করোনার ঝুঁকি এড়াতে লিফট ব্যবহার করবেন যেভাবে

লিফটে মুখোমুখি দাঁড়াবেন না। দেওয়ালের দিকে মুখ করে দাঁড়ান। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত হাঁচি-কাশিতে আপনার সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ কমে যাবে। ছবি: লেখক
লিফটে মুখোমুখি দাঁড়াবেন না। দেওয়ালের দিকে মুখ করে দাঁড়ান। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত হাঁচি-কাশিতে আপনার সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ কমে যাবে। ছবি: লেখক

করোনাভাইরাস সংক্রমণের এ সময়ে যতটা সম্ভব সচেতন থেকে সংক্রমণ এড়িয়ে চলতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলেও খোলা আছে সরকারি অফিস আদালত, বিপণিবিতানসহ অনেক প্রতিষ্ঠান। ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে বহুতল ভবনে অফিস করেন অনেকেই। অফিসে পৌঁছাতে তাই লিফট ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় অনেকের। হাঁচি-কাশির দেওয়ার সামাজিক নিয়মকানুনের মতো লিফট ব্যবহারেরও আছে কিছু নিয়মকানুন। আমাদের সাধারণ প্রবণতা হলো, লোকাল বাসের মতো লিফটে উঠতেও আমরা হুড়োহুড়ি করে থাকি কিংবা প্রচুর মানুষ ঠেলাঠেলি করে লিফটে উঠে পড়ি।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের এ সময়ে আমাদের চিরাচরিত এসব অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। লিফট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভয়ের ব্যাপার হলো, একই লিফটে প্রচুর মানুষ গাদাগাদি করে ওঠা। আমরা কেউ জানি না লিফটে আমার পাশের মানুষটি করোনাভাইরাসের বাহক কী না। পাশের মানুষটি যদি বাহক হয়েই থাকেন তাহলে লিফটের সবারই সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কাজেই বহুতল ভবনের লিফট ব্যবহারের ক্ষেত্র সচেতন না হয়ে উপায় নেই।

লিফট ব্যবহারের জন্য যা করতে হবে

১. সবচেয়ে ভালো হয় অন্ততপক্ষে পাঁচতলা পর্যন্ত ওঠার জন্য সিঁড়ি ব্যবহার করা। কারণ ঢাকা শহরের অনেক মানুষ পাঁচতলা ভবনে বসবাস করেন। পাঁচ থেকে ছয়’তলা বেশির ভাগ ভবনে লিফট নেই। কাজেই সিঁড়ি ভেঙে এ উচ্চতায় ওঠার স্বাভাবিক অভ্যাস আছে আমাদের। অবশ্য যাদের শারীরিক সমস্যা আছে তাদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে লিফট ব্যবহার করতে দিতে হবে।

২. লিফটে ওঠার আগে লাইন ধরুন। কোনোরকম ঠেলাঠেলি করবেন না। ঠেলাঠেলি করলে অজানা বাহকের কাছ থেকে আপনি সংক্রমিত হতে পারেন।

৩. সাধারণ সময় লিফটে যদি দশ জন মানুষ ওঠার সুযোগ থাকে, এ সময় লিফটে চার থেকে পাঁচজন মানুষের বেশি উঠবেন না। অর্থাৎ স্বাভাবিক সময়ের থেকে অর্ধেক মানুষ উঠতে হবে লিফটে। এতে একজন থেকে অন্যজন নিরাপদ দূরত্বে থাকতে পারবেন। এই নিরাপদ দূরত্ব আপনাকে সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারে।
৪. লিফটে মুখোমুখি দাঁড়াবেন না। দেওয়ালের দিকে মুখ করে দাঁড়ান। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত হাঁচি-কাশিতে আপনার সংক্রমিত হওয়ার সুযোগ কমে যাবে। এখনকার এ সংক্রমণ প্রবণ সময়েই নয়, যেকোনো সময়ে এ পদ্ধতিটি ব্যবহার করতে হবে।

৫. লিফটের বাটনে চাপ দেওয়ার সময় খুব ভালো হয় যদি অ্যালকোহল প্যাড বা টিস্যু ব্যবহার করেন। সেগুলো হাতের কাছে না থাকলে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে অথবা কনুই দিয়ে বাটনে চাপ দিন। এতে হঠাৎ চোখে-মুখে হাত দেওয়ার কারণে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। লিফট থেকে নেমে হাত পরিষ্কার করে নিন। ব্যবহৃত অ্যালকোহল প্যাড কিংবা টিস্যু নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলুন।

৬. বয়স্ক মানুষ, নারী, শিশু ও অসুস্থ মানুষদের লিফট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিন।

৭. লিফটের বাটন, হাতল ব্লিচিং পাউডারের মিশ্রণ দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর পরিষ্কার করতে হবে। এতে সংক্রমণ ছড়ানো থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ হবে।