মনের বাক্স: পাঠকের ভালোবাসার অনুভূতি

>

১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবসা দিবস উপলক্ষে মনের বাক্স বিভাগে লেখা আহ্বান করা হয়েছিল। বিপুল পরিমাণ পাঠক ভালোবাসার অনুভূতি জানিয়ে লেখা পাঠিয়েছেন। সেগুলো থেকে বাছাই করা কিছু লেখা আজ প্রকাশিত হলো।

প্রিয় শিলু,

তোমার কি মনে পড়ে না, সৈয়দপুরে কালু হাজির বাসার নিচের গলিতে জন্ম নেওয়া আমাদের প্রথম প্রেমের কথা!

নীলক্ষেত থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সারিবদ্ধ ল্যাম্পপোস্টের আলোয় আমাদের হেঁটে চলার কথা!

পান্থপথ সিগন্যালে আমাদের সর্বশেষ হুডতোলা রিকশার কথা!

প্রিয় শিলু,

তোমার কি মনে পড়ে না, ফার্মগেট থেকে নীলক্ষেত হয়ে কার্জনে একসঙ্গে বসে থাকা। প্রকৃতির সান্নিধ্য। কবিতার মতো প্রেম। কখনো কৃত্রিম আবহে উড়তে থাকে তোমার চুল। তোমার হাত ছুঁয়ে বন্দী হয় সময়। স্পর্শে থাকে না যৌনতা! না থাকে মুগ্ধতা। সে স্পর্শে থাকে নির্ভরশীলতা। তোমার কাজল চোখ। আমার নির্লিপ্ত কাব্যিক দৃষ্টি। হারানোর ভয়। সে ভয়ে চোখ ভিজে যায়। শক্ত করে ধরে থাকি তোমার হাত।

সময় বড় নিষ্ঠুর হয়। সময় স্রোতের মতো হেঁটে যায় তার পথে। স্মৃতি আনাগোনায় আমার বুক ভেসে যায়। একা লাগে। মন খারাপ করে। বিষণ্ণতায় ডুবে যায় আমার জ্যোৎস্না রাত।

প্রিয় শিলু,

তোমার মনে পড়ে, কফির মগে জমে থাকা প্রেম। হাতিরঝিলে সিএনজি অটোরিকশায় করে যাওয়া আর ব্যথা জমানোর গল্প। সংসদ ভবনের সামনে ফুটপাতের দুর্বোধ্য একটি বিকেল। সন্ধ্যা গড়াতে একটু একটু করে ঘনিষ্ঠতায় মিশে যাওয়া! তোমার ব্যক্তিগত ডায়েরির কয় পৃষ্ঠা লেখা হয়েছে, নাকি কোনো পৃষ্ঠাতেই আমি নেই! 

শিলু,

প্রিয় মানুষকে ভুলে থাকো কী করে! হয়তো সময়ের ব্যবধানে আমি অপ্রিয়। বলো তো তুমি...

নির্ভরশীলতা হাতটা ছেড়ে দিলেই কি দূরত্ব বেড়ে যায়

নতুন কাউকে ভালোবেসে অন্য হাত ধরলেই কি প্রেম মরে যায়,

আমি জানি না, তুমি হয়তো জানো!

এখনো কি আগের মতোই আছে, নাকি বদলে গেছে

প্রেমিকের স্পর্শে, গন্ধে, মোহে

সে কি আমার মতো কবিতা লিখে,

বোকার মতো চোখ দেখে কাঁদে,

আমার মতো ভালোবেসে!

ঢাবির টিএসসি থেকে তোমার খুব প্রিয় কলাভর্তা কেনে!

শিলু,

তোমার হেডফোনে আজ কার গলা ভাসে;

কোন গান বাজে,

কে কবিতা বলে,

আমার মতো অনিদ্রা তোমার কি আছে;

মাঝরাতে ঘুম ভেঙে বুক কি কাঁপে না,

ব্যথা লাগে না,

কষ্ট হয় না,

মাঝে মাঝে কান্না পায় না তোমার বল! 

