জমিদার ও ইংরেজদের খাবার তালিকায় ছিল মতলবের ক্ষীর

বিদেশেও রয়েছে মতলবের ক্ষীরের চাহিদা। ছবি: প্রথম আলো
বিদেশেও রয়েছে মতলবের ক্ষীরের চাহিদা। ছবি: প্রথম আলো

‘মতলবের ক্ষীর/বগুড়ার দই/না খেয়ে/ক্যামনে রই।’
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার সুস্বাদু ক্ষীর সম্পর্কে এই প্রবচন স্থানীয় ভোজনরসিক লোকজনের মুখে মুখে। ব্রিটিশ আমল থেকে অদ্যাবধি মতলবের ক্ষীর দেশ ও বিদেশে প্রায় সমানভাবে সমাদৃত। ব্রিটিশ আমলে জমিদার ও ইংরেজদের খাবারের তালিকায় এ ক্ষীর ছিল।

স্বাদ, ঘ্রাণ, রং, ঐতিহ্য ও খাদ্যগুণের কারণে এ ক্ষীর স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছে আজও জনপ্রিয়। স্থানীয় লোকজনের চাহিদা মিটিয়ে এ ক্ষীর বিক্রি হচ্ছে বিদেশেও। সারা বছর প্রবাসী বাঙালিরা ফরমাশ করে (অর্ডার) মতলব থেকে এ খাদ্য কিনে নিচ্ছেন। সম্প্রতি জেলার ব্র্যান্ডিং তথা ঐতিহ্যের তালিকায় এ খাদ্যকে তালিকাভুক্ত করেছে জেলা প্রশাসন।

উপজেলা সদর বাজারের ঘোষপট্টি এলাকার ‘লক্ষ্মী–নারায়ণ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’–এর মালিক সজল ঘোষ জানান, ব্রিটিশ আমলে উপজেলার ঘোষপাড়া এলাকার প্রয়াত শশী ঘোষ, প্রভাত ঘোষ, বেণী ঘোষ ও গান্ধী ঘোষ এ ক্ষীর তৈরি করতেন। তাঁরা মারা যাওয়ার পর তাঁদের বংশধরেরা এ ব্যবসা চালু রেখেছেন। প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ মণ ক্ষীর বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ক্ষীর বানাতে খরচ পড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়।

চাঁদপুরের সব উপজেলা ও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন তো বটেই, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও আমেরিকাপ্রবাসী অনেক বাংলাদেশি এ ক্ষীর অর্ডার দিয়ে কিনছেন।

লাভজনক হওয়ায় এলাকার মানুষ ক্ষীরের ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন।