ফ্যাশনে কারুশিল্পের ঐতিহ্যের খোঁজ

ঢাকার একজন সুঁচিশিল্পীর সঙ্গে অধ্যাপক হাইকে সেলমার ও থমাস ব্রুডার। ছবি: লোকাল ইন্টারন্যাশনালের সৌজন্যে
ঢাকার একজন সুঁচিশিল্পীর সঙ্গে অধ্যাপক হাইকে সেলমার ও থমাস ব্রুডার। ছবি: লোকাল ইন্টারন্যাশনালের সৌজন্যে

লোকাল ইন্টারন্যাশনাল হলো জার্মানি ও বাংলাদেশের মধ্যে ফ্যাশন বিনিময় প্রকল্প। এই উদ্যোগের সঙ্গে আছে বাংলাদেশের গ্যেটে ইনস্টিটিউট, জার্মানির ওয়েইসেনসে একাডেমি অব ফাইন আর্টস ও বাংলাদেশের বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি। এই প্রকল্পের আওতায় জার্মানি ও বাংলাদেশের ৯ জন করে নবীন ফ্যাশন ডিজাইনার স্থানীয় হস্তশিল্প ও বয়নশিল্প নিয়ে গবেষণা করে টেকসই পণ্য তৈরি করবেন। পরবর্তীতে ঢাকা ও বার্লিনে এসব পণ্য প্রদর্শন করা হবে।

এই বিনিময় প্রকল্পের লক্ষ্য হলো টেকসই ফ্যাশন ডিজাইন কৌশল নিয়ে কাজ করা। এই উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা বার্লিনের ওয়েইসেনসে কুন্সথোশুলার ফ্যাশন ডিজাইনের অধ্যাপক হাইকে সেলমার এবং বার্লিনের ইউনিভার্সিটি ডার কুন্সটের অধ্যাপক ভ্যালেস্কা শিমিডৎ থমেসেন। উভয় প্রতিষ্ঠানই শিল্পকলার অধ্যয়নের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।

এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। তিনটি আসর ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। এ বছর চতুর্থবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে লোকাল ইন্টারন্যাশনাল। এরই মধ্যে অধ্যাপক হাইকে সেলমার ও তাঁর সহযোগী থমাস ব্রুডারার ঢাকা ঘুরে গেছেন। চতুর্থ পর্ব শুরুর আগে তাঁরা ঢাকায় এসে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে গেছেন।

আগামী এপ্রিলে ঢাকা সফরের সময় বার্লিনের অংশগ্রহণকারীরা ঢাকার বন্ধুদের সঙ্গে দলবদ্ধ হয়ে কারুশিল্পী ও বয়নশিল্পীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। দেখবেন তাদের কাজ ও সৃজনশীলতা। একই সঙ্গে হস্তশিল্পে টেকসই পদ্ধতি ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান ও এনজিওতেও যাবেন তাঁরা। এরপর বার্লিনের বন্ধুরা ফিরে তাদের মতো করে তৈরি করবেন পণ্য। একইভাবে ঢাকার বন্ধুরা করবেন তাদের পণ্য। আসছে জুলাই মাসে বার্লিন ফ্যাশন উইক চলাকালে বার্লিনে যাবেন ঢাকার অংশগ্রহণকারীরা। সেখানে অনুষ্ঠিত হবে প্রদর্শনী। পরে সেপ্টেম্বরে একই প্রদর্শনী হবে ঢাকায়।

লোকাল ইন্টারন্যাশনালের চতুর্থ পর্বের জন্য ঢাকা সফরকালে অধ্যাপক হাইকে সেলমার বলেন, আন্তর্জাতিক তৈরি পোশাক বাজারে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ সর্বত্রই দেখা যায়। বলতে গেলে ইউরোপের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশ থেকে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক পোশাক তৈরি করিয়ে নেয়। অথচ এই ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিই বিশ্বে দ্বিতীয় দূষণকারী শিল্প। এ জন্য তরুণ ডিজাইনারদের টেকসই পণ্য উদ্ভাবনে উৎসাহিত করতে হবে বলে মত দেন তিনি।

এবারের প্রকল্পে তিন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আরও যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় কারুশিল্প পরিষদ ও জার্মান ফেডারেল ফরেন অফিস।

চতুর্থ পর্বে অংশ নেওয়ার জন্য আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। উভয় দেশের আবেদনকারীদের মধ্য থেকে ৯ জন করে মোট ১৮ জনকে বেছে নেওয়া হবে। তাঁরা অংশ নেবেন লোকাল ইন্টারন্যাশনাল ২০২০ এর আয়োজনে।