বিয়ে নিয়েই আয়োজন

বেনারসি শাড়িতে কনের সাজ। ছবি: খালেদ সরকার
বেনারসি শাড়িতে কনের সাজ। ছবি: খালেদ সরকার

সারা বছরই বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। তবে শীতকালে যেন বিয়ের উৎসব লেগে যায়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি—এই কয়েক মাস বিয়ের সানাই বাজবে বেশি। বিয়ের সাজ, পোশাক, মঞ্চ সাজানো—সবকিছুতে সেরা কাজটি দেখিয়ে চলেছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এ বছর হয়তো এগিয়ে আসবে নতুন কেউ। হয়তো পুরোনোরাই দাপটের সঙ্গে চলবে। বিয়ের নানা কাজে ভালো করছে যারা, তাদের নিয়েই হয়ে গেল জমকালো এক অনুষ্ঠান। ৫ অক্টোবর লা মেরিডিয়ান হোটেলের স্কাইবল কক্ষে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে বেস্ট ইন দ্য ওয়েডিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাওয়ার্ডস ২০১৯। এ উপলক্ষে এই শিল্পে সেরা কাজ করছে, এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিচারকদের দ্বারা নির্বাচন করে পুরস্কার এবং সম্মাননা দেয় লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন আইস টুডে এবং গয়নার প্রতিষ্ঠান জড়োয়া হাউস।

শো স্টপার হিসেবে মঞ্চ আলো করেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া
শো স্টপার হিসেবে মঞ্চ আলো করেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া

এই অনুষ্ঠানে প্রধান দুই বিভাগে বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান করা হয়। আইস টুডে বিশেষ অ্যাওয়ার্ড বিভাগে ছিল রূপচর্চাশিল্পে নতুন ধারা সৃষ্টিকারী উদ্যোক্তা, দশক–সেরা বিয়ের রূপসজ্জার প্রতিষ্ঠান, উদীয়মান রূপচর্চা প্রতিষ্ঠান, চুল সাজিয়ে সবচেয়ে সফল, অলংকারশিল্পে কিংবদন্তি, কনের পোশাক সাজানোয় আজীবন সম্মাননা, কনের সেরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক, পুরুষদের পোশাকশিল্পে নতুন ধারা সৃষ্টিকারী এবং বিয়ের ছবিশিল্পে বিশেষ অবদান। বিশেষ সম্মাননা ছাড়াও বিয়ের সেরা প্রসাধনশিল্পী, কনের রূপসজ্জায় সেরা সৌন্দর্যচর্চা কেন্দ্র, বিয়ে অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও সাজসজ্জা, বিয়ের সেরা আলোকচিত্রী, সেরা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এবং বছরের সেরা ফিল্ম নির্মাণকারী (সিনেমাটোগ্রাফি) বিভাগে পুরস্কার প্রদান করা হয়।


আইস টুডের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক তৌহিদুর রশিদ বলেন, আইস টুডের ১৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ওয়েডিং ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁরা উদ্যোক্তা হিসেবে আছেন এবং যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে অবদান রেখে যাচ্ছেন, তাঁদের সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। বিয়ের পোশাক ছাড়াও দেশীয়, বোহিমিয়ান ধাঁচের পোশাক তুলে ধরা হয় ফ্যাশন শোতে। অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উপপ্রধান জোয়ান ওয়েঙ্গার।

বিশেষ সম্মাননা বিভাগে রূপচর্চাশিল্পে নতুন ধারা সৃষ্টিকারী উদ্যোক্তা হিসেবে পারসোনা, দশক–সেরা হিসেবে ফারজানা শাকিল মেকওভার স্যালন, চুল সাজানোর জন্য বান থাই, উদীয়মান রূপচর্চা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অরা বিউটি লাউঞ্জ, অলংকারশিল্পে জড়োয়া হাউসের প্রধান বাদল রায়, কনের পোশাক সাজানোয় আজীবন সম্মাননা পান রিনা লতিফ, কনের সেরা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে বেনারসি কুঠি, পুরুষদের পোশাকশিল্পে নতুন ধারা সৃষ্টিকারী হিসেবে মেহরুজ মুনির এবং বিয়ের ছবিশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য প্রীত রেজাকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

রূপ বিশেষজ্ঞ ফারজানা শাকিল ও কানিজ আলমাস খান পেলেন বিশেষ সম্মাননা
রূপ বিশেষজ্ঞ ফারজানা শাকিল ও কানিজ আলমাস খান পেলেন বিশেষ সম্মাননা