এস এ ঈভান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।


ভর্তি ফরমে তোমায় দেখি

অনেক দিন ধরে তোমায় ফলো করি, কিন্তু তোমাকে কিছু বলতে পারি না। স্কাউটের ভর্তি ফরমে তোমার ছবি দেখে প্রথম তোমাকে ভালো লাগে। তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। ঐশী তুমি জানো, তোমার সামনে গেলে আমার মনের সব কথা যেন হারিয়ে যায়, তাই তোমায় সাহস করে বলতে পারি না, তোমায় অনেক ভালোবাসি। তোমার চোখগুলো দেখলে আমার হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে। আর সেই সঙ্গে আমাকে মুগ্ধ করেছে তোমার মুচকি হাসিটি। তোমার সামনে যেতে আমার মন চায়। মন চায় বলি, ‘ঐশী তোমাকে অনেক ভালোবাসি।’ তোমার হাতে হাত রেখে সারাটি জীবন কাটিয়ে দিতে চাই। তোমাকে এক দিন না দেখলে মনে হয় যেন এক যুগ ধরে তোমাকে দেখি না। সত্যি তোমাকে ভালোবাসি ঐশী। তোমাকে না দেখে থাকার কথা চিন্তাও করতে পারি না। পাগলি তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি।

সাদেক মিয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ।

প্রথম দেখা

গোধূলির শেষ লগ্নে তোমার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা। মনে আছে তোমার, সেদিনa লুঙ্গি পরে তুমি এসেছিলে আমাদের সঙ্গে দেখা করতে। আমি সারা দিনের জার্নিতে ছিলাম ক্লান্ত। আর তুমি ছিলে ছুটির দিনে প্রাণবন্ত, সজীব। সেদিনের সেই দেখাতেই তোমাকে ভালো লেগেছে, আর এ ভালো লাগাই কখন যে ভালোবাসা হয়ে গেছে, আমি বুঝতেও পারিনি।

আমি তোমাকে ভালোবাসি, সেটা তুমি জানতে। তুমিও বলেছিলে ‘ভালোবাস’। সত্যিই কি ভালোবাসতে আমায়? আমি সেদিন যেমন ভালোবাসতাম, এখনো তেমনি করে ভালোবাসি তোমায়। দীর্ঘ ১২টা বছরে তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা একটুও কমেনি। বেড়েছে একটু একটু করে। তুমি ভালো থাক, সুস্থ থাক—এই কামনা করব সারা জীবন। হয়তো তুমি মনে করো আমি তোমার ভালো চাই না, কিন্তু সত্যি বলছি, আমার জীবনের সব সুখের বিনিময়ে হলেও তুমি সুখে থাক, এই চাই। সুখে থাক সারা জীবন।

তাহমীনা
ঠিকানা অজানা থাক।

আমার ‘স্টুপিড’

জীবনে হঠাৎই আলোকচ্ছটা ছড়িয়ে তোমার আগমন। ২০১৯ সালের ১২ মে তোমার সঙ্গে প্রথম কথা। ধীরে ধীরে শুরু হয় জীবন চেনার পর্ব। সম্পর্কটা যেন বন্ধুত্বের বাঁধনে আটকে গেল। সকাল–বিকেল খোঁজখবর নেওয়া, একটু দেখতে চাওয়া। সব মিলিয়ে মনে হলো জীবনের এক নতুন অধ্যায় খুঁজে পেয়েছি তোমার মধ্যে। মনের ভেতর মায়ার বীজ গজাতে লাগল। আমার সব ভাবনাজুড়ে শুরু হলো তোমার বসবাস। একপর্যায়ে হৃদয়ের সবটা দখল করে নিলে তুমি। মনের অজান্তেই ভালোবেসে ফেললাম তোমায়। শুরু হলো একতরফা ভালোবাসার ফুলঝুড়ি। খুনসুটির এক ফাঁকে একদিন ‘স্টুপিড’ বলে ডাকি তোমায়, মনে হলো সত্যিই একটু খেপেছ। কিন্তু আজ সেই স্টুপিড ডাকটা শোনার জন্য মুখিয়ে থাকো তুমি। আমিও ভালোবাসার প্রলেপ দিয়ে স্টুপিড বলেই ডাকি তোমায়। কথা দাও, সারা জীবন আমার ‘স্টুপিড’ হয়েই থাকবে তুমি?

