সম্ভাষণের আদবকেতা

করোনার আবির্ভাব বা প্রাদুর্ভাব যা-ই আমরা বলি না কেন, এর চিকিৎসার উপায় যেহেতু বের হয়নি, তাই একে প্রতিরোধের নানা উপায় বাতলে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। 

তাঁরা বলছেন, সম্ভাষণ করতে হলে পরস্পর ছোঁয়াছুঁয়ি নয়। করমর্দন করা যাবে না, আলিঙ্গনও বারণ আর চুম্বনও নিষেধ। দূর থেকে সামাজিক সম্পর্ক রাখতে হবে। 

দেহভঙ্গি নিয়ে বিশেষজ্ঞ যাঁরা তাঁরা বলছেন, পরস্পর সম্ভাষণে মানুষের মধ্যে সমমর্মিতা বাড়ে আর মানুষের ভেতরের নেতিবাচক আবেগ ইতিবাচক হয়ে যায়। দুশ্চিন্তাও কমে। স্মিত হেসেও জানাতে পারেন সম্ভাষণ। দৈহিক চুম্বনের বদলে ছুড়ে দিতে পারেন চুম্বন। দেহভঙ্গি বিশেষজ্ঞ প্যাট্রি উড বলেন, ছয় ফুট দূরে হলেও এমন সম্ভাষণের মূল্য অনেক।

করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তার নিয়ে মনস্ক আমরা অনেকেই, নিজেকে দূরে রাখা মানে এই নয়, প্রিয়জন ও বন্ধুদের দূরে রেখেও সম্ভাষণ জানানো যায়। কাউকে সালাম দেওয়া ও সম্ভাষণ। মাথা নুইয়ে দিয়ে বা হাত তুলে জানাতে পারেন সম্ভাষণ।

দিতে পারেন স্যালুট। হেড স্যালুট। ক্যাডেটদের মতো ‘আমি আপনাকে স্বীকার করি আর সম্মান করি।’ ঘাড়কে শিথিল করুন, বাহু তুলুন, আর হাতের তালুকে উন্মোচিত করে সম্ভাষণ দিন। বলছিলাম স্মিত হাস্যের কথা। একটি সুন্দর লাবণ্যময় হাসি হতে পারে অপূর্ব সম্ভাষণ। কী সুখ আর শান্তির স্পর্শ আছে এই হাসিতে। যেন ‘অনেক কথা যাও গো বলি, কোনো কথা না বলি’। দেখা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাত দুলিয়ে সম্ভাষণ। ৪৫ ডিগ্রি কোণে হাতটা তুলুন, কনুইয়ের ভঙ্গি এল আকৃতি ধারণ করল, সামান্য কবজির নড়ানোতে, হাতের তালু আগু-পিছু করল ঘড়ির দোলকের মতো। কেমন হবে বলুন?

বন্ধুরা কাছে আছে, কাছে আসে শত্রুরাও। 

পিঠে হাত না ছুঁইয়ে, পিঠে চাপড় দেওয়ার ভঙ্গি করতে পারেন। তার করা ভালো কোনো জিনিসের প্রশংসা করলেন। মানুষের ভালো কাজের স্বীকৃতি অনেক সময় একটি মিষ্টি ফাগুন পাওয়ার মতো। তার জীবনে সব হয়তো ছিল, কেবল রং ছিল না। সে তা পেল। ইনস্টাগ্রামে ডিজিটাল ‘হেই’, ‘হাই’ কি কম নয়। তাই তো।