চোখের কর্নিয়ায় আঘাত লাগলে কী করবেন

চোখের কর্নিয়ায় যেকোনো কারণেই আঘাত লাগতে পারে। নখের আঁচড়, নখ কাটার সময় তা ছিটকে চোখে লাগতে পারে, কলম বা পেনসিলের খোঁচাও লাগতে পারে। ঝালাইয়ের কাজের সময় কোনো ধাতবকণা ছিটকে চোখে লেগে কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চোখ প্রচণ্ডভাবে চুলকানোর জন্যও এ রকম হতে পারে। চোখে অ্যাসিড বা ক্ষার (চুন) কিংবা অন্য কোনো রাসায়নিক পড়লেও কর্নিয়ার ক্ষতি হতে পারে। কৃষিকাজের সময় ধান, গমজাতীয় ফসলের ধারালো অংশের আঘাত লাগতে পারে চোখে।

কীভাবে বুঝবেন

কর্নিয়ায় আঘাত লাগলে চোখে ব্যথা, আলোর দিকে তাকাতে না পারা, পানি ঝরা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জ্বালাপোড়া এবং ভেতরে কিছু আছে বলে অনুভূতি হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। চোখ বুজতে বা পলক ফেলতে গেলে ব্যথা বাড়ে। কর্নিয়ায় আঘাত মারাত্মক হলে রোগী চোখ বুজতেই পারবেন না।

কী করবেন

রাসায়নিকের কারণে কর্নিয়ায় আঘাত লাগলে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলতে হবে। তারপর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। রাসায়নিক ছাড়া অন্য কোনো পদার্থ চোখে ঢুকলে দু-একবার পানি দিয়ে ধুয়ে দেখতে হবে পদার্থটি বেরিয়ে আসে কি না। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবশ্যই চক্ষুবিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক মলম দিয়ে প্যাড ও ব্যান্ডেজের সাহায্যে চোখকে বিশ্রাম দিতে হবে। চোখে আঘাত লাগলে নিজে থেকে কোনো ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। চিকিৎসক পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। দ্রুত ক্ষতের চিকিৎসা না করালে তা আরও গভীর হয়ে চোখে ছিদ্র (পারফোরেশন) হতে পারে, দৃষ্টিশক্তি হারাতে হতে পারে।ÿক্ষতচিহ্নের কারণে কর্নিয়ায় একধরনের অস্বচ্ছতা বা দাগ সৃষ্টি হয়, যার জন্য দৃষ্টি বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। এরও চিকিৎসা আছে। প্রয়োজন অনুযায়ী অস্ত্রোপচারেরও সুযোগ আছে। আর একেবারে শেষ চিকিৎসা হলো কর্নিয়া প্রতিস্থাপন।

সতর্কতা

পেশাগত প্রয়োজনে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে হলে কাজের সময় অবশ্যই নিরাপত্তামূলক চশমা পরে নিতে হবে। অনেক ধুলাবালি বা ক্ষুদ্র কণা ওড়ে (যেমন নির্মাণকাজ) এমন জায়গায় রোদচশমা পরতে হবে।

অধ্যাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ, চক্ষুবিশেষজ্ঞ আল রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা।