ঈদের রাতে সুস্বাদু কয়েক পদ

>খাবার টেবিলে একটু ভারী পদ না থাকলে কি ঈদের রাতটা জমে? তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই সময় খাবারের পদগুলো সুস্বাদু করার পাশাপাশি এর স্বাস্থ্যকর দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। ঈদের রাতের জন্য স্বাস্থ্যকর উপকরণের ব্যবহারে সুস্বাদু কিছু খাবারের রেসিপি দিয়েছেন আফরোজা নাজনীন

নবাবি বিরিয়ানি

উপকরণ: বিরিয়ানির মসলার জন্য: পেঁয়াজবাটা ৩ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, জিরাবাটা ১ টেবিল চামচ, গরমমসলার বাটা ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচ বাটা ১ টেবিল চামচ, মরিচগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, বাদামবাটা ১ টেবিল চামচ, শাহি জিরাবাটা এক চা–চামচের তিন ভাগের এক ভাগ ও পানি ১ কাপ।

মাংসের জন্য: খাসির মাংস ১ কেজি, তেল ৩ টেবিল চামচ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ ১ কাপ, টমেটো পিউরি ১ টেবিল চামচ, টক দই ৩ টেবিল চামচ, মিষ্টি দই ২ টেবিল চামচ, বেরেস্তাবাটা ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ লাল ও সবুজ ৫-৬টি, লবণ ও চিনি স্বাদমতো।

বিরিয়ানির জন্য: চাল ৩ কাপ, তেল ৩ টেবিল চামচ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, পানি ৬ কাপ, আস্ত গরমমসলা (এলাচি ২টি, দারুচিনি ২টি, তেজপাতা ২টি, বড় এলাচি ১টি) আলুবোখারা ৬-৭টি, লাল-সবুজ কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, মাওয়া আধা কাপ, বাদামকুচি (পেস্তা, কাঠবাদামকুচি), কিশমিশ ১ টেবিল চামচ, বেরেস্তা ১ কাপ, আলু (কিউব করে কেটে লবণ দিয়ে মেখে ঘি দিয়ে ভাজা), ঘন দুধ ১ কাপ, জাফরান ১ চিমটি, কেওড়া জল ১ টেবিল চামচ, কাজুবাদাম, পেস্তা কিছু, লেবু ১টি, টমেটো ১টি, লবণ ও চিনি স্বাদমতো।

প্রণালি: খাসির মাংসে মিষ্টি দই, টক দই ও লবণ মেখে ম্যারিনেট করে নিন। মসলার সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। এবার কড়াইতে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে টমেটো পিউরি ও মাংস দিয়ে কষিয়ে ছেঁকে নেওয়া মসলার পানি দিয়ে নেড়ে ঢেকে রান্না করতে হবে। এবার হাঁড়িতে পানি, তেল, ঘি, ছেঁকে নেওয়া পানির কিছুটা, আস্ত গরমমসলা, কাঁচা মরিচ, লবণ ও চিনি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে চাল দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিতে হবে। মাংসে বেরেস্তাবাটা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। পোলাও মৃদু আঁচে ২০ মিনিটের জন্য ঢেকে রান্না করতে হবে। একটি বাটিতে মাওয়া, কিশমিশ, বাদাম, জাফরান দুধ ও কেওড়া মিশিয়ে নিতে হবে। এবার পোলাও কিছু উঠিয়ে মাংস, আলু, বেরেস্তা, আলুবোখারা, কাঁচা মরিচ ও দুধ-পোলাও এভাবে কয়েকটা লেয়ার দিয়ে বাকি দুধ দিয়ে ৩০ মিনিট দমে রাখতে হবে। এবার নেড়ে কাজুবাদাম, পেস্তা দিয়ে পছন্দমতো সাজিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

লেবু–মধুর সসে মাছ ভাজা

উপকরণ: মাছ ভাজার জন্য: কোরাল মাছ ১টি, গোল মরিচের গুঁড়া ১ চা–চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, মাস্টার্ড সস ১ চা–চামচ, আদাবাটা আধা চা–চামচ, রসুনবাটা আধা চা–চামচ, মরিচের গুঁড়া আধা চা–চামচ, পাপরিকা আধা চা–চামচ, কর্নফ্লাওয়ার পরিমাণমতো, লবণ স্বাদমতো ও সয়াবিন তেল পরিমাণমতো।

