চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫ পদ

>আমচুর দিয়ে ছোট মাছ বা পেঁয়াজ-মরিচ ডলে কালাই রুটি। এসব খাবার মনে হলেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের কথা মাথায় আসে। দেশের অন্য এলাকার মতো এই অঞ্চলে আরও নানা রকম বিশেষ পদ খাওয়ার চল আছে। তেমন কিছু খাবারের রেসিপি দিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শংকরবাটি-পোল্লাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা খাতুন।
ছবি : নকশা
ছবি : নকশা


খেজুর লালির পায়েস

উপকরণ

আতপ চাল ১ কাপ, দুধ ২ লিটার, খেজুর রসের লালি (ঝোলগুড়) ২ কাপ।

প্রণালি

প্রথমে অর্ধেক পরিমাণ দুধ চুলায় বসিয়ে ফুটে উঠলে ধুয়ে রাখা চাল দিয়ে নাড়তে থাকুন। চাল সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত অল্প অল্প করে দুধ মেশাতে থাকুন। চাল ভালো সেদ্ধ হলে চুলার আঁচ কমান। এরপর লালি দিয়ে নেড়ে আঁচ বাড়িয়ে বাকি দুধ দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে ঘন হলে পাত্রে ঢেলে পরিবেশন করুন।

ছবি : নকশা
ছবি : নকশা


কলাই ডাল

উপকরণ

কলাই ডাল ২৫০ গ্রাম, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ, তেজপাতা ৩টি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ৬-৭টি, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ ও পানি পরিমাণমতো।

প্রণালি

পাত্রে ১ লিটার পরিমাণ পানি দিয়ে চুলায় বসান। পানি ফুটে উঠলে ধুয়ে রাখা ডাল ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে অল্প আঁচে সেদ্ধ করুন। ডাল ভালো সেদ্ধ হলে ঘুটনি দিয়ে ঘুঁটে সামান্য ফুটানো পানি মিশিয়ে আবার ভালো করে ফুটান। এরপর চুলা থেকে নামিয়ে ওপরে কুচি করা কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ আর কাঁচা সরষের তেল দিয়ে পরিবেশন করুন।

ছবি : নকশা
ছবি : নকশা


কলাই রুটি

উপকরণ

চালের আটা ২ কাপ, কলাইয়ের আটা আধা কাপ, পানি পরিমাণমতো।

প্রণালি

চাল এবং কলাইয়ের আটা চালুনি দিয়ে চেলে একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। একটি পাত্রে আটা আর পানি দিয়ে মেখে মণ্ড তৈরি করুন। বেশ কিছুক্ষণ হাতের তালু ও আঙুল দিয়ে ঠেসে মণ্ডকে কিছুটা মোলায়েম করে নিতে হবে। ২টি গোলা তৈরি হবে। ১টি গোলা দিয়ে লই বানিয়ে লইটিকে একটু একটু করে দুই হাতের আঙুলের সাহায্যে গোলাকার করুন। এরপর দুই হাতের তালু আর আঙুলের সাহায্যে চেপে চেপে বড় রুটির আকার তৈরি করুন। এ সময় মাঝেমধ্যে পানিতে হাত ভেজাতে হবে। মাটির চুলায় মাটির খোলা ভালোভাবে উত্তপ্ত হলে রুটি খোলায় দিয়ে এক মিনিট পর উল্টে দিন। ওলটানো পিঠ সেঁকা হলে আবার উল্টে দিন। রুটি ফুলে উঠলে আঁচ একটু কমিয়ে মচমচে করে সেঁকে তুলুন। এই রুটি গরম অবস্থায় লবণ, মরিচ, ধনেপাতার চাটনি, বেগুনভর্তা, গরুর মাংস দিয়ে খেতে হয়।

ছবি : নকশা
ছবি : নকশা


ছোট মাছে আমচুর

উপকরণ

যেকোনো ছোট মাছ ২৫০ গ্রাম, পেঁয়াজবাটা ২ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ১ চা-চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরেগুঁড়া আধা চা-চামচ, চন্দনীবাটা ১ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, তেল আধা কাপ, কাঁচা মরিচ ৪টি, আমচুর ৮-১০টি, পানি পরিমাণমতো।

প্রণালি

সামান্য পানিতে আমচুর ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। কড়াইয়ে কাঁচা মরিচ আর আমচুর ছাড়া মাছসহ সব উপকরণ দিয়ে হাত দিয়ে ভালো করে মেশান। সামান্য পানি দিয়ে ঢেকে চুলা জ্বালান। ফুটে ওঠার ২ মিনিট পর আমচুর আর কাঁচা মরিচ দিয়ে আবার ঢেকে দিন। ঝোল মাখা মাখা হলে নামিয়ে নিন।

ছবি : নকশা
ছবি : নকশা


কুমড়ো বড়ি ইলিশ

উপকরণ

বড় আকারের ইলিশের ৫-৬ টুকরো, কুমড়ো বড়ি ৮-১০টি, পেঁয়াজবাটা ৩ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচগুঁড়া দেড় চা-চামচ, পরিমাণমতো লবণ, তেল ও পানি।

প্রণালি

কড়াইতে ৪ টেবিল চামচ তেল গরম করে বড়িগুলো হালকা সোনালি করে ভেজে তুলে রাখুন। পরিষ্কার করে ধুয়ে রাখা ইলিশের টুকরোগুলো সামান্য লবণ হলুদ মেখে তেলে হালকা করে ভেজে তুলুন। এবার অন্য একটি কড়াইয়ে পরিমাণমতো তেল দিয়ে গরম হলে পেঁয়াজবাটা, রসুনবাটা, হলুদ, ধনে ও মরিচগুঁড়া, পরিমাণমতো লবণ দিয়ে কষান। কষানো হলে দুই কাপ পানি দিয়ে ফুটে উঠলে বড়ি দিয়ে ঢেকে রাখুন। বড়ি আধা সেদ্ধ হলে মাছ দিয়ে আবার ঢেকে রাখুন। বড়ি সেদ্ধ হলে একটু ঝোল থাকা অবস্থায় নামিয়ে ফেলুন। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।