শীতের অন্দরে অদল-বদল
উত্তরের বাতাস বইতে শুরু করেছে। চারদিকে শীতের আমেজ। শীত এলে প্রকৃতির সঙ্গে বদলে যায় দৈনন্দিন জীবনধারা। টুকটাক বদল আসে অন্দরসাজেও। বাড়ির সাজে কিছু বিষয়ে পরিবর্তন উষ্ণতা নিয়ে আসবে। আলো, ভারী কাপড়ের ব্যবহার কিংবা রং—এগুলোর মাধ্যমেই অন্দরে নিয়ে আসতে পারেন শীতের আমেজ।
অন্দরে উষ্ণ ভাব বজায় রাখার অন্যতম হাতিয়ার হলো রং। হালকা বা ম্লান রঙের বদলে লাল, নীল, হলুদ, কমলার মতো গাঢ় রং ছড়িয়ে দিতে পারেন আপনার ঘরের চার দেয়ালে। গাঢ় এবং উজ্জ্বল রঙে ঘরের প্রতিটি কোণ থাকবে বেশ উষ্ণ ও আরামদায়ক। তবে দেয়াল রং করা সব সময় সম্ভব হয় না। এ জন্য পর্দা, বিছানার চাদর, বালিশের কাভার বা কুশন কাভার—সবকিছু উজ্জ্বল রঙের করে নিতে পারেন। চেয়ার অথবা সোফায় কৃত্রিম পশম দিয়ে তৈরি ছোট-বড় কুশন ব্যবহার করা যেতে পারে। ফ্ল্যানেল বা মোটা উলের তৈরি হালকা ওজনের ছোট কম্বলও ব্যবহার করা যেতে পারে সোফা, ডিভান বা বিছানায়। মখমলের তৈরি কম্বল হলেও মন্দ হবে না—এমনটাই জানালেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের প্রভাষক লতিফা সুলতানা।
মেঝের হিম হিম ঠান্ডা থেকে রক্ষা দেবে কার্পেট বা শতরঞ্জি। ঘরের আসবাবের আকৃতি এবং রং অনুসারে কার্পেট বা শতরঞ্জির ব্যবহার যেন আকর্ষণীয় হয়ে ফুটে ওঠে, সে দিকটা লক্ষ রাখুন। শীতকালে পর্দার আবশ্যকতা না বললেই নয়। শীতকালে পর্দা যেমন বাইরের ঠান্ডা বাতাস ঢুকতে দেয় না, তেমনি ঘরকে গরম রাখতেও সহায়তা করে। তাই শীতের সময় ঘরের উষ্ণতা বজায় রাখতে নির্বাচন করতে হবে ভারী, ঘন বা জমকালো নকশার পর্দা। এ সময় জানালায় কাপড়ের পর্দা ব্যবহার করতে চাইলে ভারী মোটা কাপড়, এমনকি মখমল কাপড়ও ব্যবহার করা যায়। এতে ঘরের সাজে নান্দনিকতার ছোঁয়া যেমন থাকবে, তেমনি আরামদায়ক উষ্ণতাও বজায় থাকবে। ঘরে উষ্ণতা ও মোহনীয় আবহ তৈরি করতে মোমবাতির জুড়ি নেই।
স্পট লাইটে হলদে বাতি দিন। ঘর বেশ উষ্ণ হয়ে উঠবে। এ ছাড়া রুম হিটার ব্যবহার করা যেতে পারে। কাচের ব্যবহারের কারণে ঠান্ডা অনুভূত হয়, তাই সেসব স্থানে পর্দা ব্যবহার করতে হবে। এ সময় পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের অভাব হয়। যে সময় আলো পাওয়া যাবে, সে সময় দরজা-জানালা খোলা রাখুন। অনেক সময় জানালার পাশে বিছানা থাকে। শীতের দিনের জন্য হলেও বিছানাটি সরিয়ে নিন খানিকটা। ঘুমানোর সময় শীতের প্রকোপ থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়। ঘরের কেবিনেটগুলোও এমনভাবে নকশা করা উচিত, যেন লেপ-কম্বল ভালোভাবে সংরক্ষণ করা যায়। শীতকাল ফুলের সময়। অন্দরে সতেজ ভাব ফুটিয়ে তুলতে গাছের কোনো তুলনা হয় না। বিভিন্ন ইনডোর প্ল্যান্টের সঙ্গে সঙ্গে রাখতে পারেন ফুলের গাছ। তবে এসব গাছ ঘরে রাখলেও সময়মতো আলো-হাওয়া দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।