লন্ডনের যে দশটি জায়গায় ভ্রমণ করবেন

পৃথিবীর বৈচিত্র্যময় শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডন শহর। এ শহরে পুরোনো অভিজাত স্থাপনা যেমন নজর কাড়ে, তেমনি চোখ ধাঁধিয়ে দেয় আধুনিকতাও। বিশ্বের বিভিন্ন জাতি–গোষ্ঠীর মানুষের বাস এখানে। তাই স্বাভাবিকভাবে এখানে আছে বৈচিত্র্যময় খাবারের বিশাল সমাহার। রাতের লন্ডন ভিন্ন এক সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে হাজির হয়। আলোর ঝলকানি আর বিবিধ আয়োজন এর রূপ যেন পাল্টে দেয়।

লন্ডন শহরের অলিগলি ভালো করে দেখতে প্রয়োজন দীর্ঘ সময়। কিন্তু প্রতিবার ভ্রমণের সময় যে আপনি অনেক বেশি সময় পাবেন, তা বলা যায় না। শেষবার গিয়ে থেকেছি মোটে ১০ দিন। প্রথমবার এই বৈচিত্র্যময় শহর সেভাবে দেখার সুযোগ না হলেও এবার বেশ ঘোরা হয়েছে। রকমারি খাবার চেখে দেখেছি। এক স্থান থেকে আরেক স্থান কতটা বৈচিত্র্যময়, এখানে না ঘুরলে বোঝা দায়! যাই দেখি বিস্ময়ের ঘোর আর কাটে না! তবে সব মিলিয়ে ১০টি জায়গার কথা তুলে ধরব।

বাকিংহাম প্যালেসের একাংশ। ছবি: লেখক
বাকিংহাম প্যালেসের একাংশ। ছবি: লেখক

বাকিংহাম প্যালেস
লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেস পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাজপ্রাসাদগুলোর অন্যতম এটি। না গেলে চলে? পাতাল ট্রেন থেকে ভিক্টোরিয়া মেট্রো স্টেশনে নেমে সোজা রাস্তা। দূর থেকে দেখা যায় এই বড় প্রাসাদটি। কাছে গেলেই চোখে পড়বে মানুষের ভিড়, ছবি তোলার হিড়িক। বিশাল এই প্রাসাদের সদর দরজা লাগানো থাকে। বাইরে থেকেই যতটা দেখে নেওয়া যায়। ভেতরে বড় কালো টুপি আর লাল পোশাক পরা প্রহরীদের সশস্ত্র পাহারা। প্রাসাদের সামনে রয়েছে বিশাল বাগান। বাগানের মধ্যে মানুষ ও সিংহের ভাস্কর্য। শ্বেতপাথরের আরেক নজরকাড়া ভাস্কর্যও দেখা যাবে এখানে। এ ছাড়া এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি স্থাপনা। সব মিলিয়ে বাকিংহাম প্যালেস আপনাকে মুগ্ধ করবে।

বাকিংহাম প্রাসাদটি ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিভিন্ন রাজকীয় অনুষ্ঠান এবং অবসরকালীন বিনোদনের জন্য তৈরি হয়েছিল। প্রথমে প্রাসাদটির নাম ছিল বাকিংহাম হাউস। প্রাসাদটি ১৮৩৭ সালে রানি ভিক্টোরিয়ার সিংহাসন আরোহণের সময় ব্রিটিশ রাজপরিবারের রাজকীয় কাজে ব্যবহৃত হয়েছিল।

