠিয়ে গরম তেলে মচমচে করে ভেজে নিতে হবে। ভাজা হয়ে গেলে ওপরে চাট মসলা ছড়িয়ে পরিবেশন করতে হবে।

কাঁচকলার জালি কাবাব

উপকরণ: কাঁচকলা সেদ্ধ ১ কাপ, আলু সেদ্ধ আধা কাপ, পাউরুটি ২–৩ টুকরা, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ, কাঁচা মরিচকুচি প্রয়োজনমতো, ধনেপাতার কুচি প্রয়োজনমতো, পুদিনাপাতার কুচি প্রয়োজনমতো, আদাবাটা আধা চা-চামচ, রসুনবাটা আধা চা-চামচ, জয়ত্রীর গুঁড়া সিকি চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, এলাচির গুঁড়া ২-৩ টি, দারুচিনির গুঁড়া ১ টুকরা, লবঙ্গগুঁড়া ১টি, ডিম ফেটানো ২টি, টোস্টের গুঁড়া ১ কাপ, তেল ভাজার জন্য, লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: তেল, ডিম ও বিস্কুটের গুঁড়া বাদ দিয়ে সব উপকরণ একসঙ্গে মাখাতে হবে। মাখানো মিশ্রণটাকে আলাদা ১০ ভাগে ভাগ করে তারপর গোলাকার চ্যাপ্টা কাবাব তৈরি করে বিস্কুটের গুঁড়ায় গড়িয়ে নিতে হবে। ফেটানো ডিমে ডুবিয়ে ডুবো তেলে ছাড়তে হবে। তেলে ছাড়ার পরে কাবাবের ওপর কিছু ফেটানো ডিম ছিটিয়ে দিতে হবে। ভাজা হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলতে হবে।

কাঁচকলার শাহি কোপ্তা

উপকরণ: কাঁচকলা ৪টি, আলু ১টি, পেঁয়াজকুচি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচকুচি ২ চা-চামচ, আদাকুচি ১ চা-চামচ, রসুনকুচি ১ চা-চামচ, গরমমসলা দেড় চা-চামচ, বিস্কুটের গুঁড়া আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, তেল ভাজার জন্য, ভাজা জিরার গুঁড়া ১ চা-চামচ।

তরকারি রান্নার জন্য: পেঁয়াজ ১ কাপ, কাজুবাদামবাটা ২ চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরাগুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ২ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ, রসুনবাটা ২ চা-চামচ, আদাবাটা ২ চা-চামচ, পানি প্রয়োজনমতো, টমেটো সস ১ টেবিল চামচ, টক দই ৩ টেবিল চামচ, তেল প্রয়োজনমতো, লবণ স্বাদমতো, ঘি ২ চা-চামচ, মালাই অল্প পরিমাণ, কাঁচা মরিচ ৭–৮টি।

কোপ্তা তৈরি: কাঁচকলা ও আলু সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে নিন। মিহি করে চটকে নিতে হবে। সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ছোট ছোট বল আকারে তৈরি করে নিন। এই বলগুলো বিস্কুটের গুঁড়ায় গড়িয়ে ডুবো তেলে ভাজতে হবে।

তরকারি রান্না: প্রথমে তেলে পেঁয়াজ বাদামি করে ভাজতে হবে। একে একে সব মসলা লবণ দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন। মসলা কষানো হলে এবং তেল ওপরে উঠলে টক দই দিতে হবে। আবার কিছুক্ষণ কষানোর পরে অল্প পরিমাণ গরম পানি দিয়ে ফুটাতে হবে। ঝোল ঘন হয়ে এলে ভাজা কোপ্তাগুলো ও টমেটো সস দিয়ে অল্প আঁচে ঢেকে রাখুন ১–২ মিনিট। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ, ঘি এবং মালাই দিয়ে নাড়াচাড়া করে নামিয়ে ফেলতে হবে। পেস্তা বাদামকুচি ওপরে ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

কলা কেক

উপকরণ: মাখন ২২৫ গ্রাম, চিনি ২২৫ গ্রাম, ময়দা ২০০ গ্রাম, লবণ ২ গ্রাম, বেকিং পাউডার ৬ গ্রাম, বেকিং সোডা ৬ গ্রাম, ডিম ২টি, গুঁড়ো দুধ ৫০ গ্রাম, ভ্যানিলা অ্যাসেন্স আধা চা-চামচ, কলা ৩টা।

প্রণালি: মাখন, চিনি আর লবণ একসঙ্গে মিশিয়ে বিট করে নিতে হবে। যখন হালকা ফেনা হয়ে আসবে, তখন এক এক করে ডিম মিশিয়ে নিতে হবে। এরপরে সব শুকনো উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। কলা কেটে মিশিয়ে নিন। এরপরে মোল্ডে দিয়ে দিন। ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় বেক করে নিলেই হয়ে যাবে কলার কেক।