মিজানুর রহমান
লালমোহন, ভোলা।

আমাদের শুরু আছে শেষ নেই

তোমার প্রতি কতটা ভালোবাসা প্রকাশ করলে যথেষ্ট হবে, জানি না। তোমায় কতটা ভালোবাসি, তা হয়তো ‘ভালোবাসি’ কথাটা দিয়ে বোঝানো যাবে না। নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হয়, তোমার মতো একজন মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছি বলে। তুমি ঠিকই বলো, আমাদের শুরু আছে, কিন্তু শেষ নেই। সত্যিই, ভালোবাসা দিয়ে যে সাগর তুমি তৈরি করেছ আমার জীবনে, তার কোনো শেষই আমি দেখতে পাই না। শত ঝড়–ঝাপটাতেও আমাদের ভালোবাসা একটুও কমেনি। এভাবেই ভালোবেসো, ভালো রেখো আমায়। শুধু এতটুকুই বলব, ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি তোমাকে। 

সানজিদা।

তোমাকে খুঁজি

আজ তোমাকে নির্ঘুম নিশীথ রাতের শুভেচ্ছা। কেমন আছ তুমি, অনবরত আমাকে ভুলে? অনেক সুখের নদীজলে সাঁতার কাটছ বুঝি? তোমার সুখগুলো আমার কাছে হিরের টুকরোর মতো। তুমি কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসোনি? অভিনয় করে গেছ আমার সঙ্গে?

তোমার জন্য বকুলতলার ঘুঘু পাখিগুলো অপেক্ষা করে প্রতিদিন, সকাল–সাঁঝে। আমার বিরহের সঙ্গী হয় পাখিগুলো। তুমি চলে গেলেও এরা আমার বিরহের গল্প শোনে রোজ। সেই হিজলের লাল ফুলগুলো মলিন হয়ে ঝরে পড়ে বিরহের বিকেলে। আমি অচেনা পথের পথিক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি তোমাকে দেখব বলে। আর তুমি আমার কথা ভুলে দূরের কোন পথে হাঁট? আমি তোমাকে ভালোবেসে নিঃসঙ্গ একাকী দুঃখের প্রবল স্রোতে ভেসে ভেসে তোমাকেই খুঁজি। আর তুমি? সুখে থেকো। যদি কখনো সময় হয় তোমার, একপলক চোখ বুলিয়ে যেয়ো। তোমাকে দেখার সাধ অপূর্ণ। তোমাকে দেখব অপলক দুনয়নে। প্রজাপ্রতি যেমন ফুলের পাপড়িতে অবিরত চোখ বুলিয়ে যায়, আকাশ যেমন মাটির সঙ্গে করে বন্ধুত্ব, তেমনি আমি তোমায় ভালোবেসে যেতে চাই আজীবন। ভালো থেকো।

আবু নাঈম
|রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ।

তোর থেকে শুনতে চাই
পাপিয়া,

তুই কি জানিস, তোর ওই কিউট কিউট জাপানি চোখগুলো কতটা সুন্দর, কতটা আদুরে? দেখলেই মনে হয়, আদরে ভরিয়ে দিই ওই চোখজোড়া। জানিস, আমার না মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছা করে ওই চুলের মাঝে নাক ডুবিয়ে বসে থাকি তোকে জড়িয়ে ধরে। রেগে যাচ্ছিস কি? জানতাম, রেগে যাবি। কিন্তু কী করব বল, আমার যে তোকে অনেক কথা বলতে ইচ্ছা করে। নীল আকাশে উড়তে চাওয়া ভাবনাগুলোর কথা। বিস্তীর্ণ ভূমি, এঁদো মাটিতে চরে বেড়ানো স্বপ্নগুলোর কথা, সবুজ মাঠের ঘাসে উড়ে বেড়ানো ঘাসফড়িংগুলোর কথা। আমার জীবনের অলিগলিতে বরফকঠিন শীতলতায় জমে থাকে অসংখ্য কথা। তোকে বলতে চাই, আর তোর থেকে শুনতে চাই।