এ ছাড়া জুরি অ্যাওয়ার্ড বিভাগে বিয়ের সেরা প্রসাধনশিল্পী হিসেবে আনিকা বুশরা, কনের রূপসজ্জায় সেরা স্যালন বিভাগে গালা মেকওভার স্টুডিও অ্যান্ড স্যালনের নাভিন আহমেদ, বিয়ে অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও সাজসজ্জা বিভাগে এনচ্যান্ডেট ইভেন্টস অ্যান্ড প্রিন্টস ও ইভেন্ট টাচ ইন্টারন্যাশনাল, বিয়ের সেরা আলোকচিত্রী আর্টল্যান্ড, সেরা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চেকমেট ইভেন্টস এবং বছরের সেরা ফিল্ম নির্মাণকারী বিভাগে ওয়েডিং ডায়েরি পুরস্কার পায়।

গয়নায় ছিল নানান নকশা
গয়নায় ছিল নানান নকশা

রূপচর্চা, বিয়ের পরিকল্পনা ও সাজসজ্জা এবং বিয়ের ছবিবিষয়ক মনোনয়নে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে বিজয়ীদের নির্বাচন করেন বিচারকেরা। বিচারক ছিলেন রূপবিশেষজ্ঞ ফারজানা শাকিল, কাজী আইসিটি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জারা মাহবুব, ঢাকা ট্রিবিউন–এর সম্পাদক জাফর সোবহান, নিউ এজ–এর ফিচার সম্পাদক কনকা করিম, ফটোসাংবাদিক দীন মোহাম্মদ শিবলি, আইস মিডিয়া লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক নওশিন খায়ের ও আইস টুডে ম্যাগাজিনের ফ্যাশন সম্পাদক গৌতম সাহা।

ফ্যাশন শোর প্রথম কিউতেই জড়োয়া হাউসের বিয়ের গয়নায় মঞ্চে আসেন মডেলেরা। ছিল হিরা, সোনা, পান্না, রুবিসহ নানা পাথরের ব্যবহার। জড়োয়া হার, চিক, সিতা হার সব নকশাই তুলে ধরা হয়েছিল। জড়োয়া হাউসের হিরার গয়না ও গৌতম সাহার ভেলভেটের কালো শাড়িতে র‌্যাম্প মাতান শো স্টপার নুসরাত ফারিয়া। রোজ বাই নিঝুর করা জমকালো শাড়িতে মসলিন, কাতান কাপড়ের ব্যবহার দেখা গেছে। এ ছাড়া বিয়ের শাড়িতে ছিল লাল, সবুজ, বেগুনি, গোলাপি, মেরুন রংগুলো। ওটুর আয়োজনে ছিল বিয়ের দিনে বরের শেরওয়ানি ও বউভাত অনুষ্ঠানের জন্য স্যুট। শেরওয়ানিতে সবুজ, নীল, কালো, সাদা, ফিরোজা ছাড়াও কিছু গাঢ় রং প্রাধান্য পায়। স্যুটে লাল, সাদা-কালো ইত্যাদি রঙের ব্যবহার হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বিয়ের সময় কী ধরনের পোশাক পরতে পারেন, সেটার একঝলক দেখা যায় ফ্যাশন শোতে। অরণ্যর শাড়ি, কামিজ ও পাঞ্জাবিতে অভিজাত সাজে মডেলেরা মঞ্চে আসেন। এ ছাড়া বিয়ের আগের ও পরের নানা অনুষ্ঠানের জন্য স্প্ল্যাশের কিছুটা পশ্চিমা ও বোহেমিয়ান পোশাকগুলোতে ফুটে উঠেছিল ভিন্নতা।

কনের শাড়ি পরার ধরনে ছিল ভিন্নতা
কনের শাড়ি পরার ধরনে ছিল ভিন্নতা

অনুষ্ঠানে জড়োয়া হাউসের অলংকার, ওটু, রোজ বাই নিঝু ও স্প্ল্যাশের পোশাক পরে মডেলরা ফ্যাশন শোতে অংশ নেন। কোরিওগ্রাফার হিসেবে ছিলেন আজরা মাহামুদ। জড়োয়া হাউসের অলংকার পরে শো স্টপার হিসেবে র‌্যাম্পে হাঁটেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া। ফ্যাশন শোতে মডেলদের বধূ সাজে সাজিয়ে তোলে অরা বিউটি লাউঞ্জ।

শেরওয়ানিতে আভিজাত্য, ছেলেদের স্যুটে ছিল নানা রং
শেরওয়ানিতে আভিজাত্য, ছেলেদের স্যুটে ছিল নানা রং