হাইড পার্ক। ছবি: লেখক
হাইড পার্ক। ছবি: লেখক

হাইড পার্ক
বাকিংহাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে আসতে আসতে চোখে পড়বে বিশাল এক পার্ক। এটি বেশ পরিচিত। লন্ডনে এলে এখানে আসতেই হবে। হাইড পার্ক লন্ডনের বৃহত্তম রয়্যাল পার্ক। চারদিকে সারি সারি বিশাল আকারের গাছ, বড় মাঠ, পার্কে বসার স্থান সব মিলিয়ে একটি দারুণ জায়গা। মানুষ এখানে এসে শুধু ঘুরে বেড়ায় না। কেউ সাইকেল চালায়, কেউ দৌড়ায়, কেউবা পার্কের বেঞ্চে বসে মারে শুধু আড্ডা। আমি একবার গিয়েছিলাম বসন্তকালে। সে সময় চারদিক ছিল সবুজে ঘেরা। এবার হেমন্তে গিয়ে দেখলাম প্রায় সব গাছের পাতা হলদে হয়ে গেছে। ঝরতে শুরু করেছে ম্যাপল পাতা। সেই পাতার স্তূপের নিচে খাবার খুঁজছে বড় বড় কাঠবিড়ালি। তাদের যেন ভয়ডর নেই। পার্কের ভেতর বড় একটি লেক। লেকের পাড়ে বেশ কয়েক প্রজাতির পাখি। বিশেষ করে হাঁস আর কবুতর দেখা গেল অনেক। তবে কাছে যেতেই ফুরৎ করে উড়ে গিয়ে লেকের পানিতে বসল। এখানে হাঁসের সঙ্গে সঙ্গে লেকের পানিতে ভেসে বেড়ায় ফ্লেমিগো।

লন্ডন আইয়ের শীর্ষবিন্দুতে উঠলে পুরো লন্ডন শহর দেখা যায়। ছবি: লেখক
লন্ডন আইয়ের শীর্ষবিন্দুতে উঠলে পুরো লন্ডন শহর দেখা যায়। ছবি: লেখক

লন্ডন আই
লন্ডনের সিগনেচার পর্যটন স্থাপনার মধ্যে অন্যতম একটি লন্ডন আই। লন্ডনের যেকোনো দিক থেকে দেখা যায় এটি। পর্যটকদের কাছে এর আবেদন কতটুকু, তা দেখতে হলে যেতে হবে আশপাশে। টেমস নদীর এক পাশে লন্ডন আই। লাইন ধরে উঠতে হয় গোলাকার এই রাইডটিতে। বেশ উঁচু চাকার মতো গোলাকার লন্ডন আইয়ের শীর্ষবিন্দুতে উঠলে ৩৬০ ডিগ্রি প্যানারোমিক ভিউতে দেখা যায় পুরো লন্ডন শহর। মোট ৩২টি ক্যাপসুলে প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার পর্যটক এখানে উঠে পাখির দৃষ্টিতে দেখেন পুরো শহরটি।

লন্ডন আইয়ের একেকটি ক্যাপসুলের ওজন ১০ টনের মতো। এ ৩২টি ক্যাপসুল বৃহত্তর লন্ডনের ৩২টি উপশহরের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতিটি ক্যাপসুল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং দর্শনার্থীদের বসার জন্য বেঞ্চ দেওয়া আছে। একটি ক্যাপসুলে ২৫ জন পর্যন্ত দর্শনার্থী বসতে পারেন।

রাতের লন্ডন আই ও এর চারপাশের এলাকা হরেকরকম আলোতে ভরে ওঠে। লাল আভা ছড়িয়ে পড়ে লন্ডন আইয়ের চারপাশে। নিচে টেমস নদীর আশপাশের ল্যাম্পপোস্টগুলো জ্বলে উঠলে রাজকীয় লন্ডনের চেহারাই বদলে যায়। লন্ডন আইয়ের পাশে রয়েছে ছোটবড় খাবারের দোকান। তবে দাম কিছুটা বেশি।

বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক হয় ইউকে পার্লামেন্টে। ছবি: লেখক
বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক হয় ইউকে পার্লামেন্টে। ছবি: লেখক

ইউকে পার্লামেন্ট ভবন
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবনটি লন্ডন আই থেকে হাঁটাপথের দূরত্ব। উঁচু ভবনটি সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অনুমতি নিয়ে পার্লামেন্ট ভবনের আংশিক ভেতরে প্রবেশে বাধা নেই। এর ভেতরে রয়েছে বিশাল এক লন। ভেতরের এদিক–সেদিক রয়েছে বেশ কিছু ভাস্কর্য। তবে সংসদ অধিবেশনের সময় বেশ কড়াকড়ি থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক হয় এই পার্লামেন্টে। এই ভবনে কখনো কখনো বাংলাদেশ নিয়েও বিতর্ক হয়— এটি ভাবতে ভাবতে দেখা হলো একসময়কার পৃথিবী কাঁপানো সাম্রাজ্যের বর্তমান পার্লামেন্ট ভবন। ভেতরে থাকা হাউস অব কমনসেও প্রবেশ করা যায়।