আমি জানি, তুই অনেক রিজার্ভড। অনেক চাপা স্বভাবের একটা মেয়ে। বাইরে যদিও তুই কিছুটা ছোটাছুটি করিস। তোকে আমি খুব করে, পুরোপুরি বুঝতে চাই। তোর মনের প্রতিটি অনুভূতিকে বুঝতে চাই। এমন সব অনুভূতিকে আবিষ্কার করতে চাই দুজনে মিলে। যেগুলো হয়তোবা তুই নিজেও বুঝিসনি আগে। ব্যাপারটা কিন্তু বেশ মজার, তাই না? ইচ্ছা করে তোকে নিয়ে ওই মাঠের ঘাসে পা ছড়িয়ে বসতে, না না, ইবলিস মাঠটার কথা বলছি না...বলছি, তার পাশের ছোট মাঠটার কথা, যেখানে প্রচুর আকাশমণি ফুলের গাছ। তোকে নিয়ে পাশাপাশি হাঁটতে ইচ্ছা করে, পশ্চিমপাড়াগামী চারপাশের শোভা বাড়ানো সারি সারি কৃষ্ণচূড়াগাছগুলোর মধ্য দিয়ে। না না, হাত ধরতে চাইছি না। পাশাপাশি থাকব।

ও হ্যাঁ, বলতে­ ভুলেই গেছি! তোর গালে টোল পড়া বুকে কাঁপন ধরানো অপরূপ হাসিটা। উফ আল্লাহ! এত্তো আদুরে করে হাসিস কেমনে, বল তো? আমার না খুব ইচ্ছা, আমাদের তোর মতো একটা আদুরে মিষ্টি, কিউট মেয়ে হোক। তবে স্বভাবের দিক থেকে পুরোপুরি তোর মতো হলে চলবে না। ও অনেক আহ্লাদি স্বভাবের হবে। আমার কাছে হাজারো আবদার করবে। আমার মেয়েকে নিয়ে আমি খেলব প্রতিদিন, অন্য যত কাজই থাকুক না কেন। ঘুম পাড়াব, সাইকেল চালানো, সাঁতার শেখানো সব করব। ওর বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলব ছোট থেকেই। শুরুটা বোধ হয় রূপকথার বই দিয়েই করলে ভালো হবে, কী বলিস? তখন কিন্তু আমাদের বাপ-মেয়ের আদিখ্যেতা দেখে তুই রাগ করতে পারবি না! পড়াশোনা শেষ করে ওকে ওর পছন্দমতো কাজে যোগ দেওয়ার স্বাধীনতা দেব, তার ইচ্ছেমতো বিয়ে দেব। কোনো রাজপুত্রের দরকার নেই আমার, জামাই হিসেবে দরকার এমন কাউকে, যে কিনা ওকে বুঝবে। ঠিক ওর বাবার মতো। ওর বাবা যেভাবে মাকে বোঝে। এই রে! কোথা থেকে কোথায় চলে এলাম! মনে রাখবি তুই ছিলি, আছিস আর থাকবি প্রতিটা সময় এই মনের মণিকোঠায়।

মুনতাসির মামুন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রিয় রূপান্তর

যখন আমরা ভালোবাসার মানে বুঝতাম না, তখন থেকেই তোমার আমার বন্ধুত্ব। তোমার আমার ছোট্ট হৃদয়ে তৈরি হয়েছিল একে অপরের প্রতি দুর্বলতা। তারপর স্কুল বদলাতে গিয়ে হারিয়ে গেলে তুমি। পুরোনো স্কুলের সব স্মৃতি মুছে গেলেও তোমাকে মুছে যেতে দিইনি। তবে তোমাকে আবার দেখতে পাব, এটা ভাবতে পারিনি। আবার রূপকথার রাজকুমারের মতো তোমার ফিরে আসা। আবার একসঙ্গে অনেক পথচলা, অনেক বাধা পেরিয়ে সম্পর্কটাকে পূর্ণতা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করা। সব মিলিয়ে আমাদের ভালোবাসার ভ্রমণটা নাটকীয়তায় ভরপুর। তবে এ নাটকে দুটি হৃদয়ের একসঙ্গে বসে দেখা অনেক স্বপ্ন আছে। আর আছে একটা সাজানো সংসার পাওয়ার অফুরন্ত আশা। আর বেশি দিন নয়, তুমি বলেছ এ মাসেই আমাদের ভালোবাসার পূর্ণতা দেবে, আর দেবে সামাজিক স্বীকৃতি। এতে আমার সত্যিই অনেক ভালো লাগছে। তবে তোমার কাছে আমার আরও একটা ছোট্ট চাওয়া আছে।

