ক্যানসার রোগীদের করণীয়

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, সব বয়সীরাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে প্রবীণ, যাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম এবং যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে, এমন ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। ক্যানসার রোগ এবং ক্যানসার চিকিৎসা উভয়ই শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তবে সব ক্যানসার রোগী সমান ঝুঁকিপূর্ণ নয়। অপেক্ষাকৃত বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে—

■ রক্তের ক্যানসারে (লিউকোমিয়া, লিম্ফোমা, মাল্টিপল মায়লোমা) আক্রান্ত রোগী।

■ কেমোথেরাপি নেওয়া যেকোনো রোগী।

■ রক্তে শ্বেতকণিকার সংখ্যা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কম থাকা রোগী।

এই অবরুদ্ধ সময়ের মধ্যেই হয়তো অনেকের কেমোথেরাপি বা চিকিৎসকের নিয়মিত ফলোআপের তারিখ পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি সম্ভব হয় আপনার ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চাইলে এ সময় কেমোথেরাপির শিডিউল পরিবর্তন করতে পারেন। আবার যাঁরা ইতিমধ্যে কেমো বা রেডিওথেরাপি নিচ্ছেন, তাঁদের জন্যও বিশেষ সতর্কতা দরকার। তার আগে জেনে নিন কী উপসর্গ দেখা দিলে সতর্ক হবেন। সাধারণ উপসর্গগুলো হলো—

■ জ্বর।

■ কাশি।

■ হাঁচি।

■ নাক দিয়ে পানি পড়া।

■ নাক বন্ধ।

■ গলাব্যথা।

■ খাবারের স্বাদ কমে যাওয়া।

■ পাতলা পায়খানা।

■ গা–হাত–পাব্যথা।

ফুসফুসের জটিলতার সঙ্গে যদি নিচের উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলেও সতর্ক হতে হবে—

■ বুকে চাপ, ব্যথা।

■ শ্বাসকষ্ট।

■ ঠোঁট, মুখ নীল বর্ণ ধারণ।

■ চেতনা হারানো।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সাধারণ কিছু বিষয় যেমন মাস্ক ব্যবহার করা, বাড়িতে থাকা, বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, চোখ-মুখ স্পর্শ না করা, সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন মেনে চলা (কমপক্ষে তিন ফুট বা এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখা, হাত মেলানো ও কোলাকুলি না করা) ইত্যাদি ক্যানসার রোগীদের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। এ ছাড়া রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে নিচের কাজগুলো করতে পারেন—

■ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুমান।

■ ব্যায়াম করুন।

■ ঘরে আলো-বাতাসের পর্যাপ্ত প্রবাহ নিশ্চিত করুন।

■ পুষ্টিকর ও সুষম খাবার (মাছ, মাংস, ডিম, শাকসবজি, ফলমূল, ভিটামিন–সিসমৃদ্ধ খাবার) খান।

■ পর্যাপ্ত পানি ও পুষ্টিসমৃদ্ধ পানীয় পান করুন।

■ ধূমপান ও জর্দা গ্রহণ থেকে পুরোপুরি বিরত থাকতে হবে।

■ রক্তচাপ, রক্তের সুগার ও কিডনির কার্যকারিতা স্বাভাবিক এবং ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। 

■ রাত জাগা ও মানসিক চাপ রোগ প্রতিরোধক্ষমতার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই যতটা সম্ভব নিরুদ্বেগ ও স্বচ্ছন্দ থাকুন। 

অধ্যাপক পারভীন শাহিদা আখতার মেডিকেল অনকোলজিস্ট, শান্তি ক্যানসার ফাউন্ডেশন, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল