রোকিয়া আফজালের হাতের ছয় রান্না

ছবি: সুমন ইউসুফ
ছবি: সুমন ইউসুফ
>

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) সহসভাপতি, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব উইমেন এন্ট্রাপ্রেনিউরের সভাপতি, ডেইলি স্টারের চেয়ারপারসন ও এশিয়ান ইউনির্ভাসিটি ফর উইমানের বোর্ডের সদস্য রোকিয়া আফজাল রহমান। বিশিষ্ট এই ব্যবসায়ী আরও অনেক ব্যবসায়িক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছেন। এসবের বাইরে ব্যক্তি রোকিয়া আফজাল রহমান নিজে খুব ভালো রান্না করেন। তাঁর ঈদের গল্প যেমন বলেছেন প্রথম আলোর ঈদ ম্যাগাজিনের পাঠকদের, সঙ্গে দিয়েছেন নিজের হাতের রান্না করা ছয়টি রান্নার রেসিপি

১২ ভাইবোন ও মা–বাবা সব মিলে ১৪ জনের পরিবার। সেই বাড়ির একটি মেয়ে সময় পেলেই রান্নাঘরে ঢুকে যেত, এটা বানাতে চাইত, সেটা বানাতে চাইত। ব্যস, তাতে বেজায় রেগে যেত বাড়ির বাবুর্চি। বাড়ির কত্রী৴র কাছে নালিশ করত ছোট রোকির নামে, ‘আপা এসে এসে বিরক্ত করে, এটা সেটা রান্না করতে চায়।’ রোকির মা চুপচাপ শুনে যেতেন। একবার একটা ঘটনা ঘটল।

রোকির বয়স তখন পনেরো বছর। বাবুর্চির জ্বর হলো, খুব শরীর খারাপ তার। এদিকে বাড়িতে এতগুলো মানুষের রান্না! বাজার এসেছে এত এত!

‘আমাদের তো বড় পরিবার। আমরা ১২ ভাইবোন, আম্মা আব্বাসহ ১৪ জন। এতজনের রান্না, বাজারই অনেক আসত। আম্মা বললেন, এতজনের রান্না, আমি কী করব এখন। তখন স্কুলে ছুটি চলছিল। আমি বললাম, আম্মা আমাকে দেন। আমি করি। বড় ডেকচিতে বুয়া ভাত রান্না করল, আমি খাসির মাংস রান্না করলাম, একটা ভাজি করলাম। খাবার টেবিলে আমার রান্না আব্বা এত পছন্দ করলেন, বললেন, রোকির রান্না এত ভালো। রান্না বিষয়ে সেটাই প্রথম অনুপ্রেরণা। ওই শুরু হলো আমার রান্নার শখ।’ বললেন রোকিয়া আফজাল রহমান। 

রান্না তিনি তখনো ভালোবেসে করতেন, এখনো করেন। তাঁর হাতের জর্দা সেমাই, দুধ সেমাই ছাড়া বাড়িতে ঈদ সম্পূর্ণ হতো না। তাঁর হাতের দুধ সেমাইয়ের প্রশংসা সবাই করতেন। কথা বলার সময় সুস্বাদু হওয়ার কথাটাও বললেন। ‘দুধ সেমাইয়ে যেটা করি, দুধটা বেশি করে নিয়ে জাল দিয়ে ঘন করে তার মধ্যে এলাচি, বাদাম, পেস্তা দিই। খুব ঘন করে নেওয়া এই দুধের মধ্যে অল্প পরিমাণে সেমাই দিই, ফিরনির মতো স্বাদ হয় অনেকটা। মাঝেমধ্যে জাফরান দিই এটাতে। আর আমার শাশুড়ির একটা রেসিপি আছে জর্দা সেমাইয়ের। তিনি আনারস, মাওয়া দিয়ে এটি বানাতেন। আমাদের বাড়িতে সব রান্না ঘি ও সরষের তেলে রান্না হতো। তাই সেমাই ভেজে লাল করে নিয়ে জর্দা করতাম। এখন তো লাল জর্দা সেমাই পাওয়া যায়। একটা মজার কথা বলি, ঈদের দিন সেমাই রান্না করে লুকিয়ে রাখতে হতো। কারণ, আমার ছোট ভাই বন্ধুদের নিয়ে মেহমানদের আসার আগেই সেমাই খেয়ে অর্ধেকের বেশি শেষ করে ফেলত।’

এখনকার ঈদে আগের মতো সব পদ তিনি রান্না করতে পারেন না। সেমাই, চটপটি, দই–বড়া বানান নিজে আর অর্ডার করে হোমমেড কাবাব কিনে আনেন। বিশেষ করে ছোট আকারের শামি কাবাব অর্ডার দেন বেশি। এটি পরিবেশন করতে সুবিধা হয়। দুপুরে খাওয়ার জন্য বিরিয়ানির অর্ডারও দিয়ে থাকেন তিনি। ছেলেমেয়েরা দুপুরে তাঁর বাড়িতে খান, রাতে তাঁরা তাঁদের শ্বশুরবাড়িতে খাবার খান। ঈদের আগের রাতে হাতের কাজ শেষ করে ঈদের ঘোষণা শোনার সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়েন মিষ্টি কিনতে। যত যাই হোক, মিষ্টির দোকানে যাওয়া তাঁর চাই। বেশির ভাগ সময় মিষ্টির দোকানে গিয়ে দেখেন মিষ্টি শেষ হয়ে গেছে। তাতে অবশ্য ক্ষান্ত দেন না উদ্যমে। এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ছুটে যান। মিষ্টি কিনে হাসিমুখে তবেই বাড়ি ফেরেন।

যখন কথা বলছিলেন, তখন তাঁর গুলশানের বাড়ির রান্নাঘরের চুলায় ভাজছিলেন আলুর চপ। বললাম, এই যে এত কিছু রান্না করেন? আপনার প্রিয় খাবার কী? উত্তরে বলেন, ‘শুনলে অবাক হবে। আমার প্রিয় খাবার পান্তাভাত। খুব ভালো লাগে। প্রায়ই বাড়িতে পান্তা বানিয়ে খাই।’

খাবার ঘরের এক পাশে অনেক রকমের আচারের বয়াম। যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন, আচার বানানোর জন্য সময় তিনি বের করবেনই। আচারগুলো দেখিয়ে বললেন, ‘প্রতিবছর প্রচুর আচার বানাই। কোনো বছর মিস হয় না। আমার মেয়েরা শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যায়। আমিও আচার বানিয়ে পাঠিয়ে দিই। জলপাইয়ের আচার, আমের দুরকমের আচার—কাশ্মিরি আচার, আমের কাসুন্দি। আচারের মধ্যে অনেক সরষে থাকে। ফলে সহজে নষ্ট হয় না। কাসুন্দি আম সবার খুব পছন্দ। দেশি পেয়ারা কিনে প্রচুর পরিমাণে পেয়ারার জেলি বানিয়ে প্রত্যেককে দিই। আমার ভাইবোনদেরও দিই একটা একটা করে।’

বিয়ের পরও তিনি রান্না করতেন। বাবুর্চি অসুস্থ হলে দুবেলা রান্নার দায়িত্ব নিজেই নিতেন। রান্না করতে তাঁর তখনো ভালো লাগত। ব্যাংকে তখন তিনি চাকরি করতেন। দুপুরে বাড়িতে ফিরে তিনি আর তাঁর স্বামী একসঙ্গে খাবার খেতেন। আবার বিকেলে অফিস থেকে ফিরে রাতের ও পরদিন দুপুরের রান্না সারতেন। ‘জানেন, আমার স্বামী বেচারা তখন খুব আপসেট হতো, বলত, তোমাকে এত কাজ করতে হয়। কিন্তু উনি বুঝতেন না যে আমি ভালো লাগা থেকে করতাম।’

বিদেশে গেলে এখনো তিনি রান্না করেন। গত বছর গিয়েছিলেন নাতির কাছে। তাঁর নাতি যুক্তরাষ্ট্র পড়েন। দাদির হাতের আচারি গোশ খেয়ে খুব প্রশংসা করে বলেন, ‘দাদি, তোমার গরুর মাংস রান্না নাজমুলের থেকেও ভালো হয়েছে।’ রোকিয়া আফজাল রহমানের বাড়ির দীর্ঘদিনের বাবুর্চির নাম নাজমুল। সবাই নাজমুলের হাতের গরুর মাংস একবার খেলে মুখে স্বাদ লেগে থাকে।

নাতির কাছে প্রশংসা শুনে রোকিয়া আফজাল বাজার থেকে আরও গরুর মাংস কিনে রান্না করে প্যাকিং করে ডিপ ফ্রিজে ভরে রেখে আসেন। যাতে নাতি শুধু ওভেনে গরম করে খেতে পান।

ছোটবেলার ঈদস্মৃতি বলতে গিয়ে মনে হলো তিনি বাড়ির মেয়ে রোকি হয়ে গেলেন। সুন্দর সব লেসের পর্দা, বিছানার চাদর তাঁর মা বাক্সে ভরে আলমারিতে তুলে রাখতেন। ঈদ উপলক্ষে সেগুলো নামানো হতো। যত ধরনের বড় বড় বাসনকোসন, পানদানি, কয়েক রকমের আতরদানি বের করে সাজিয়ে রাখতেন তাঁরা। বাড়িতে মেহমান এলে আতর লাগাতেই হতো তাঁদের। ঈদের দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতেন তাঁরা। কিন্তু গোসলখানা সব খালি থাকত তাঁর ছয় ভাইয়ের জন্য, ভাইয়েরা গোসল করে নতুন কাপড় পরে আতর মেখে ঈদের নামাজ পড়তে যেতেন। এরপর ছয় বোন গোসল করে নতুন পোশাক পরতেন। এভাবে কেটে যেত ছোটবেলার ঈদগুলো। তিন দিনের ঈদ শেষে আবার ভাঁজে ভাঁজে বাড়ি সাজানোর সব সামগ্রী বাক্স ভরে রাখতেন।

রোকিয়া আফজাল সব সময় বাড়ির কাজে সাহায্য করতেন। বড় পরিবার, তাই কাজ করতে করতে তাঁর মাকে সব সময় হিমশিম খেতে হতো। ছোটবোনদের নিয়ে নিজে গাড়ি চালিয়ে ঈদপোশাক কিনতে যেতেন। বোনেরা সবাই মিলে বাজারে গিয়ে নানা রকমের কাপড় কিনে আনতেন। সবাই নিজের কাপড় কিনে পছন্দ করতেন। বিয়ের আগে বোনদের সব পোশাক, এমনকি ঈদের পোশাকও বোন রোকিয়া আফজাল রহমান সেলাই করে দিতেন। সবচেয়ে ছোট বোন তাঁর থেকে নয় বছরের ছোট ছিল। নানা রকমের নকশা, হাতে করা এমব্রয়ডারিও তিনি করে দিতেন। রোকিয়া আফজালের বিয়ের পর অন্য বোনেরা সেলাইটা শিখে ফেলেন। 

সেলাইয়ের অভ্যাসটা এখনো আছে রোকিয়া আফজাল রহমানের। তাঁর থেকে জানা গেল, ‘গত বছর আমার নাতনি মরিয়ম হয়েছে। নিজ হাতে ওর জন্য সাদা রঙের শাল বানিয়ে দিয়েছি। শীতকালে সবার জন্য সোয়েটার বুনি। আমার নাতনির জন্য নিজ হাতে ছোট ছোট কাপড় বানিয়ে দিয়েছি। নাতি বিদেশে থাকে, ওদেরকে স্কার্ফ বানিয়ে দিয়েছি।’

 এখন অনেক ব্যস্ততা। সময় পান না। একটু সময় পেলেই নিজের প্রিয় কাজগুলো করতে থাকেন। বাড়ির লনের আমগাছ দেখিয়ে বললেন, ‘দেখছ, আম ধরেছে।’ নিজে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, তাই নতুন উদ্যোক্তাদের তো সমর্থন দেনই, ভালো কাজের পাশে থাকেন। নারীদের সঙ্গে তো আছেনই। তিনি বলেন, ‘আমি ঘুরতে পছন্দ করি। সব রকমের গান শুনতে পছন্দ করি। রিজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গান শুনি, গজল শুনি ও পুরোনো দিনের বাংলা গান রাতে ঘুমানোর আগে ইউটিউবে গান ছেড়ে ঘুমাই। আর বই তো পড়িই। ছোটবেলা থেকে প্রচুর বই পড়েছি। তখন থেকে আমাদের খুব উৎসাহ দেওয়া হতো বই পড়ার জন্য। জীবনের একেক ধাপে একেক রকম বই পড়েছি। নামকরা সব বেস্টসেলার—অরুন্ধতী রায়, ঝুম্পা লাহিড়ী, অমিতাভ ঘোষ, আরও কতজন আছে প্রিয় লেখকের তালিকায়।’

