এই সময়ে এসি

আবহাওয়ায় এখনো গরম। তাই এসি ব্যবহার করতে হচ্ছে। ছবি: অধুনা
আবহাওয়ায় এখনো গরম। তাই এসি ব্যবহার করতে হচ্ছে। ছবি: অধুনা

শরতেও গরম জানান দিচ্ছে, আমি এখনো আছি। গরমের শেষ সময় এসেও অনেকেই অতিষ্ঠ। ফ্যানের বাতাসে কাজ হচ্ছে না। তাই এই সময়েও দরকার এয়ার কন্ডিশনার (এসি)। বাজারে রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা ব্র্যান্ডের এসি। ব্র্যান্ডভেদে রয়েছে দামের পার্থক্য। ভিন্নতা রয়েছে ওয়ারেন্টির ক্ষেত্রেও। আবার কোনো কোনো ব্র্যান্ডের এয়ার কন্ডিশনারে আছে বিশেষ মূল্যছাড়।

ওয়ালটন
সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের এয়ার কন্ডিশনার দিয়ে দেশের বাজারে শীর্ষস্থান দখল করেছে ওয়ালটন। ওয়ালটন এসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. তানভীর রহমান বলেন, এ বছর দেশের বাজারে যে পরিমাণ এসি বিক্রির টার্গেট ছিল, আগস্ট পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭৫ শতাংশ পূরণ হয়েছে। ২০১৮ সালের তুলনায় চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ১২২ শতাংশ বেশি এসি বিক্রি হয়েছে। বাজারে ২২ শতাংশ অংশীদারিত্ব নিয়ে দেশের এসির বাজারে এখন শীর্ষে ওয়ালটন। পাশাপাশি এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটন এসি।

ওয়ালটনের ইনভার্টার এসির কম্প্রেসরে ১০ বছরের গ্যারান্টি, ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি সুবিধা, এক্সচেঞ্জ অফারে যেকোনো ব্র্যান্ডের এসি বদলে ওয়ালটনের নতুন এসি কেনার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বিনা মূল্যে ইনস্টলেশন এবং ডিজিটাল প্রচারণার আওতায় এক বছরের বিদ্যুৎ বিল ফ্রি অথবা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার সুযোগ প্রদান।

বর্তমানে বাজারে ওয়ালটনের রয়েছে ভেনচুরি, রিভারাইন, রিভারাইন প্রো এবং ক্রিস্টালাইন সিরিজের এক, দেড় এবং দুই টনের বিভিন্ন মডেলের এসি। ওয়ালটনের এক টনের এসির দাম ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা। দেড় টনের দাম ৪৫ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ৬৭ হাজার টাকার মধ্যে। আর দুই টনের এসির দাম পড়বে ৫৬ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ৭৬ হাজার ৯০০ টাকা।

ওয়ালটনের এসির মধ্যে রয়েছে ব্যাপক বিদ্যুৎসাশ্রয়ী আইওটি-বেজড স্মার্ট ইনভার্টার, টুইন ফোল্ড ইনভার্টার, ফিক্সড স্পিড আয়োনাইজার। ইনভার্টার প্রযুক্তির ওয়ালটন এসি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। আয়োনাইজার প্রযুক্তি রুমের বাতাস রাখে ধুলা-ময়লা ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত।

ওয়ালটন এসিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্বস্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর৪১০এ রেফ্রিজারেন্ট। রয়েছে টার্বো কুলিং মোড, যা ঘরের তাপমাত্রা দ্রুত কমিয়ে ঘরকে ঠান্ডা করে। ‘ভয়েস কন্ট্রোল’ বা ‘অ্যামাজন ইকো’র মাধ্যমে রিমোট কন্ট্রোল ছাড়াই ওয়ালটন স্মার্ট এসির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা বাড়ানো, কমানো, চালু বা বন্ধ করা যায়। অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল ডেটাবেইস তৈরি করছে ওয়ালটন। এ জন্য তারা চালাচ্ছে ডিজিটাল ক্যাম্পেইন। এর আওতায় যেকোনো মডেলের এসি কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই ক্রেতারা পেতে পারেন ১ লাখ টাকা। আছে এক বছরের বিদ্যুৎ বিল ফ্রি পাওয়ার সুযোগ, নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। এ ছাড়া এক্সচেঞ্জ অফারে যেকোনো ব্র্যান্ডের পুরোনো এসি দিয়ে ওয়ালটনের নতুন এসি কেনার সুযোগ। পাশাপাশি অনলাইনের ই-প্লাজা থেকে এয়ার কন্ডিশনার কেনায় ১০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে। এ সুযোগ থাকছে সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে। অনলাইন থেকে কেনা ওয়ালটন এসিতে রয়েছে ফ্রি ইনস্টলেশন সুবিধা।

