হাঁচি দিন সাবধানে

হাঁচি দেওয়ার সময় ঘণ্টায় প্রায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে ফুসফুস থেকে বাতাস বের হয়ে আসে। সেই সঙ্গে শ্বাসনালি ও নাকে জমে থাকা শ্লেষ্মা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণার আকারে বা স্প্রের মতো বের হয়। হাঁচি দিলে গতির কারণেই এসব কণা সামনের প্রায় ২ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। হাঁচি দেওয়া ব্যক্তির যদি কোনো রোগ থাকে যেমন সর্দি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, মাম্পস, যক্ষ্মা, জলবসন্ত, সার্স, বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু, ডিফথেরিয়া ইত্যাদি, তাহলে হাঁচির সঙ্গে এসব রোগের অসংখ্য জীবাণু বাতাসে বেরিয়ে আসে। মুহূর্তেই এসব জীবাণু কাছের মানুষগুলোর শরীরে ঢুকে পড়তে পারে। এ ছাড়া এসব জীবাণু বাতাসে ভেসে দূরের মানুষেও ছড়াতে পারে। তাই হাঁচি দিতে হবে সাবধানে।

হাঁচি আটকানোর কোনো উপায় নেই। তবে হাঁচির মাধ্যমে জীবাণুর ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো সম্ভব। হাঁচি এলে যথাসম্ভব নাক-মুখ ঢেকে নিতে হবে। অনেকে হাত দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি দেন। এতে হাতে জীবাণু লেগে যায়। পরে হাত থেকে এসব জীবাণু দরজা, জানালা, টেলিভিশনের রিমোট, জগ, গ্লাসসহ নিত্যব্যবহার্য সব জিনিসে জীবাণু ছড়ায়। সেখান থেকে তা অন্যদের শরীরে সংক্রমিত হয়। কারও সঙ্গে হাত মেলালে হাত থেকে হাতে ছড়ায় জীবাণু।

তাই সবচেয়ে ভালো হলো হাঁচির সময় রুমাল বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢাকা। সব সময় হাতের কাছে টিস্যু বা রুমাল থাকে না। সে ক্ষেত্রে হাতের কনুই বাঁকা করে তা দিয়ে নাক-মুখ ঢাকতে হবে। ফুলহাতা শার্ট বা জামা পরা থাকলে ভালো। জামার আস্তিনে বা কলার টেনেও হাঁচি দেওয়া যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে বাড়ি ফিরেই গোসল করে নিতে হবে, হাঁচি দেওয়া জামা পরিষ্কার করতে হবে। রুমালে হাঁচি দিলেও একইভাবে তা ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। টিস্যু ব্যবহার করে থাকলে তা এখানে-সেখানে না ফেলে নিরাপদ জায়গায় ফেলতে হবে।

হাত দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি দিয়ে ফেললে সঙ্গে সঙ্গে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। হাত ধোয়ার আগে কোনো কিছু ধরা চলবে না। মনে রাখতে হবে, আমাদের সম্মিলিত সচেতনতাই পারে নানা ধরনের রোগ সংক্রমণ ঠেকাতে। তাই হাঁচির আদবকেতা নিজে মানুন, পরিবারের শিশুসহ অন্য সদস্যদেরও মানতে উৎসাহিত করুন।

 বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ

  আগামীকালপড়ুন: হাঁপানি রোগীর খাবার