এবার ঈদে কী করবেন তাঁর পরিকল্পনার ছক কষতে থাকেন। পরিকল্পনা না করে উপায় কী, এত কাজের মধ্যে যে থাকেন। একমুহূর্ত বিরাম যেন তিনি চান না।

টক ঝাল মিষ্টি বেগুন

উপকরণ: বোঁটাসহ আস্ত গোল বেগুন চারটি, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, পাঁচফোড়ন ১ চা–চামচ, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি: গোল বেগুন মাঝখান থেকে চার ভাগ করে নিন। বোঁটা রেখে দিন। আস্ত বেগুনের মাঝে সব মসলা দিন। তারপর বেগুন একটু নাড়াচাড়া করে পানি দিয়ে দমে দিন। দমে রাখতে হবে আধা ঘণ্টার মতো। এরপর পরিবেশন করুন।

দইয়ের রাইতা

উপকরণ: টক দই দুই কাপ, শসাকুচি (২টা), পুদিনাপাতা মিহিকুচি ১ চা–চামচ, লবণ ও জিরা পরিমাণমতো।

প্রণালি: সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

আচার গোশত

উপকরণ: গরুর মাংস ২ কেজি, সিরকা ৬ টেবিল-চামচ, পাঁচফোড়ন এক চা–চামচ, পেঁয়াজকুচি ২ কাপ, আদাবাটা ২ টেবিল-চামচ, রসুনবাটা ২ চা-চামচ, জিরাবাটা ২ চা-চামচ, সরিষাবাটা ২ টেবিল-চামচ, মরিচগুঁড়া ২ টেবিল-চামচ, হলুদগুঁড়া ২ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, দারুচিনি ৪ টুকরা, এলাচি ৪টি, তেজপাতা ৩টি, সরিষার তেল আধা কাপ,  লাল মরিচ ১০টি, কাঁচা মরিচ ৮-১০টি।

প্রণালি: মাংস ধুয়ে সিরকায় ভিজিয়ে নিন। তাতে তাড়াতাড়ি গলে আর টকভাব হয়। টুকরা করে ধুয়ে আচার ও কিছু কাঁচা মরিচ বাদে সব উপকরণ মেখে নিতে হবে। তেল গরম করে পাঁচফোড়নের ফোড়ন দিতে হবে। তাতে মাখানো মাংস ও পরিমাণমতো পানি দিয়ে অল্প আঁচে রান্না করতে হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে পানি শুকিয়ে গেলে কাঁচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ চুলায় রেখে দিন। নামানোর আগে লম্বা লম্বা করে, চিকন চিকন করে আদা, আস্ত রসুন, আস্ত পেঁয়াজ দিয়ে কিছুক্ষণ হালকা আঁচে দিয়ে রেখে দিন চুলার ওপরে। এতে পেঁয়াজগুলো গলে যায়, আদা–রসুনের সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়বে। পরিবেশনের সময় বড় বড় লাল মরিচ দিতে পারেন।

আলুর চপ

উপকরণ: আলু মিহি করা ৪ কাপ, টোস্ট বিস্কুটের গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, ডিম ১টি, সেদ্ধ ডিম ৪টি, গোলমরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, হলুদগুঁড়া সামান্য। সাজানোর জন্য আধা টুকরা দেশি পনির।

প্রণালি: আলু ভর্তা করে নিয়ে, আলুর ভেতরে সেদ্ধ ডিম দিয়ে দিন। এবার পানপাতার আকার করে ডিমের সাদা অংশের মধ্যে ভিজিয়ে টোস্ট বিস্কুটের গুঁড়া লাগিয়ে ক্রাম্ব করে ডুবোতেলে ভাজতে হবে। চাইলে ঈদের আগের রাতে ডিপ ফ্রিজেও করে রেখে দিতে পারেন। দেশি পনির ফুলের মতো করে কেটে সাজিয়ে নিতে পারেন।

