সোনার গয়নায় ফের সাবেকি নকশা

ঘুরেফিরে পুরোনো নকশাই নতুন রূপে হাজির। এককথায় বলতে গেলে দাদি-নানি বা মা–খালাদের সাবেকি গয়নাগুলোই এখন আবার চলতি ধারায় চোখ ধাঁধাচ্ছে। গলায় জড়িয়ে থাকা পঞ্চচিপ বা পাঁচ স্তরের মালা, তিন স্তরের রানিহার, হাঁসুলি, জড়োয়া, চোকার, নবরত্ন হার, চাঁনবালি দুল, অনন্ত বালা বা গোলাপ কাঁটা বালার নকশা কয়েক যুগ পুরোনো হলেও নামীদামি অলংকারের দোকানগুলো সেজে উঠছে এখন এসব নকশাতেই। খুব জোর গলায় বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, হ্যাঁ, এগুলোই এখনকার নকশা। যাঁদের কাছে কয়েক যুগ ধরে সাবেকি আমলের লহরি মালা, হাতের বাজু, দুল, নথ, নাকফুল, চুড়ি, কাঁকন, বিছা, পাশা দুল, সীতাহার, ঝুমকা, রতনচূড়, মানপাশা প্রভৃতি আছে, ভাগ্যবান তাঁরা। বিভিন্ন উৎসব বা অনুষ্ঠানে আলমারির বন্ধ দরজাটা খুলে পরে ফেললেই সাজসজ্জায় আপনি হয়ে থাকবেন মধ্যমণি। 

যন্ত্র নয়, হাতের ছোঁয়ার যত্নেই তৈরি হতো সাবেকি গয়না। সেই নকশা এ কারণেই যেন অমূল্য। বাজার ঘুরে দেখা গেল জড়োয়া হাউসে স্বর্ণের অলংকারে সাবেকি নকশা নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছে। জড়োয়া হাউসের ধানমন্ডি শাখার বিক্রয় নির্বাহী বিশ্বজিৎ হালদার বলেন, পুরোনো দিনের গয়নার একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এর নকশায় কোনো যন্ত্র ব্যবহার করা হতো না। তাই সেই চিন্তা থেকেই কারিগরদের হাতের কাজেই তৈরি হয় জড়োয়া হাউসের ঐতিহ্যবাহী গয়নাগুলো। এ ধরনের গয়নায় কিছুটা জমিদারি ও মোগল আমলের নকশার প্রাধান্য থাকে। ৯ ধরনের পাথরের ব্যবহারে নবরত্ন হার, প্রাচীন সীতাহার, টেম্পল নকশার হারও রয়েছে। ঝুমকোতে ময়ূর, পদ্ম, গোলাপ ইত্যাদি নকশা ঝুলে থাকবে। হাতের বালার মধ্যে গোলাপ কাঁটা বালা বা অনন্ত বালা, কিছু হাঁসের মুখের মতো, ফুলের নকশাই এখন ফ্যাশন। বর্তমানে ক্রেতাদের কাছে সাবেকি নকশার গয়নাগুলোর বেশ কদর। এক ক্রেতা বলেন, সামনে পূজা ও বিয়ের মৌসুম আসছে, তাই আগেই গয়না বানাতে আসা। বাজারে তো বিভিন্ন ধরনের নকশা আছে। কিন্তু পুরোনো দিনের নকশায় যেন জড়িয়ে থাকে আবেগ আর ভালোবাসা। এ কারণেই সেগুলো পছন্দ। 

কোথায় পাবেন

জড়োয়া হাউসের বিভিন্ন শাখা, যমুনা ফিউচার পার্ক, বায়তুল মোকাররম মার্কেট, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি, গুলশান পিংক সিটির বিভিন্ন স্বর্ণের দোকানে নানা নকশার স্বর্ণের গয়না কিনতে কিংবা ফরমাশ দিয়েও বানিয়েও নিতে পারেন। বর্তমানে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি ৫৬ হাজার ৮৬২ টাকা, ২১ ক্যারেট ৫৪ হাজার ৫২৯ টাকা ও ১৮ ক্যারেট সোনা প্রতি ভরি ৪৯ হাজার ৫১৪ টাকা।