অন্য কয়েক পদ

>রুটি, তেহারি কিংবা খিচুড়ি—রান্না হতে পারে বাড়িতেই। সে রকম কয়েকটি পদের রেসিপি দিয়েছেন কল্পনা রহমান

তেলে ভাজা চিকেন বান

উপকরণ: ১. ময়দা ২ কাপ, ডিম ১টি, ইস্ট ২ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা–চামচ, চিনি ২ টেবিল চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ, তরল দুধ (হালকা গরম) পরিমাণমতো।

২. মুরগি চার ভাগের এক ভাগ, আদা ও রসুনবাটা ১ চা–চামচ, সিরকা ১ চা–চামচ, কাঁচা মরিচকুচি ২ টেবিল চামচ, ময়দা ১ টেবিল চামচ, তরল দুধ ১ কাপ, গোলমরিচগুঁড়া সিকি চা–চামচ, চিনি ১ চা–চামচ ও ডিম ১টি।

প্রণালি: একটি বাটিতে ডিম, ইস্ট, লবণ ও চিনি আধা কাপ হালকা গরম দুধ দিয়ে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। প্রয়োজন হলে আরও দুধ দিয়ে মাখাতে হবে। বনের ডো বেশি শক্ত বা বেশি নরম হবে না। তবে মোলায়েম একটা ডো হবে। এবার পরিষ্কার কাগজ দিয়ে এক ঘণ্টা ঢেকে রাখতে হবে। যখন ডো ফুলে দ্বিগুণ হয়ে যাবে, তখন নামিয়ে পছন্দমতো বনের লেচি কেটে নিতে হবে। একটি লেচি নিয়ে রুটি বেলে এর মধ্যে চিকেন ফিলার দিয়ে চারধারে মুড়িয়ে আবার গোল বানের মতো বানিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ১৫/২০ মিনিট আবার রেখে দিতে হবে। যখন ফুলে দ্বিগুণ হবে, তখন হালকা গরম তেলে মাঝারি আঁচে বাদামি করে ভেজে পরিবেশন করুন।

চিকেন ফিলার: একটি মুরগির বুকের অংশের সঙ্গে আদা–রসুনবাটা, সিরকা, কাঁচা মরিচকুচি ও লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে কিমা বানিয়ে নিন। একটি প্যানে বাটার দিয়ে ময়দা ভাজতে হবে। একটু পর পেঁয়াজ দিয়ে নাড়তে হবে। পেঁয়াজ যখন চকচকে হবে, তখন মুরগির কিমা দিয়ে নেড়ে তরল দুধ দিতে হবে। গোলমরিচ, চিনি ও সয়া সস দিয়ে নেড়ে ডিম ফেটে দিতে হবে। যখন ঘন হয়ে আসবে, তখন নামিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে চিকেন ফিলার।

● এই বান ওভেনে ১৮০ ডিগ্রিতে ১২–১৫ মিনিট বেক করেও বানানো যাবে।

ঘরে তৈরি পিঠা–রুটি

উপকরণ: ময়দা ৩ কাপ, গরম দুধ ১ কাপ, চিনি ৩ টেবিল চামচ, ইস্ট ২ টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল ১ টেবিল চামচ, বাটার ২ টেবিল চামচ ও লবণ ১ চা–চামচ।

প্রণালি: হালকা গরম দুধে ইস্ট দিয়ে ১০ মিনিট ঢেকে রেখে দিতে হবে। যখন ইস্ট ফুলে উঠে বলের মতো হবে, তখন চিনি, লবণ, সয়াবিন তেল ও ময়দা দিয়ে মাখিয়ে একটা রুটির পরিমাণে ডো বানাতে হবে। এবার ৩০ মিনিট ঢেকে রাখতে হবে। যখন ফুলে উঠবে, তখন বাটার দিয়ে আবার ভালোভাবে মথে নিয়ে আটটি ভাগে ভাগ করে রুটি বেলে নিন। সব রুটি বেলে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখুন ১০ মিনিট। রুটিগুলো ফুলে উঠলে প্রথম যে রুটিটি বেলা হয়েছে, সেটি সেঁকে নিতে হবে। এভাবে একে একে রুটিগুলো সেঁকে পিঠা–রুটি তৈরি করুন।

● এটি এক সপ্তাহ সংরক্ষণ করা যাবে।

● যেকোনো তরকারির সঙ্গে পরিবেশন করা যায়।

● এটি দিয়ে ঝটপট পিৎজা, প্যান পিৎজা, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি তৈরি করা যাবে।

চুলায় তৈরি নান

উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, ডিম ১টি, ইস্ট ১ টেবিল চামচ, চিনি ২ টেবিল চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ, তেল ১ টেবিল চামচ, লবণ আধা চা–চামচ ও পানি পরিমাণমতো।

প্রণালি: গামলায় ময়দার মাঝখানে ঘি বাদে বাকি উপকরণ আধা কাপ হালকা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে আস্তে আস্তে প্রয়োজনমতো পানি দিয়ে রুটি বানানোর মতো ডো মাখাতে হবে। খুব ভালোভাবে ময়েন দিয়ে ৩০ মিনিট গরম জায়গায় ঢেকে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পর ডোকে ৬–৭টি ভাগে ভাগ করে নিন।

এক কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ লবণ গুলিয়ে রাখতে হবে। রুটি বানানোর তাওয়া গরম করে ওই তাওয়ায় লবণ–পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। এতে তাওয়াটা তন্দুরের মতো রুটিকে আটকে ধরবে। এবার রুটি বেলে এর ওপর লবণ–পানির প্রলেপ দিয়ে তাওয়ায় বিছিয়ে দিন। রুটিতে বুদ্​বুদ্​ উঠলে তাওয়া উল্টিয়ে চুলার ওপর ধরতে হবে। রুটির ওপরটা যখন বাদামি হবে, তখন নামিয়ে ঘি ব্রাশ করে গরম গরম পরিবেশন করুন।

