রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে

ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, হৃদ্‌রোগ আছে এমন ব্যক্তি আর যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁরা করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর মধ্যে যাঁরা রিউমাটোলজিক্যাল ডিজিজ বা নানা ধরনের বাতরোগে আক্রান্ত, তাঁদের অনিশ্চয়তা একটু বেশি। কেননা, তাঁরা নানা ধরনের ইমিউনো মডুলেটিং বা ডিজিজ মডিফাইং ওষুধ সেবন করেন, যা দীর্ঘ মেয়াদে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়। অনেকে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধও সেবন করেন। এটিও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়। এ কারণে অনেকের মনেই হয়তো প্রশ্ন জেগেছে, করোনার এই সংক্রমণের সময় কি তাহলে এসব ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।


করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক সতর্কতা সবচেয়ে জরুরি। যাঁরা জানেন, তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, ইমিউনিটি প্রভাবিত করে এমন ওষুধ সেবন করেন, তাঁরা এ সময় কিছুতেই বাড়ির বাইরে যাবেন না। বারবার হাত ধোয়া, নাকে-মুখে হাত না দেওয়া, বাড়িঘর পরিচ্ছন্ন রাখা, পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক ব্যবহার করা ইত্যাদি স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

এ সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চিকিৎসকের চেম্বার বা হাসপাতালে যাবেন না। প্রয়োজনে টেলি–মেডিসিনের সাহায্য নিন। জরুরি অসুস্থতায় দূরে না গিয়ে নিকটস্থ কারও পরামর্শ নিন। গণপরিবহন এড়িয়ে চলুন।

নিয়মিত রোগ নিয়ন্ত্রণকারী ওষুধ বন্ধ করার দরকার নেই। এতে ঝুঁকি আরও বাড়বে। জ্বর বা কাশি হলে আপনার চিকিৎসক এ ব্যাপারে সঠিক পরামর্শ দেবেন। নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেবেন না।

প্রথম দিকে করোনার সংক্রমণ সন্দেহ হলে জ্বর বা ব্যথার জন্য প্যারাসিটামলই শ্রেয়। যেকোনো ব্যথানাশক গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। 


বাতব্যথার রোগীরা অনেকেই বাইরের সেন্টারে বা নিজ বাড়িতে ফিজিও থেরাপি নেন। এ সময় বাইরে যাওয়া থেকে যেমন বিরত থাকবেন, তেমনি বাড়িতে বাইরের কাউকে এনেও থেরাপি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন। নিজে নিজে শেখানো ব্যায়ামগুলো, হাঁটা ইত্যাদি চালিয়ে যান। 


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদপত্রে অনেক ওষুধের নাম আসছে, যার একটি বাতরোগে ব্যবহৃত হয়। মনে রাখবেন, করোনা সংক্রমণের সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা এখনো উদ্ভাবিত হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যে চিকিৎসা দেওয়া হয়, তা উপসর্গভিত্তিক ও তাতেই রোগীরা সেরে ওঠেন। 

ডা. রওশন আরা, মেডিসিন ও বাতরোগ বিশেষজ্ঞ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ

 আগামীকাল পড়ুন: বাইরে থেকে ফিরে কী করবেন