হাই হিলের জুতায় স্বাস্থ্যঝুঁকি

অনেক মেয়েই হাই হিলের জুতা পরতে পছন্দ করেন। তবে এমন জুতার অধিকাংশই আরামদায়ক নয়, দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আমরা যখন হাই হিলের জুতা পরি, তখন মেরুদণ্ডের আকৃতির স্বাভাবিক বিন্যাস বজায় থাকে না। শরীরের অধিকাংশ ওজন তখন পায়ের গোড়ালি দিয়ে না গিয়ে পায়ের পাতার সামনের দিকে স্থানান্তরিত হয়। ফলে পায়ের পাতার সামনের অংশ এবং আঙুলে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। হাই হিলের জুতা পরলে শরীর অনেকটা সামনের দিকে ঝুঁকে যায়। বিশেষ করে কোমর ও হাঁটু বেশি ঝুঁকে যায়। এ জন্য কোমর ব্যথাসহ অন্যান্য শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে
পায়ের গোড়ালি ব্যথা, পা মচকানো, পায়ের আঙুলে ব্যথা, কাফ মাসল শক্ত হওয়া, পায়ের রগে টান লাগা, মাংসপেশি বা রগ শক্ত হয়ে যাওয়া, হাঁটু ও কোমর ব্যথা, চলাফেরার ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে গিয়ে মেরুদণ্ডের ওপর অতিরিক্ত চাপ থেকে ঘাড় ব্যথাও হতে পারে।

করণীয়
■ দীর্ঘ সময়ের জন্য খুব উঁচু হিলের জুতা পরার অভ্যাস ত্যাগ করুন। নরম স্লিপার বা আরামদায়ক জুতা পরলে ভালো। যদি পরতেই হয় তবে প্রয়োজনে হিল কুশন বা কৃত্রিম আর্চসমৃদ্ধ জুতা পরতে পারেন। অনুষ্ঠান বা কোনো উৎসব ছাড়া বেশি হাঁটতে হয় এমন স্থানে এ ধরনের জুতা না পরাই ভালো।
■ উঁচু হিল ব্যবহারের পর পায়ে যদি ব্যথা থাকে, তবে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট অথবা যে জায়গায় ব্যথা হবে সেখানে ১০-১৫ মিনিট নরম কাপড়ে বরফ রেখে ম্যাসাজ করুন।
কিছু স্ট্রেচিং ও স্ট্রেনদেনিং ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনার হাঁটু ও পায়ের গোড়ালির মাংসপেশিকে শক্তিশালী করুন। যেমন:


বিছানায় সোজা হয়ে বসে একটি তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতা সামনের দিকে টানুন এবং ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এটি ১০-১৫ বার করে দিনে ২-৩ বেলা করুন।


একটি দেয়ালের সামনে বৃদ্ধাঙ্গুলের ওপর ভর করে দাঁড়ান এবং ২০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এটি ১০-১৫ বার করে প্রতিদিন ২-৩ বেলা করুন।
এরপরও যদি ব্যথা থাকে তবে আপনি একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন।

আগামীকাল পড়ুন: স্ট্রোক নিয়ে কিছু কথা

প্রশ্ন-উত্তর
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রয়েছে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেক সময় ঘরে বসে কিংবা জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব। আপনার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান। উত্তর দেবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বয়স লিখতে ভুলবেন না।
ই–মেইলে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান: [email protected]

ফিজিওথেরাপি ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, আদ্-দ্বীন ব্যারিস্টার রফিকুল হক হাসপাতাল, ঢাকা।