এই সময়ে সর্দিজ্বর

হাত দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি দিলে, সেই হাত দিয়ে কোনো কিছু ধরার আগে অবশ্যই তা ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

মৌসুম পরিবর্তনের এ সময়ে অনেকেই সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। এটি ভাইরাসজনিত একটি সাধারণ সংক্রামক রোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শ্বাসনালিতে ‘রাইনো ভাইরাস’-এর সংক্রমণের ফলে সর্দিজ্বর হয়। এ ছাড়া ‘কোরোনা ভাইরাস’, ‘প্যারা-ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস’, ‘রেসপিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাস’-এর সংক্রমণেও সর্দিজ্বর হতে পারে।

সর্দিজ্বরের সাধারণ লক্ষণগুলো হলো নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি, কাশি, নাক বন্ধ, শরীর ব্যথা, সামান্য জ্বর, চোখ লাল, অরুচি ও মাথাব্যথা। জীবাণু শরীরে ঢোকার পর কয়েক দিনের মধ্যেই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। সপ্তাহখানেকের মধ্যে রোগটি ভালোও হয়ে যায়। তবে কখনো কখনো কারও কারও ক্ষেত্রে ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়া, মধ্য কানে প্রদাহ, সাইনোসাইটিস ইত্যাদি জটিলতা দেখা দেয়।

ছড়ায় যেভাবে
রোগীর হাঁচি, কাশি ও নাকের পানিতে থাকা ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে অন্যদের শরীরে আক্রমণ করে। হাত, টিস্যু পেপার বা রুমাল থেকেও সুস্থ মানুষ সংক্রমিত হতে পারে। ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় রোগটি দ্রুত ছড়ায়। এ জন্য স্কুল, কলেজ বা অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

চিকিৎসা
সপ্তাহখানেকের মধ্যে সাধারণ সর্দিজ্বর ভালো হয়ে যাওয়ার কথা। এ সময় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন, প্রচুর পানি পান করতে হবে। নাকের সর্দি নিয়মিত পরিষ্কার করে নাসারন্ধ্র খোলা রাখতে হবে। গরম পানির ভাপ বা সাধারণ স্যালাইন ড্রপ নাকের ছিদ্র খোলা রাখতে সহায়তা করে। ঘরে সিগারেটের ধোঁয়া বা রান্নার ধোঁয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শে নাক দিয়ে পানি পড়া কমাতে অ্যান্টিহিস্টামিন, ব্যথা ও জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।

প্রতিরোধের উপায়
যেখানে-সেখানে নাক ঝাড়া যাবে না। হাঁচি দেওয়ার সময় রুমাল বা কনুই বাঁকা করে জামার আস্তিনে নাক-মুখ ঢেকে নিতে হবে। হাতে সর্দি বা হাঁচি লাগলে দ্রুত ধুয়ে ফেলতে হবে। হাত দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি দিলে, সেই হাত দিয়ে কোনো কিছু ধরার আগে অবশ্যই তা ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। ব্যবহৃত টিস্যু পেপার যেখানে-সেখানে না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। ভাইরাসজনিত সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হলে স্কুল-কলেজ বা অফিসে না যাওয়াই ভালো। এতে এ রোগের ছড়িয়ে পড়া অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডা. মো. শহীদুল্লাহ, অধ্যাপক, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ

আগামীকাল পড়ুন: গর্ভস্থ শিশু

প্রশ্ন-উত্তর

প্রশ্ন: আমার মায়ের গলার গ্রন্থি ফুলে গেছে। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে জানতে পারলাম, এটা থাইরয়েডের রোগ। এখন কী করা যেতে পারে?
উত্তর: গলায় থাইরয়েড গ্রন্থি ফোলা ছাড়াও লসিকা গ্রন্থি ফুলতে পারে, অ্যাবসেস হতে পারে। অভিজ্ঞ চিকিৎসক সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করে চিকিৎসা দিতে পারবেন। কাজেই এমন কোনো চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
ডা. শাহজাদা সেলিম, হরমোন বিশেষজ্ঞ

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রয়েছে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেক সময় ঘরে বসে কিংবা জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব। আপনার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান। উত্তর দেবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বয়স লিখতে ভুলবেন না।
ই–মেইলে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান: [email protected]