বিগ বেন
লন্ডনের ল্যান্ডমার্ক আইকন বিগ বেন। পার্লামেন্ট ভবনের পাশেই অবস্থিত। বিগ বেন লন্ডনের অতিপরিচিত ও জনপ্রিয় স্থাপনা। প্রথমে এটি গ্রেট বেল হিসেবে পরিচিত ছিল। কেউ কেউ মনে করেন যে, এ নামটি নেওয়া হয়েছে স্যার বেঞ্জামিন হলের নাম থেকে। কেননা, তিনি গ্রেট বেলের নির্মাণকাজ তদারক করেছিলেন। আবার ইংরেজ মুষ্টিযোদ্ধা ও হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন বেঞ্জামিন কন্টের নাম থেকে বিগ বেন এসেছে বলেও ধারণা করা হয়ে থাকে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় শব্দ উৎপাদনকারী চতুর্মুখ ঘড়ি। শুধু ঘড়িটির ওজনই পাঁচ টনের বেশি। ঘড়িটির সম্মুখভাগে সংখ্যাগুলো ২ ফুট (৬১০ মিলিমিটার) এবং মিনিটের কাঁটাটি ১ ফুট (৩০৫ মিলিমিটার) লম্বা। প্রায় ১৬ তলা উচ্চতার বিগ বেন টাওয়ারের নির্মাণ শেষ হয় ১৮৫৯ সালে।

টেমস নদী ঘিরে রেখেছে পুরো লন্ডন শহর। ছবি: লেখক
টেমস নদী ঘিরে রেখেছে পুরো লন্ডন শহর। ছবি: লেখক

টেমস নদী
পৃথিবীর বিখ্যাত নদীর তালিকায় আছে লন্ডনের ‘হৃৎপিণ্ড’ টেমস নদী। পুরো লন্ডন ঘিরে আছে টেমস। এর আশপাশেই গড়ে ওঠে লন্ডনের নগরসভ্যতা। এই নদীতে ছোট ছোট জাহাজ ভাসে। এগুলোতে আছে খাবারের দোকান। রিভার ক্রুজ নামের অনেক প্যাকেজ আছে টেমসের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। দল বেঁধে সে প্যাকেজ নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যায় নদীতে। টেমস নদী একবার চক্কর দিলেই দেখা হয়ে যায় পুরো লন্ডন। সন্ধ্যার টেমস সেজে ওঠে অপরূপ সাজে। নদীর নামের উৎপত্তি ঘটেছে টেমস উপত্যকা থেকে। এই উপত্যকাকে কেন্দ্র করেই টেমস প্রবাহিত হয়েছে।

টেমস নদীর ওপর এই ব্রিজ যেন রাজকীয় লন্ডনের আভিজাত্যের আরেক প্রতীক। টাওয়ার ব্রিজ। ছবি: লেখক
টেমস নদীর ওপর এই ব্রিজ যেন রাজকীয় লন্ডনের আভিজাত্যের আরেক প্রতীক। টাওয়ার ব্রিজ। ছবি: লেখক

টাওয়ার ব্রিজ
লন্ডনের আইকন খ্যাত টাওয়ার ব্রিজ না দেখলে লন্ডন ভ্রমণ মাটি—বুজুর্গরা তেমনটাই বলেন! বহুবার সিনেমা আর স্থিরচিত্রে দেখা টাওয়ার ব্রিজ স্বচক্ষে দেখলে একটা আলাদা শিহরণ জাগে মনে। টেমসের ওপর এই ব্রিজ যেন রাজকীয় লন্ডনের আভিজাত্যের আরেক প্রতীক। দিনের একটি সময় খুলে দেওয়া হয় টাওয়ার ব্রিজ। টিকিটের লাইনে ভিড় দেখে আমরা কিছুটা দূর থেকেই এটা দেখে ফেললাম। ব্রিজের রূপ একেক দিক থেকে একেক রকম। বর্তমান সংযোগ সেতুটি পারাপারের জন্য ১৯৭৩ সালে খুলে দেওয়া হয়। এটি মূলত কংক্রিট এবং লোহায় তৈরি একটি বক্স গার্ডার সেতু। আগে এখানে কাঠের তৈরি সেতু ছিল, যেটি লন্ডনের প্রথম রোমান প্রতিষ্ঠাতারা তৈরি করেছিলেন।

