এই সময়ে বাড়িতে কারও জ্বর হলে যা করবেন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেশে দিনে দিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কাজেই সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সতর্ক হওয়ার সময় এখনই। কিন্তু এর মধ্যেই যদি বাড়িতে কারও জ্বর আসে কিংবা গলাব্যথা, কাশি দেখা দেয় তাহলে করণীয় কী, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তায় রয়েছেন। বাড়িতে কেউ অসুস্থ হলে, করোনার সংক্রমণের পরীক্ষা হোক বা না-হোক এখন প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে অসুস্থ ব্যক্তিকে সবার থেকে আলাদা করে ফেলা। কিন্তু সেটা কীভাবে করবেন? আসুন এ সম্পর্কে নিয়মকানুনগুলো জেনে নিই।

১. অসুস্থ ব্যক্তিকে এমন একটি ঘরে রাখতে হবে, যা অন্য কেউ ব্যবহার করবেন না। ওই ঘরের সঙ্গে আলাদা টয়লেট থাকলে খুবই ভালো। খাওয়া এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করা ছাড়া বাকি সময় কক্ষটি বন্ধই থাকবে। প্রয়োজনীয় খাবার ও জিনিস দরজার কাছে রেখে দূরে সরে যেতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তি দরজা খুলে তা সংগ্রহ করবেন।

২. অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের দেশে আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা সম্ভব না–ও হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি বা দুটি ঘরে অনেক মানুষ বসবাস করে। এমন পরিস্থিতিতে সবাইকে এমনভাবে থাকতে হবে, যেন অসুস্থ ব্যক্তির সঙ্গে কমপক্ষে ৩ ফুট বা ১ মিটার দূরত্ব বজায় থাকে। সেবাদানকারী ব্যক্তি একটানা ১৫ মিনিটের বেশি অসুস্থ ব্যক্তির কাছাকাছি অবস্থান করবেন না।

৩. রোগীর ব্যবহার্য জিনিসপত্র, জামাকাপড়, তোয়ালে-গামছা সব আলাদা করে ফেলতে হবে। এগুলো আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই পরিষ্কার করবেন এবং পরিষ্কার করার সময় কমপক্ষে ৩০ মিনিট ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুতে হবে। পরিষ্কার করার সময় গ্লাভস ব্যবহার করতে পারলে ভালো হয়।

৪. রোগী এবং ঘরে অবস্থানকারী প্রত্যেকেই মাস্ক ব্যবহার করবেন।

৫. যদি আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা করা না যায়, তাহলে ব্যবহারের পর রোগী নিজেই টয়লেট জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন, কমোডের ঢাকনা বন্ধ করে ফ্ল্যাশ করবেন এবং টয়লেটের একজস্ট ফ্যান চালিয়ে রাখবেন। রোগীর ব্যবহারের কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর অন্যরা টয়লেট ব্যবহার করবেন।

৬. আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢাকবেন এবং নিজের সব বর্জ্য একটা পলিথিনের ব্যাগে মুড়ে ঢাকনা দেওয়া বিনে ফেলবেন। পলিথিনের ব্যাগটি রোজ মুখ বন্ধ করে নিজেই ঘরের বাইরে রেখে দেবেন। অন্যরা সেই ব্যাগটি বাইরে ময়লার বালতিতে ফেলার সময় গ্লাভস ব্যবহার করবেন ও স্পর্শ করার পর হাত ধুয়ে ফেলবেন।

৭. আক্রান্ত ব্যক্তিকে পরিচর্যা করার আগে-পরে হাত সাবান-পানি দিয়ে ধুতে হবে। যতটা সম্ভব কাছে না গিয়ে পরিচর্যা করতে হবে।

বাড়িতে পর্যাপ্ত ঘর না থাকলে অথবা পরিবারের সদস্যসংখ্যা বেশি হলে কিংবা পরিবারে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি থাকলে জ্বরের রোগীকে সরকার নির্ধারিত আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে রাখা যেতে পারে। রোগী বাড়িতে থাকলে চিকিৎসকের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করে লক্ষণ অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র নিন।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