গত ছয় বছরের সম্পর্কে তুমি আমাকে একটা ভালোবাসা দিবসেও শুভেচ্ছা জানাওনি। এর কারণটা অবশ্য তুমি আমাকে জানিয়েছ। বলেছ, তুমি বছরে শুধু এক দিন ভালোবাসা প্রকাশে বিশ্বাস করো না, নাটক মনে হয়। তবে এইবার ভালোবাসা দিবসে কি আমি একটা ছোট্ট সুন্দর লাল গোলাপ পেতে পারি? ভালোবাসার নাটকীয় প্রকাশ হিসেবে নয়, চাইছিলাম আজীবন একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার হিসেবে।

তোমার সোনাবউ পূর্ণা
কুষ্টিয়া।

হ্যাপি অ্যানিভার্সারি

যাকে ভালোবেসেছ বা ভালোবেসেছিলে, সে মানুষটি ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। দুজনের ভুল ক্ষমা করে একসঙ্গে থাকার অভ্যাসটা ধরে রাখতে চাওয়াই ভালোবাসা। শুনেছি তোমার জ্বর। ওষুধ খেয়ো, ভালোবাসাকে আঁকড়ে ধরে থাকতে চেয়ো। আমি উদাস হয়ে সবকিছুর দিকে তাকিয়ে থাকি আজকাল। আমি ভালো আছি কি নেই, এতে কারও কিছু এসে যায় না।

ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ যে–ই ৮ হবে, তোমার ঠোঁটের তিলে একটা টান পড়বে, জল খেতে ইচ্ছা করবে। বুঝবে আমি নিঃশব্দে চিৎকার করছি হ্যাপি অ্যানিভার্সারি! তোমাকে ছাড়া আমার, আমাকে ছাড়া তোমার অ্যানিভার্সারি ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ।

মেহেদী হাসান
খুলনা।

কাইশশা তুই শুধু আমার

এখন আর ফোন নিয়ে তোর কলের অপেক্ষা করি না। আর অপেক্ষা করি না তোর মেসেজের। পুরো এক সপ্তাহ কেটে গেছে, কথা হয়নি তোর সঙ্গে। আর আগে এক ঘণ্টা থাকতে পারতাম না। নিজেকে সামলে নিয়েছি রে আমি। আর পারছিলাম না তোর অবহেলা সহ্য করতে, শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম। এখন আমি অনেক ভালো আছি। একা থাকতে শিখে গেছি। কতটা পাল্টে দিয়েছিস আমায়। সবই তোর আর তোর বান্ধবীর অবদান। তোদের দোষ দেব না, বরং ধন্যবাদ দেব সব সময়। দোষ আমারই। আমিই তোদের কাছে বড্ড বেশি কিছু আশা করেছিলাম। আমি আর কোনোদিন বলব না যে ‘কাইশশা তুই শুধু আমার’। আর কোনো দিন বলব না ‘আমার ভালো লাগছে না’। তোর ওপর আর কোনো দাবি করব না। ভালো থাকিস রে তুই। খুব ভালো থাকিস। 

ইতি
ভাবওয়ালী

কে তুমি হে অপরিচিতা

একদিন ফেসবুকে নিজের ফ্রেন্ডলিস্ট দেখতে দেখতে চোখে পড়ল তোমার বোরকা পরা মায়াবী সুন্দর চোখ দুটি। এত সুন্দর চোখ টলমল করে যেন আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। মনের মধ্যে কেমন যেন এক স্বর্গীয় সুখ অনুভব করলাম, আর বলতে লাগলাম, কে তুমি হে সুন্দরী রমণী। সময় নষ্ট না করেই তোমাকে মেসেঞ্জারে প্রশ্ন করলাম, কে আপনি? আপনি কি আমাকে চেনেন?

