করোনার ভিন্নতর উপসর্গ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সাধারণ উপসর্গগুলো হলো জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট। কিন্তু এগুলো ছাড়াও কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। কাজেই এ সময় কোনো প্রকার শারীরিক অসুস্থতাকেই অবহেলা বা উপেক্ষা করা চলবে না। আসুন, করোনা রোগীদের মধ্যে পাওয়া ভিন্ন কিছু উপসর্গ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

শরীর ম্যাজম্যাজ করা বা ভীষণ দুর্বলতা হতে পারে প্রথম লক্ষণ। সাধারণ দৈনন্দিন কাজকর্ম যেমন টয়লেটে যাওয়া বা জামাকাপড় পাল্টাতে গিয়েও যদি খুব ক্লান্ত বা হয়রান লাগে, অথবা কোনো কারণ ছাড়াই যদি হঠাৎ অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, তাহলে আগে থেকেই সাবধান হোন।
মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা বা হতবিহ্বল অবস্থাও হতে পারে করোনার উপসর্গ। বিশেষ করে পরিবারের বয়স্ক মানুষটিকে একটু অস্বাভাবিক মনে হলেই সতর্ক হোন।

পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া, বমি বা বমিভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হয়ে উঠছে দিনে দিনে। যদিও চীনে করোনার সংক্রমণে এই উপসর্গ কম দেখা গেছে।

স্রেফ ঘ্রাণশক্তি লোপ পাওয়া বা নাকে কোনো গন্ধ না পাওয়া একটি লক্ষণ। অনেকের খাবারের স্বাদেও সমস্যা হতে পারে।
অনেক রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস শীত শীত ভাব বা কনকনে ভাব নিয়েই দেখা দিতে পারে।
চোখে প্রদাহ বা কনজাংটিভাইটিস একটি লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এখন।
করোনাভাইরাস রক্ত জমাটবাঁধার প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে অনেক রোগীর ক্ষেত্রে
বুকব্যথা, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

বিজ্ঞানীরা প্রতিদিনই করোনাভাইরাস সম্পর্কে নতুন কিছু জানতে পারছেন। আবার এটাও ঠিক যে ওপরের অনেক লক্ষণই অন্যান্য ফ্লু ও শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে প্রকাশ পেতে পারে। তাই এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেই আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হতে হবে। সন্দেহ হলে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

মনে রাখতে হবে, করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ মানেই সংক্রমণ নেই, একথাও নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অনেক সময় ৩-৪ দফা পরীক্ষার পর পজিটিভ আসতে পারে। আবার ২৫ শতাংশ রোগীর কোনো উপসর্গ না–ও থাকতে পারে। তাই উপসর্গ থাকুক বা না থাকুক, এ সময় বাড়িতে থাকাই শ্রেয়। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলতে হবে।

সহকারী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