জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটি অব ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিকাকো ওমাতা। জাপান-বাংলাদেশ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে আসা তাঁর। মিকাকো ভবিষ্যতে সাংবাদিক হতে চান। তিনি এখন প্রথম আলোর ফিচার বিভাগে এক মাসের শিক্ষানবিশি করছেন। সুন্দরবন ঘুরে এসে মিকাকো বাংলায় লিখেছেন তাঁর অভিজ্ঞতা।
জাপান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন এসেছিলাম আমরা। সঙ্গে ছিলেন আমাদের শিক্ষক মনজুরুল হক। ঢাকা থেকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনে বেড়াতে গিয়েছিলাম। দুই দিন থেকেছি আমরা। সুন্দরবন খুব সুন্দর ও ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। এখানে অনেক গরানগাছ আছে। আমরা সবাই মিলে একটি লঞ্চে থেকেছি। বনের মধ্যে যাওয়ার জন্য ছোট নৌকা আর বড় নৌকা ব্যবহার করেছি। নৌকা থেকে নানা রকম পশু দেখতে পেয়েছি।
সুন্দরবনের সবচেয়ে বিখ্যাত পশু ‘বাংলা বাঘ’। তবে তাঁর দেখা পাওয়া খুব কঠিন। বাঘের পদচিহ্ন দেখেছি। আমাদের গাইড বলেছেন, আজকাল অন্য জীবজন্তুও কমে গেছে। কারণ, মানুষ সুন্দরবনের প্রকৃতি ধ্বংস করছে। তার পরও আমরা এখনো খুব সুন্দর প্রকৃতি দেখতে পেরেছি। এখানকার নদী খুব বড়, সাগরের মতো। নানা রঙের নৌকা আছে। তাই চারপাশ সুন্দর লাগে। নৌকায় বেশ আরাম লেগেছে। খুব আরামপ্রদ হাওয়া।
রাতে সুন্দর তারা দেখেছি নৌকা থেকে। মনে হয়েছে ঢাকার চেয়ে ভালো করে তারা দেখা যায় এখানে। এখানকার বাতাস হচ্ছে স্বচ্ছ আর অন্ধকার। রাতে নৌকায় আমরা গান করেছি। কিন্তু অল্প সময় করেছি। রাতে বেশ ঠান্ডা ছিল, তাই সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। পরদিন আবার নৌকায় ঘুরে বেড়াই। হরিণ, বানর, পাখি, কুমির আরও নানা রকমের পশু দেখেছি। এরপর আমরা বনের পথে হাঁটি। তখন দোয়েল পাখির বাসাও খুঁজে পাই।
বনের মধ্যে ভালোভাবে পথ তৈরি করা। তাই আমাদের কোনো অসুবিধা হয়নি। নদীর পারে বসে পাখির ডাক শুনেছি। সুন্দরবন ভ্রমণের সময় মাছ ধরাও দেখেছি। এটি খুব আকর্ষণীয় লেগেছে আমার কাছে। আমিও মাছ ধরা শিখতে চাই। কাজটা খুব কঠিন মনে হয়েছে, সে জন্য চেষ্টা করতে হবে আমাকে। আর নৌকার খাবার ছিল মজার। মুরগির মাংস, খাসির মাংস, চিংড়ি মাছ ও বেগুনভাজা আমার ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে, ঢাকার চেয়ে এখানকার মাছ তাজা। সুন্দরবনে অনেক ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। আর আমার কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে খাবার। সবার অন্তত একবার সুন্দরবনে যাওয়া উচিত।