উত্তরের অপেক্ষায় সময় গণনা শুরু করলাম, কিছুক্ষণ পর মেসেঞ্জারের সেই পরিচিত নোটিফিকেশন শব্দটা শুনতে পেলাম। এক পলকে মেসেঞ্জারে তোমার উত্তরটা দেখলাম, না আমি আপনাকে চিনি না। তখন আমি প্রত্যুত্তরে লিখলাম, আপনি তো আমার ফ্রেন্ডলিস্টে আছেন, কিন্তু কীভাবে ফ্রেন্ড হলেন, তা তো আমার জানা নেই। তারপর উত্তরে তুমি একটা ইমোজি পাঠালে, যে ইমোজি চিহ্নের মানে কী আমি জানতাম না। তখনই আমি প্রশ্ন করলাম, আমি ইমোজি কম বুঝি, এটা দিয়ে কী বোঝানো হয়েছে? তখন তুমি বললে গাধার সঙ্গে আমার কোনো কথা নেই। এ কথা শুনে খুব কষ্ট পেলাম এবং রাগও করলাম। পরদিন আমি তোমাকে একটি কঠিন ইমোজি চিহ্ন দিয়ে বলি, এটার মানে কী জানেন? তখন তুমি বললে, না আমি জানি না। তখন আমি বললাম, সবজান্তা মনোভাব ভালো না।

সবাই সবকিছু জানে না, তাই বলে কি গাধা নাকি। তক্ষুনি তুমি আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করলে। বললে আমি কাউকে দুঃখ দিতে চাইনি, আমার কথায় আপনি দুঃখ পেলে আমি স্যরি। তোমার আইডিটা ভুয়া নাকি সত্যি, তা জানার জন্য এক মিনিট কথা বলার অনুরোধ করলাম। তুমি কথা বলতে রাজিও হলে এক মিনিটের বেশি নয় শর্তে। অনুমতি নেওয়ার পর ফোন করলাম, ওপার থেকে শব্দ এল আসসালামু আলাইকুম, শব্দটা শোনার পর আমার বুকের হার্টবিট বেড়ে গেল। বুকে ধড়ফড় শুরু হয়ে গেল। তারপর তোমার সঙ্গে ঠিক এক মিনিটের কিছু সেকেন্ড বেশি কথা বলার পর তুমি সময় শেষ বলে কেটে দিলে। ফোনটা কেটে দেওয়ার পর আমি স্তম্ভিত হয়ে কতক্ষণ প্রতিমার মতো বসে রইলাম, আর ভাবতে লাগলাম, সময় কেন এত তাড়াতাড়ি যায়। আর বলতে লাগলাম, কে তুমি হে অপরিচিতা? এত সুন্দর কণ্ঠ আমি শুনিনি আগে। এত নরম, এত মায়াবী, এত মিষ্টি কণ্ঠ হতে পারে মানুষের, তোমার কণ্ঠ না শুনলে বুঝতাম না। চিরকাল তোমার সেই অপূর্ব কণ্ঠ শুনতে চাই, আমি কি সেই ভাগ্যবান হতে পারব। যদি টাইম ট্রাভেল হতো তাহলে আমি বারবার ওই এক মিনিটের কিছু সেকেন্ড বেশি সময়টায় গিয়ে শুধু তোমার কণ্ঠ শুনতাম। একটা মানুষকে না দেখে শুধু তার কণ্ঠ শুনে পাগলা হওয়া যায়, এই প্রথম তা অনুভব করলাম। কণ্ঠের প্রতি ক্রাশ হলাম। এত দিন হয়ে গেল তারপরও বলছি, কে তুমি হে অপরিচিতা?

রাসেল

ঢাকা।