এখানকার বড় বড় পোশাকের দোকানে লেখা ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ দেখে গর্বে ভরে যাবে আপনার মন। অক্সফোর্ড স্ট্রিট। ছবি: লেখক
এখানকার বড় বড় পোশাকের দোকানে লেখা ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ দেখে গর্বে ভরে যাবে আপনার মন। অক্সফোর্ড স্ট্রিট। ছবি: লেখক

অক্সফোর্ড স্ট্রিট
লন্ডনের আভিজাত্য অক্সফোর্ড স্ট্রিটে গেলেই বোঝা যায়। উঁচু উঁচু অভিজাত সব ভবন আর স্থাপনা এবং বড় বড় ব্র্যান্ডের দোকান আছে এখানে। পোশাক থেকে শুরু করে খাবারের দোকানসহ সব ধরনের দোকান আছে এখানে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খাবারের দোকানের জন্য এ এলাকার নামডাক অনেক আগে থেকে। অক্সফোর্ড স্ট্রিটে আছে সংবাদমাধ্যম বিবিসির কার্যালয়। সন্ধ্যার অক্সফোর্ড স্ট্রিট এক ভিন্ন জগৎ। কিছুটা সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে অক্সফোর্ড স্ট্রিটের অলিগলি ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা বলে বোঝানো যায় না। দুই-তিন শ বছরের পুরোনো ভবনের নিচের পানশালাগুলো যেন সন্ধ্যার পর গমগম করে। অফিস শেষে মানুষ মধ্যরাত পর্যন্ত আড্ডা মারতে চলে আসে এখানে। এখানকার বড় বড় পোশাকের দোকানে লেখা ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ দেখে গর্বে ভরে যাবে আপনার মন। এত বিচিত্র আয়োজন লন্ডনের অন্য কোনো রাস্তায় আর দেখা যায় না।

ভেনিসের আমেজ পাওয়া গেল এখানে এসে। ছোট ভেনিস। ছবি: লেখক
ভেনিসের আমেজ পাওয়া গেল এখানে এসে। ছোট ভেনিস। ছবি: লেখক

ছোট ভেনিস
লন্ডন যাওয়ার আগে এক বন্ধু ‘ছোট ভেনিস’ এর ছবি দেখিয়ে বলেছিলেন, বলুন তো এটা কোথায়? আমি অনুমান করে বললাম, ভেনিস। তিনি বললেন, ঠিকই বলেছেন এটা ভেনিস, কিন্তু স্মল ভেনিস। আর এটা লন্ডনেই! আমি মনে রেখেছিলাম ছোট ভেনিসের কথা। যেকোনো জায়গা থেকে পাতাল ট্রেনে উঠে ওয়ারউইক স্টেশনে নেমে কিছু দূর এগিয়ে গেলেই পেয়ে যাবেন এই ছোট ভেনিসের দেখা। এখানে লেকের মধ্যে পাবেন বড় বড় সুদৃশ্য নৌকা। আসলে এগুলো নৌকার মতো ছোট ছোট রেস্তোরাঁ। লেকের দুই পাশে গাছ। লেকের পাশে গাছে থোকা থোকা সবুজ আপেল ধরে। ছোট ভেনিসের পাশেই রয়েছে দৃষ্টিনন্দন একটি বড় গির্জা।

এই জাদুঘরে এত আয়োজন, যা আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না! ব্রিটিশ মিউজিয়াম। ছবি: লেখক
এই জাদুঘরে এত আয়োজন, যা আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না! ব্রিটিশ মিউজিয়াম। ছবি: লেখক

