শীতে ত্বকের যত্নে

নিয়মিত যত্নে ত্বক থাকবে এমন সতেজ। মডেল: নীল, ছবি: নকশা
নিয়মিত যত্নে ত্বক থাকবে এমন সতেজ। মডেল: নীল, ছবি: নকশা

গুটি গুটি পায়ে হাজির হচ্ছে শীত। এই সময়ে প্রকৃতির স্থবির, বিবর্ণ, থমথমে এক আবহাওয়ার ছাপ পড়ে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে। যার প্রতিফলন স্পষ্টত হয় আমাদের ত্বকে। বাতাসে বেড়ে যাওয়া ধুলাবালির জন্য ত্বক হয়ে যায় খসখসে ও মলিন। সেই সঙ্গে ত্বক ফেটে যাওয়া, অনুজ্জ্বল হয়ে পড়া, চুলকানিসহ দেখা দেয় নানান সমস্যা।  

শীতে ত্বকের এই সমস্যাগুলো খুবই স্বাভাবিক। আর তাই ভয় না পেয়ে শীতের শুরুতে একটু সচেতনভাবে কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করলেই বছরের অন্য সময়ের মতোই ত্বককে চাঙা ও মসৃণ রাখা কোনো ব্যাপারই না। পারসোনার পরিচালক নুজহাত খান বললেন, বছরের অন্যান্য ঋতুতে বিশেষ যত্নশীল না হলেও এই সময়টায় কিছু বিষয়ের প্রতি নিয়মিত হলে ত্বকের আর্দ্রতার পাশাপাশি উজ্জ্বলতাও বজায় থাকবে সহজেই। এ জন্য দিনে দুই থেকে তিনবার ময়েশ্চারাইজার–সমৃদ্ধ ক্রিম এবং লোশন ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আছে কিছু নিয়ম। যেমন গোসলের পর হালকা ভেজা ও নরম ত্বকে ময়েশ্চারাইজার সব থেকে ভালো কাজ করে। এ ছাড়া ঠান্ডায় পানি পানের প্রতি আমাদের একধরনের অনীহা কাজ করে, ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকের শুষ্কতা বজায় রাখতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। সঙ্গে খেতে হবে প্রচুর ফলমূল এবং শীতের তাজা শাকসবজি। এতে করে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। শীতকালে ঘন কুয়াশায় সূর্যের দেখা না মিললে আমাদেরও মনে হয় অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব নেই, তাই সানস্ক্রিন ব্যবহারের প্রয়োজনও নেই। এই ধারণাটা একেবারেই ভুল। অন্যান্য ঋতুর মতো এ সময় দিনের বেলায় সানব্লক বা সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন হওয়া চাই নিত্যদিনের অনুষঙ্গ। এ ছাড়া ত্বকে যে টান টান ভাব অনুভূত হয়, তা প্রতিরোধে খুব দীর্ঘ সময়ে গোসল না করা এবং উচ্চমাত্রার ক্ষারসমৃদ্ধ সাবান পরিহার করে শাওয়ার জেল অথবা ময়েশ্চারাইজার–সমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করতে হবে।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী হাতের নাগালে সহজ প্রাপ্য কিছু উপাদান দিয়ে স্বল্প সময়ে নিয়মিত রূপচর্চায় এই শীতেও ত্বক থাকবে সতেজ ও প্রাণবন্ত। এ জন্য ত্বকের ধরন বুঝে কিছু প্যাক ব্যবহারের পরামর্শ দিলের হারমোনি স্পার রূপ বিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য

 ২ টেবিল চামচ লেবুর রস, ১ চা–চামচ গ্লিসারিন, ৩ টেবিল চামচ গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে ২০ মিনিট রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বকের ‌জন্য

প্রথমে আধা চা–চামচ দুধ ও মধু একত্রে মিশিয়ে ২ মিনিট ম্যাসাজ করে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর ১টি ডিম, ২ চা চামচ মধু, ১ চা–চামচ গুঁড়া দুধ, ১ টেবিল চামচ কাঁচা হলুদ বাটা এবং আধা চা–চামচ লেবুর রস দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে ২০ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে ধুয়ে ফেললে বিশেষ উপকার পাওয়া যাবে।

স্বাভাবিক ত্বকের জন্য

১ চা–চামচ গাজরের পেস্টের সঙ্গে টকদই মিশিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর ১ টেবিল চামচ শসাকুচি, ৬ টেবিল চামচ গোলাপজল, ১ টেবিল চামচ ময়দা, ২ টেবিল চামচ গ্লিসারিন এবং ১ চা–চামচ মধু ব্লেন্ড করে ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষার পর ধুয়ে ফেললে ত্বক সতেজ হয়ে উঠবে।