সসের জন্য: আদাকুচি ১ টেবিল চামচ, রসুনকুচি ১ টেবিল চামচ, ব্রাউন সুগার আধা চা–চামচ, মধু আধা চা–চামচ, সয়া সস ১ চা–চামচ, অয়েস্টার সস ১ চা–চামচ, চিলি সস ১ টেবিল চামচ, সয়া সস ১ চা–চামচ, মাস্টার্ড সস ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতাকুচি ১ টেবিল চামচ ও সয়াবিন তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি: প্রথমেই মাছটি পরিষ্কার করে নিন। এবার মাছ ভাজার উপকরণ দিয়ে মাছটি মেখে ম্যারিনেট করে কর্নফ্লাওয়ারে গড়িয়ে গরম তেলে ভেজে নিতে হবে। এরপর সসের সব উপকরণ দিয়ে নেড়ে সব মিশে গেলে নামিয়ে ভাজা মাছের ওপর ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

পুদিনা লেবুর লেমোনেড

উপকরণ: পুদিনা বা মিন্ট সিরাপের জন্য: পুদিনা পাতা ১ কাপ, পানি আধা কাপ, বিট লবণ আধা চা–চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা–চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ ও চিনি ৩ টেবিল চামচ। পরিবেশনের জন্য পানি বা স্বচ্ছ কোমল পানীয়।

প্রণালি: মিন্ট সিরাপের সব উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে ছেঁকে নিতে হবে, তারপর এই সিরাপ পরিবেশনের গ্লাসের অর্ধেক বরাবর ঢেলে নিতে হবে। সার্ভিং গ্লাসে রাখা মিন্ট সিরাপের পানি বা স্বচ্ছ কোমল পানীয় ঢেলে লেবুর স্লাইস দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন। 

মেজবানি মাংস

উপকরণ: গরুর মাংস ২ কেজি, শর্ষের তেল ২ কাপ, রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ, আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ৩ টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ধনেগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, মরিচগুঁড়া ২ টেবিল চামচ, জায়ফল ও জয়ত্রীগুঁড়া ১ চা–চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, গরমমসলার গুঁড়া ১ চা–চামচ, স্পাইস পেস্ট বা মসলাবাটা ৩ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ, এলাচি ৭টি, দারুচিনি ৩ টুকরা, তেজপাতা ৩টি, পানি ৩ কাপ এবং লবণ স্বাদমতো।

স্পাইস পেস্ট বানানোর জন্য: কবাকচিনি আধা টেবিল চামচ, শর্ষে আধা চা–চামচ, তিল আধা টেবিল চামচ, রাঁধুনি সজ আধা চা–চামচ ও মৌরি আধা টেবিল চামচ। এই উপাদানগুলো বেটে মিহি করে নিতে হবে।

প্রণালি: প্রথমে মাংসে রসুনবাটা, হলুদ, মরিচ ও ধনেগুঁড়া, আদাবাটা, জায়ফল ও জয়ত্রীগুঁড়া, স্পাইস পেস্ট, পেঁয়াজবাটা, গোল মরিচের গুঁড়া, লবণ, পেঁয়াজ বেরেস্তা, আস্ত এলাচি, দারুচিনি এবং শর্ষে তেল দিয়ে খুব ভালো করে মেখে নিতে হবে। এবার মাখানো মাংসে ৩ কাপ পানি দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিন। চুলায় থাকা অবস্থায় আস্তে আস্তে নাড়তে থাকুন। কিছুক্ষণ নাড়ার পর ঢাকনা দিয়ে ২ ঘণ্টা ঢেকে রাখুন। রান্না হয়ে এলে গরমমসলার গুঁড়া দিয়ে একটু নেড়ে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে মেজবান মাংস।

কমলা মুরগি

উপকরণ: মুরগি ১টি (৪ টুকরা করে কেটে নিতে হবে), টক দই ৪ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, কমলা বা মাল্টার রস ১ টেবিল চামচ, টমেটো কেচাপ ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা–চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, আদাবাটা ১ চা–চামচ, রসুনবাটা ১ চা চামচ, গরমমসলার গুঁড়া আধা চা–চামচ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা–চামচ, পাপরিকা ১ চা–চামচ, তেল পরিমাণমতো ও লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে মুরগির মাংসের সঙ্গে টক দই, লেবুর রস, গোলমরিচের গুঁড়া, আদা ও রসুনবাটা, লবণ, শুকনা মরিচের গুঁড়া, পাপরিকাসহ কমলার রস ও চিনি ছাড়া বাকি সব উপকরণ দিয়ে মেখে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। এবার ম্যারিনেট করা মাংসগুলো গরম তেলে শ্যালো ফ্রাই করে নিন। ভাজা হয়ে এলে কমলা লেবুর রস ও ব্রাউন সুগার ছড়িয়ে মাখা–মাখা করে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।