মুরগি মাসাল্লাম

উপকরণ: মুরগি তিনটি (ফার্মের), পেঁয়াজ বেরেস্তা ২৫০ গ্রাম, টক দই ১০০ গ্রাম, আদা ও রসুনবাটা ২০০ গ্রাম, কাঁচা মরিচ ৬টি, শুকনা মরিচের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস ৫০ গ্রাম, দারুচিনি, এলাচি, লবঙ্গ ১ টেবিল চামচ করে, জয়ত্রী ১ গ্রাম, জয়ফল ১টি, শাহিজিরা ১ চা–চামচ, পেস্তাবাদাম ২৫ গ্রাম, কাঠবাদাম ২৫ গ্রাম, পোস্তদানা ১০ গ্রাম, দুধ ২৫০ মিলি, চিনি, লবণ পরিমাণমতো, মালাই ১ কাপ, মাওয়া ২০ গ্রাম, সয়াবিন তেল আধা লিটার ও ঘি ২৫০ গ্রাম।

প্রণালি: তিনটি মুরগিকে দই আদা পেঁয়াজ দিয়ে মাখিয়ে রাখুন। মাখানোর পরে ভালো করে লাল করে ভেজে নিন আস্ত মুরগি। ভাজার পরে পেঁয়াজ লাল করে সব রকমের মসলা দেবেন কিন্তু হলুদ দেবেন না। আদা–রসুন–পেঁয়াজবাটা বেশি করে দিয়ে আবার বেশি করে পেঁয়াজের বেরেস্তা দিয়ে মসলার মধ্যে আরেকবার কষিয়ে আস্ত মুরগি আরেকবার ভেজে নিন। আবার মসলার মধ্যে কষিয়ে, কষার পরে অনেকটা পানি দিয়ে চুলার ওপর দিন। আন্দাজমতো পানি দিন, পানি শুকাবে আর মুরগিটা হয়ে যাবে। নামানোর পরে আগে বাদাম বেটে রাখা, কিশমিশ আর আলু বোখারা, বেরেস্তা, বাদাম ওপরে দিন। কেউ চাইলে মুরগির ভেতরে ডিম, আলু ও কিশমিশ দিয়ে স্টাফিং করতে পারেন।

পটোলের দোলমা

উপকরণ: পটোল ৪টি। মুরগির কিমা ১৫০ গ্রাম। পেঁয়াজকুচি ২ টেবিল-চামচ। পেঁয়াজবাটা ২ টেবিল-চামচ। হলুদগুঁড়া সামান্য। মরিচগুঁড়া স্বাদমতো। জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ। রসুনবাটা আধা চা-চামচ। আদাবাটা আধা চা-চামচ। গরম মসলার গুঁড়া ১/৪ চা-চামচ। লবণ স্বাদমতো। তেল প্রয়োজনমতো।

প্রণালি: পটোলের খোসা ছাড়িয়ে একটু ভাপিয়ে নিন। যাতে যখন বিচি বের করবেন, তখন যাতে ফেটে না যায়। তারপর দুই পাশ দিয়ে কেটে বিচি বের করে তার মধ্যে মুরগির কিমা দিন। মুরগির কিমাকে পটোলের ভেতরে ভরার আগে রসুনবাটা ১ চামচ, পেঁয়াজকুচি, কাঁচা মরিচ কুচানো ৩টি, লবণ, হলুগুড়া, মরিচের গুঁড়া, জিরার গুঁড়া, ১/২ চামচ করে, গরমমসলা গুঁড়ো এক চিমটি, চিনি সামান্য দিয়ে ভালো করে মেখে নিন। পাত্রে ১ চামচমতো তেল গরম করে পুরোটা ভেজে নিন। ঠান্ডা হয়ে এলে পুরো এবার একটু করে ভাজা পটোলের মধ্যে ঢুকিয়ে দিন। পটোলের মধ্যে পুর ভরা হয়ে এলে খোলা মুখ ময়দা দিয়ে বন্ধ করে দিন। আবার তেল গরম করে ময়দা দেওয়া আছে, সেদিকটা তেলে দিয়ে পটোলগুলো ভেজে তুলে রেখে দিন। এবার আরও একটু তেল গরম করে বাকি পেঁয়াজকুচি লাল করে ভেজে নিয়ে টমেটো দিয়ে দিন পানি বের হলে সব মসলা একে একে দিয়ে কষে নিন। তেল ছাড়লে পুরভরা পটোলগুলো দিয়ে একটু নেড়ে ১ কাপমতো পানি দিন। নামানোর আগে আনারস কেটে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।