স্যামসাং

১০ বছরের কম্প্রেসর ওয়ারেন্টি নিয়ে ইনভার্টার এসি বাজারে এনেছে স্যামসাং। ৬৮ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করবে এই এসিগুলো। বিশেষ মূল্যছাড়ও রয়েছে তাদের শোরুম ও অনলাইন শপে। মান ও পরিমাণের ওপর স্যামসাংয়ের এসির দাম নির্ভর করে।

এলজি

বাজারে সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ইনভার্টার এসি নিয়ে এসেছে এলজি। ইনভার্টার এসিগুলো মূলত বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হয়ে থাকে। এলজি ডুয়েল ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎসাশ্রয়ী। এ ছাড়া তাদের এই এসিগুলোর বিশেষ সুবিধা হিসেবে রয়েছে ওয়াই-ফাই ও মশারোধক ব্যবস্থা।

এলজির ইনভার্টার
এসিগুলোর কম্প্রেসরের ওয়ারেন্টি ১০ বছর। সঙ্গে রয়েছে এক বছরের পার্টস ও সার্ভিস ওয়ারেন্টি। ক্রেতাদের সুবিধার্থে কিস্তিতে কেনার সুবিধাও দিচ্ছে এলজি।

সিঙ্গার

দেশের বাজারে সিঙ্গারের রয়েছে তিন ধরনের এসি—স্ট্যান্ডার্ড, ইনভার্টার ও সেমি কমার্শিয়াল সিরিজ। স্ট্যান্ডার্ডে রয়েছে এক টন, দেড় টন ও দুই টনের এসি, যেগুলো কেনা যাবে ৩৯ হাজার ৯৯০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬৯ হাজার ৯৯০ টাকা। অন্যদিকে ইনভার্টার সিরিজে রয়েছে ৩টি মডেলের এক টন, দেড় টন ও দুই টনের এসি, যেগুলো কেনা যাবে ৪৩ হাজার ৯০৩ টাকা থেকে ৭৮ হাজার ২৫১ টাকা। ক্রেতাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে সিঙ্গার এসিতে থাকছে তিন বছরের ওয়ারেন্টি ও ফ্রি ইনস্টলেশন সুবিধা।

ট্রান্সটেক

ট্রান্সকম ডিজিটালে ট্রান্সটেক ব্র্যান্ডের এসি পাওয়া যাচ্ছে। ট্রান্সটেক ৪২ হাজার ২০০ টাকার এক লিটারের এসি ৩ হাজার ৩৭৬ টাকা মূল্যছাড়ে বর্তমানে ৩৮ হাজার ৮২৪ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া দেড় ও দুই লিটারের এসির দাম যথাক্রমে ৭১ হাজার ৫০০ ও ৫৫ হাজার টাকা। এই দুটো এসি বর্তমানে ১০ শতাংশ মূল্যছাড়ে পাওয়া যাচ্ছে। ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস কারওয়ার বাজার শাখার বিক্রয় ব্যবস্থাপক মো. মনির হোসেন জানান, ২৭টি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ট্রান্সটেক এসি কেনার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ৬ থেকে ৩৬ মাসের কিস্তিতে কেনার সুযোগ রয়েছে। ৬ মাসের কিস্তির ক্ষেত্রে কোনো ইন্টারেস্ট দিতে হবে না বলে জানান তিনি।

ট্রান্সটেক ছাড়াও ওয়ার্লপুল, প্যানাসনিক, হিটাচি ব্র্যান্ডের এসি পাওয়া যায় ট্রান্সকম ডিজিটালে।

ভিশন

ভিশনসহ বাজারের বেশির ভাগ এসিতে কিস্তি, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডে কেনার এবং ফ্রি হোম ডেলিভারির সুবিধা রয়েছে। ভিশনের এসিতে কম্প্রেসরের তিন বছরে ওয়ারেন্টি এবং সারা জীবন ফ্রি সার্ভিস সুবিধা পাবেন ক্রেতারা। ভিশনের এসিগুলোর দাম ৩৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৬২ হাজার টাকার মধ্যে। দেশের বাজারে স্যামসাংয়ের বেশ কয়েকটি মডেলের এসি রয়েছে। এই এসিগুলোর দাম ৫৬ হাজার ৯০০ থেকে ১ লাখ ৫ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে। মডেল অনুযায়ী এসিগুলোতে তিন হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায়।

পাওয়া যাবে কোথায়

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম মার্কেট, গুলশান, ধানমন্ডি, বসুন্ধরা, বনানী, রামপুরা, কাকরাইল, পুরান ঢাকা, শ্যামলী, মিরপুর, উত্তরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমে এয়ার কন্ডিশনার পাওয়া যায়।