এ সময়ে চুলের যত্নে

ঘরোয়া উপাদানের ব্যবহারেই সুন্দর হবে চুল। ছবি: নকশা
ঘরোয়া উপাদানের ব্যবহারেই সুন্দর হবে চুল। ছবি: নকশা

করোনার সংক্রামণকালে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য সময় কাটছে নিজ ঘরেই। সাধারণ সময়ে সৌন্দযর্চচা কেন্দ্রে চুলের যত্ন নেওয়া হতো। নিয়মিত চুল কাটা কিংবা পরিচর্যার সেই সুযোগ এখন বন্ধ। কিছুটা দুশ্চিন্তায় বাড়ছে কি চুলপড়ায়ও? বাড়িতেই শুরু হয়ে যাক চুল সুন্দর রাখার চর্চা। সে ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপাদানগুলোই যথেষ্ট। একবার ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া উপাদানগুলোও হতে পারে চুলের যত্নের জন্য উপকারী উপকরণ।

এই সময়ে চুলের যত্নের উপকরণ হওয়া চাই সহজলভ্য, যা সহজেই ঘরে পাওয়া যাবে। যেহেতু এখন গরম ও বৃষ্টি দুইই দেখা যাচ্ছে তাই উপকরণগুলো বেছে নিতে হবে চুলের ধরন বুঝে। তৈলাক্ত, শুষ্ক ও স্বাভাবিক—তিন ধরনের চুলের জন্যই উপাদান ব্যবহারের আগে সঠিক পরিমাণ ও নিয়ম জেনে নেওয়া জরুরি। আবার এই সময়ে অনেক খাবারের খোসা বা অবশিষ্ট অংশ ফেলে না দিয়ে চুলের যত্নে খুব সহজেই ব্যবহার করা যায়। এমনটাই জানালেন হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন কেয়ার ক্লিনিকের আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমী।

তৈলাক্ত চুলের যত্ন

ভিটামিন সি চুলের ও আমাদের শরীর দুইয়ের জন্যও বিশেষ দরকারি। লেবুর শরবত তৈরি করার পর তার খোসা ফেলে না দিয়ে সহজেই চুলের যত্নে ব্যবহার করা যায়। কয়েকটি লেবুর খোসা ও ৩ কোয়া রসুন ভালোমতো পেস্ট করে নিন। এবার এই পেস্টটি শুধু মাথার ত্বকে লাগিয়ে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। রসুনের মধ্যে থাকা সালফার ও লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড মাথার কোষের ভেতরে প্রবেশ করবে এই সময়ে। পরে চুল শ্যাম্পু করুন। এই প্যাকটি চুল পড়া রোধে খুব ভালো কাজ করে।

শুষ্ক চুলের যত্ন

একটি পেঁয়াজের রসের সঙ্গে অর্ধেক পাকা কলা ও এক টেবিল চামচ মধু ভালোমতো ব্লেন্ড করে নিন। এরপর প্যাকটি মাথার ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। পরে শ্যাম্পু করে ফেলুন। শুষ্ক চুলে মসৃণতা আনে এই প্যাকটি।

স্বাভাবিক চুলের জন্য

একটি পেঁয়াজের রস প্রথমে পরিষ্কার মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট পর এটি শুকিয়ে গেলে ঘরে থাকা নারিকেল বা জলপাইয়ের তেল গরম করে মালিশ করে নিন। এরপর শ্যাম্পু করুন। চুল খুব দ্রুত লম্বা হবে।

শ্যাম্পুর বিকল্প ও রং করা চুলের জন্য মসুর ডাল বেশ ভালো কাজ করে। দুই টেবিল চামচ শর্ষেবাটা ও দুই টেবিল চামচ মসুর ডাল সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পাতলা পেস্ট করে নিন। এবার পরিষ্কার মাথার চুলের গোড়ায় এই পেস্টটি ব্যবহার করুন। এ সময়ে বাসায় থেকে চুলে রং করার ফলে চুলের গোড়ায় থাকা গ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ প্যাকটি মাথার ত্বক পরিষ্কার করে গ্রন্থির মুখ খুলে দেয়।

চুল ফাটা দূর করতে

চুল ফাটা দূর করতে আদারস মাথার ত্বকে ব্যবহারের পর শুকিয়ে গেলে হালকা গরম নারকেল বা জলপাইয়ের তেল মালিশ করে নিন। এরপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। তবে ফাটা অংশ কাটতে চাইলে সহজ নিয়ম হলো ভেজা চুলের মাঝবরাবর সিঁথি করে দুই পাশে সমান করে নিচ থেকে কেটে ফেলা। এ ছাড়া মাথা নিচু করে ভেজা চুল পেছন থেকে সামনে এনে সমান করে আঁচড়ে নিয়ে কেটে নিতে পারেন। এতে চুলে ভলিউম লেয়ার আসবে।

কন্ডিশনারের বিকল্প চা–পাতা

বাড়িতে চা খাওয়ার পর চায়ের পাতা ফেলে না দিয়ে কন্ডিশনারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এই চা–পাতা পানিতে ভিজিয়ে শ্যাম্পুর পর চুলে দিয়ে স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কিন্তু এর জন্য চা তৈরির সময়ে কোনো রকম চিনি ব্যবহার করা যাবে না। তাতে চুলে আঠালো ভাব চলে আসবে।