আচারি ভুনা খিচুড়ি

উপকরণ: পোলাওয়ের চাল দেড় কেজি, মুগডাল আধা কেজি, মটরশুঁটি ২ কাপ, তেলসহ আচার ৪ টেবিল চামচ, গরম পানি ৩ কেজি, রসুনকুচি ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, আস্ত জিরা ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ১০–১২টি, এলাচ ৬টি, দারুচিনি ৫–৬ পিস, তেজপাতা ৪টি, আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া ২ টেবিল চামচ, মরিচগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ধনেগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, মেথিগুঁড়া ১ চা–চামচ, তেল দেড় কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, জয়ফল ও জয়ত্রীগুঁড়া ১ চা–চামচ ও বোম্বাই মরিচ ২টি।

প্রণালি: মুগডাল ভেজে চালের সঙ্গে ধুয়ে ১০ মিনিট ডুবো পানিতে ভিজিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। এবার পাত্রে তেল দিয়ে এলাচ, দারুচিনি ও তেজপাতার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ ও রসুনকুচি দিয়ে ভাজতে হবে। পেঁয়াজে রং ধরলেই মেথিগুঁড়া বাদে সব গুঁড়া ও বাটা মসলা এক কাপ পানি দিয়ে কষাতে হবে। ভালোভাবে মসলা কষানো হলে চাল ও ডালের দেড় গুণ পানি দিতে হবে। যখন ফুটে উঠবে, তখন ভেজানো চাল, ডাল ও মটরশুঁটি দিয়ে বড় জ্বালে নাড়তে হবে। প্রয়োজনমতো লবণ দিতে হবে। যখন ফুটে উঠবে, তখন আস্ত জিরা, তেলসহ আচার ও মেথিগুঁড়া দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিতে হবে। এবার চুলার আঁচ হবে মাঝারি। যখন চাল ও পানি সমান হবে, তখন আর একবার ভালোভাবে নেড়ে মাঝখানে চূড়া করে ঘি ছড়িয়ে দিতে হবে। এখন বোম্বাই মরিচগুলো বোঁটাসহ দুই ফালি করে খিচুড়ির ওপর বসিয়ে ফয়েল পেপার দিয়ে মুখ সিল করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে মৃদু আঁচে তাওয়ার ওপর ২০ মিনিট দমে রাখতে হবে। এবার চুলা বন্ধ করে ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে বোম্বাই মরিচগুলো ফেলে দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

শর্ষের তেলে কাটা মসলায় তেহারি

উপকরণ: পোলাওয়ের চাল ১ কেজি, খামির গোস্ত দেড় কেজি, আচারের তেল আধা কাপ, শর্ষের তেল ৩–৪ কাপ, চিকেন কিউব ২টি, কেওড়া জল ২ টেবিল চামচ, গোলাপ জল ২ টেবিল চামচ, টক দই আধা কাপ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, রসুনকুচি ২ টেবিল চামচ, আদাকুচি ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ আস্ত ১৫টি, কাঠবাদামকুচি ২ টেবিল চামচ, পেস্তাবাদামকুচি ২ টেবিল চামচ, তেজপাতা ৩–৪টি, গরমমসলার গুঁড়া ৪ চা–চামচ, শাহি জিরা ১ চা–চামচ।

প্রণালি: চাল ধুয়ে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। মাংস ছোট করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরাতে হবে। এবার হাঁড়িতে তেল দিয়ে তেজপাতার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ, রসুন ও আদাকুচি দিয়ে একটু নেড়ে মাংস ঢেলে দিতে হবে। মরিচগুঁড়া, টক দই, এক চা–চামচ গরমমসলার গুঁড়া ও কাঁচা মরিচ দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিতে হবে। সেদ্ধর জন্য পরিমাণমতো পানি দিতে হবে। ১ চা–চামচ কেওড়া জল দিতে হবে। মাংস সেদ্ধ হয়ে যখন তেলের ওপর আসবে, তখন মাংসগুলো তুলে নিতে হবে।

হাঁড়িতে যে তেল ও মসলা রয়ে গেল, সেই মসলাতে চালের দেড় গুণ পানি ফুটিয়ে ভেজানো চাল আচারের তেল, কিচেন কিউব, বাদামকুচি, ২ চা–চামচ তেহারির মসলাগুঁড়া ও কেওড়া জল দিয়ে বড় জ্বালে নাড়তে হবে। নাড়তে নাড়তে যখন বলক আসবে, তখন মাংসগুলো দিয়ে লবণ চেখে ভালোভাবে নেড়ে ঢাকনা দিতে হবে। এই সময়ের আঁচ হবে মাঝারি। চাল ও পানি যখন সমান হবে, তখন ভালোভাবে ওপর–নিচভাবে নেড়ে চূড়া করে গোলাপ জল ও শাহি জিরা ছড়িয়ে দিয়ে ভেজা কাপড়ে হাঁড়ির মুখ সিল করে ২৫ মিনিট অল্প আঁচে দমে রাখতে হবে। ২৫ মিনিট পর চুলা বন্ধ করে আরও ৫ মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

তেহারির মসলা: এলাচ ১০টা, দারুচিনি ৪ টুকরা, জয়ফল চার ভাগের এক ভাগ, জয়ত্রী ৪টি, সাদা গোলমরিচ ১ চা–চামচ, লবঙ্গ ১০টি ও জিরা ১ চা–চামচ। ওপরের সব উপকরণ একসঙ্গে চুলার পাশে রেখে দিতে হবে। মুচমুচে হলে গুঁড়া করে তেহারিতে ব্যবহার করতে হবে।