ঘরের একঘেয়েমি কাটাতে নিজের যত্নটাই নিন না

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাস আমাদের এখন ঘরবন্দী করেছে। আমিও চার দিন ধরে বাসার বাইরে যাই না। আরও কত দিন এভাবে থাকতে হবে কে জানে? যেকোনো আবদ্ধ জীবন একঘেয়ে। কখনো নিজেকে একা একা, আবার কখনো জীবনটা ফাঁকা ফাঁকা লাগবে। এ সময় নিজের যত্ন নিয়ে পানসে জীবনটাকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালাতে পারেন।

ঘুম: প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করা ভালো। এটাই শরীরের জন্য দরকার। আমরা যতক্ষণ ঘুমাব, ততক্ষণ যেকোনো দুশ্চিন্তা থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পারব। তাই বলে সারা দিন শুধু ঘুম নয়, চেষ্টা করুন রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ঘুমানোর।

খাবার: সারা দিনের খাবারগুলো অল্প অল্প করে বারবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। বাসায় আছি বলেই যে অনেক খাবার খেতে হবে, তা নয়। সকালের নাশতা থেকে শুরু করে সারা দিন যেন ৬ থেকে ৭ বার খাবার আমরা খাই, সেটার দিকে খেয়াল রাখুন। তবে অবশ্যই ভাজাপোড়া নয়, স্বাস্থ্যকর খাবার। প্রতিদিন পরিবারের সবাই সকালের অন্য সব খাবারের সঙ্গে একটি করে সেদ্ধ ডিম রাখুন। মধ্যসকালে হালকা নাশতায় যেকোনো মৌসুমি ফল বা সঠিকভাবে রান্না করা সবজির স্যুপ রাখুন। দুপুরের খাবার দুইটার মধ্যেই খেয়ে নিন।

বিকেলে বাইরের খাবারের বদলে ফলের সালাদ বা দুধ দিয়ে তৈরি ফালুদা বা একমুঠো বাদাম/শিমের বিচি/মিষ্টি কুমড়ার বিচি খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। রাতের খাবার আটটার মধ্যে শেষ করা ভালো। তবে ঘুমানোর আগে অবশ্যই এক গ্লাস দুধ খেতে না ভুলি। এই যে বারবার খাবার খাচ্ছেন, এসব খাবার আপনার জীবনীশক্তি চালনা করার উপযোগী করে তুলতে সাহায্য করবে। ২ দশমিক ৫ লিটার থেকে ৩ লিটার পানি অবশ্যই পান করবেন।

অনেকেই আছেন, যাঁরা এখনো বাইরে থেকে নিয়মিত বাজার করে ঘরে আনছেন, তাঁরা অবশ্যই কাঁচাবাজারকে সংরক্ষণ করতে ভিনেগার/লেবু/লবণ পানিতে মিশিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রাখতে পারেন। ডিমের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নিতে পারেন। সবকিছু ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে তারপরে ফ্রিজে রাখবেন। আর প্যাকেটজাত খাবারের ক্ষেত্রে আপনি সাবান–পানি দিয়ে ভালো করে প্যাকেট ধুয়ে শুকনো জীবাণুমুক্ত কাপড় দিয়ে মুছে রাখতে পারেন।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: এ সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাটা জরুরি। জীবাণুমুক্ত থাকার মূল শর্ত এটা। আপনার বাসস্থানও পরিষ্কার করতে হবে রোজ। যতটা সম্ভব চেষ্টা করুন নিজের কাজ নিজে করার। বাসায় যাঁদের কাজের সহকারী থাকেন, তাঁদেরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার বিষয় ও উপায় শিখিয়ে দিন। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিন।

গৃহকর্মী পরিহার করলে বা তিনি নিজেই বিরত থাকলে পরিবারের সবাই মিলে কাজগুলো ভাগ করে নিন। এতে ছোট-বড় সবার ওপর চাপ কমবে। মিলেমিশে কাজ করার মধ্যে মজাও আছে। এতে পারিবারিক বন্ধন জোরালো হবে।

লেখক পুষ্টি পরামর্শক, নেসলে বাংলাদেশ