সন্তান ধারণে দেরিতে কী করবেন

সঠিকভাবে চেষ্টার (কোনো ধরনের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে) পরও কারও কারও সন্তান ধারণে বিলম্ব হয়। স্বামী বা স্ত্রী কিংবা উভয়ের সমস্যার কারণে হলেও সামাজিকভাবে নারীদেরই বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় বেশি। গবেষণা বলছে, সন্তান না হওয়ার পেছনে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে নারীর, ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষের এবং ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে উভয়ের সমস্যা দায়ী। আর ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে সন্তান না হওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।

এ জন্য সন্তান নিতে এক বছর সঠিকভাবে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলে এর কারণ খুঁজে বের করতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সামান্য সমস্যার কারণে সন্তান ধারণে বিলম্ব হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসার মাধ্যমে সমস্যা কাটানো সম্ভব। তবে বয়স যত বাড়তে থাকে, সন্তান লাভের সম্ভাবনা তত কমতে থাকে। তাই অযথা দেরি করা উচিত নয়।

নারীর প্রাথমিক পরীক্ষা

রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও প্রোল্যাকটিন হরমোন, আলট্রাসনোগ্রাফি (বিশেষ করে ট্রান্স ভ্যাজাইনাল আলট্রাসনোগ্রাফি)

পুরুষের প্রাথমিক পরীক্ষা

সিমেন অ্যানালাইসিস বা বীর্য পরীক্ষা (৩ থেকে ৫ দিন সহবাস বন্ধ রাখার পর)

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের পরীক্ষায় সমস্যাটি ধরা পড়ে ও চিকিৎসা নিলে তার আশু সমাধান সম্ভব। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীর ডিম্বনালি বা টিউবের প্যাটেন্সি, ল্যাপারোস্কোপি, পুরুষের হরমোন পরীক্ষা, এমনকি ক্রোমোজোম পরীক্ষা পর্যন্ত দরকার হতে পারে। তবে এ হার খুব বেশি নয়।

বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ডিম্বাণু পরিপক্ব হওয়ার জন্য হরমোন থেরাপি, আইভিএফ, ইকসি জাতীয় চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। তবে এ ধরনের চিকিৎসায় যাওয়ার আগে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে সুস্থ থাকতে হবে। সন্তান লাভে বিলম্ব হওয়ার যে ১০ শতাংশের কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না, তাঁদের একটি বড় অংশ দুই বছরের মাথায় কোনো চিকিৎসা ছাড়াই সন্তান লাভে সমর্থ হন।

আগামীকাল পড়ুন: মাথাব্যথার কারণ

টেক্সটের নিচে লেখক: কনসালট্যান্ট, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা, বিআরবি হাসপাতাল