লেবুর গুণে সুস্থ থাকুন

লেবুর গুণের শেষ নেই। মডেল: সায়রা, কৃতজ্ঞতা: হার্বস আয়ুর্বেদিক ক্লিনিক, ছবি: সুমন ইউসুফ
লেবুর গুণের শেষ নেই। মডেল: সায়রা, কৃতজ্ঞতা: হার্বস আয়ুর্বেদিক ক্লিনিক, ছবি: সুমন ইউসুফ

লেবু ভিটামিন সি-তে ভরপুর। লেবুর ভিটামিন সি শরীরের নানা উপকারে আসে। ওজন কমানো, রক্তের কোলেস্টেরল কমানো ছাড়াও রক্তস্বল্পতা কমাতে লেবুর অনেক ভূমিকা রয়েছে। 

লেবুতে রয়েছে পেকটিন, খাদ্য আঁশ, যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে ওজন কমে। দৈনন্দিন খাবারে লোহা বা আয়রন থাকে, যা শোষণের জন্য ভিটামিন সির প্রয়োজন হয়। তাই খাবারের সঙ্গে লেবু খেলে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ক্যানসারের ক্ষতিকর কোষ ধ্বংস করে, ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। 

লেবু আর মধুর সঙ্গে মেশানো উষ্ণ পানি—এই তরল পানীয় অনেকের কাছে অতিপরিচিত। ওজন কমাতে প্রতিদিন অনেকেই সকালে খালি পেটে পান করেন এই পানীয়। লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, আর মধুতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এফেক্ট, যা শরীরের জন্য উপকার। বলা হয়, লেবু, মধু একসঙ্গে হালকা গরম পানি দিয়ে খেলে বিপাক (মেটাবলিজম) সক্রিয় হয়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। আসলে হালকা গরম পানি মূলত এ কাজটি করে থাকে। আর লেবুর পেকটিন অনেকক্ষণ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, তাই ওজন কমে। তবে এই মিশ্রণ ত্বককে ভালো রাখতে ও ঠান্ডা-কাশি প্রতিরোধে খুবই উপকারী। 

সঠিক জীবনযাত্রা, হাঁটা ও ক্যালরি নিয়ন্ত্রণের জন্য সুষম খাবার গ্রহণ করা ছাড়া শুধু লেবু-মধু পানি খেয়ে ওজন কমানো সম্ভব নয়। এ ছাড়া যাদের মাইগ্রেন রয়েছে, তাঁরা বাইরের রোদে বের হওয়ার সময় এবং রোদ থেকে ফিরে এই মিশ্রণটি খেলে অনেক উপকার পাবেন। আবার যাঁরা মস্তিষ্কনির্ভর কাজ বেশি করে ক্লান্ত হয়ে পড়েন, তাঁরাও মিশ্রণটি খেলে অনেক উপকার পাবেন। খুব ঠান্ডা-কাশি লাগলেও এটি উপকারী। 

লেবুর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। মুরগির স্যুপের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে দুর্বলতা কমে। ক্যানসার বা অস্ত্রোপচারের পর এভাবে স্যুপ খেলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। খেলাধুলার পর লেবুর শরবত খেলে শরীরে ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্য রক্ষা হয়। তবে অনেকে বেশি ভালো ফল পাওয়ার আশায় পুরো একটা লেবু বা একাধিক লেবু একবারে খেয়ে ফেলেন, যা মোটেও ঠিক নয়। মনে রাখবেন অতিরিক্ত কিছুই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।

লেখক: প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল, ঢাকা।