ব্রিটিশ জাদুঘর
লন্ডন ঘুরতে যাবেন আর ব্রিটিশ মিউজিয়াম যাবেন না, সে কি হয়! এখানে এক চক্কর দিলেই হবে না, আসতে হবে সময় নিয়ে—এমনই শুনেছি আগে যাঁরা গিয়েছেন তাঁদের কাছে। সকাল সকাল যেতে হয়। কারণ, দর্শনার্থীদের লাইন বেশ বড় সেখানে। এখানে প্রবেশের জন্য কোনো মূল্য দিতে হয় না। তবে চাইলে আপনি জাদুঘর কর্তৃপক্ষকে দান করতে পারেন। কত রকমের আয়োজন এই জাদুঘরে? বলা যায়, এত আয়োজন এখানে যা আপনি চিন্তাও করেননি!

এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাদুঘরগুলোর মধ্যে অন্যতম। মোটামুটি পুরো পৃথিবীর মানুষের সংস্কৃতির প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ নিদর্শন সংরক্ষিত আছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। এখানে এলে আপনি ভুলে যাবেন মিসর এসেছেন না গ্রিস? রোমে, চীন নাকি প্রাচীন ভারতে? আমেরিকা থেকে সংগৃহীত বস্তু ও প্রত্নসামগ্রীও রয়েছে এই জাদুঘরে। হাজার বছরের পুরোনো মিসরীয় রাজাদের মমি এবং অনেক প্রত্ন নিদর্শন রয়েছে এখানে। এক কোণে রাখা আছে দক্ষিণ এশিয়ার নিদর্শন। সেখানে শোভা পাচ্ছে টিপু সুলতানের তলোয়ারসহ আরও কিছু ঐতিহাসিক বস্তু। ব্রিটিশ মিউজিয়ামে স্থান পাওয়া নিদর্শনগুলোর সব যে সঠিক উপায়ে সংগ্রহ করা হয়েছিল, তেমনটা বলেন না জাদুঘর বিশেষজ্ঞরা। এই জাদুঘরে শুধু দেখা নয়, বিভিন্ন সংগ্রহ সম্পর্কে দর্শনার্থীদের জানানোর জন্যও রয়েছে প্রযুক্তির অভিনব ব্যবহার।

এটি স্থাপিত হয় ১৭৫৩ সালে। শুরুতে পদার্থবিজ্ঞানী স্যার হ্যান্স স্লোয়েনের সংগৃহীত জিনিসপত্রের ওপর ভিত্তি করে এই জাদুঘরটি গড়ে ওঠে। স্যার হ্যান্স ৭১ হাজারের বেশি বস্তুসামগ্রী সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন জাদুঘরটিতে। এগুলোর মধ্যে ছিল ৪০ হাজারের বেশি বই, ৭ হাজার পাণ্ডুলিপি, ৩৩৭ প্রজাতির উদ্ভিদ দেহাবশেষ। পরবর্তী সময়ে আরও সমৃদ্ধ হয়েছে ব্রিটিশ মিউজিয়াম এবং বলা চলে এখনো সমৃদ্ধ হয়েই চলেছে জাদুঘরটি।

লন্ডন ভ্রমণে যা করবেন, যা করবেন না
লন্ডন ভ্রমণের জন্য আপনাকে কারও সাহায্য নিতে হবে না। একা একা ঘুরতে পারবেন শুধু গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে। ম্যাপে গন্তব্যের স্থান দিলেই আপনাকে দেখাবে কতটুকু রাস্তা হাঁটতে হবে, কত দূর ট্রেনে যেতে হবে বা কতটুকু জায়গা বাসে যেতে হবে। এমনকি কতক্ষণ পর পর বাস বা ট্রেন আছে তা–ও জানা যাবে গুগল ম্যাপে। লন্ডনের আবহাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এই রোদ নয় তো এই বৃষ্টি! এ জন্য ছাতা রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। এ ছাড়া আপনি কিছু জিজ্ঞেস করলে যে কেউ আপনাকে সহায়তা করবে। ওয়েস্টার কার্ড কিনে তাতে টাকা ভরে রাখুন, নয় তো বাসে–ট্রেনে উঠতে পারবেন না। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু করবেন না।