বাড়িতে ব্যথা-বেদনার চিকিৎসা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে এখন অনেকেই বাড়িতে থাকছেন, কেউ বাসা থেকেই অফিসের কাজ করছেন, কেউবা স্রেফ অলস সময় কাটাচ্ছেন। কিন্তু একটানা দীর্ঘসময় কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজ করায়, লম্বা সময় বসে টিভি দেখায় কিংবা ঘাড় ঝুঁকে অনেকক্ষণ মুঠোফোনে ব্যস্ত থাকায় অনেকেরই শরীরে ব্যথা-বেদনা বাড়ছে।

আবার কারও কারও অস্থিসন্ধির ব্যথার সমস্যা আগে থেকেই রয়েছে। ভিটামিন ডি স্বল্পতা, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত ওজন, ডায়বেটিস বা থাইরয়েডের মতো হরমোন জটিলতাও ব্যথার কারণ হতে পারে। তবে নানা রকম অস্থিসন্ধির ব্যাথার অন্যতম কারণ হলো ভুলভঙ্গি বা মেরুদণ্ডকে ভুলভাবে ব্যবহার করে কাজ করা। কিন্তু এ সময় ফিজিওথেরাপি নিতে যাওয়ার কিংবা চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ নেই বললেই চলে। এই পরিস্থিতিতে বাসায়ই কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করলে ব্যথা কমতে পারে:

>গরম বা ঠান্ডা সেঁক সাময়িক ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
কোনো অস্থিসন্ধি ফুলে গেলে ১০-১৫ মিনিট ঠান্ডা সেঁক দিতে পারেন

ভিটামিন ডি: হাড় সুস্থ রাখতে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অপরিহার্য। তাই প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে আটটার মধ্যে বাড়ির ছাদ বা বারান্দায় রোদে কিছু সময় কাটান। এ সময় হাত-পায়ের কিছু অংশ অনাবৃত রাখবেন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যেতে পারে।

অ্যারোবিক এক্সারসাইজ: নিয়মিত সপ্তাহে পাঁচ দিন পঁচিশ মিনিট করে অ্যারোবিক ব্যায়াম করতে হবে। যেমন: জগিং, ইনডোর সাইক্লিং, ট্রেডমিল, ড্যান্সিং, দড়ির লাফের মতো ব্যায়াম। এতে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ে এবং অস্থিসন্ধিতে রক্ত চলাচল বাড়ে।
মোবিলাইজেশন এক্সারসাইজ: মোবিলাইজেশন এক্সারসাইজ করতে হবে। যেমন: পা সোজা করে বসে পায়ের পাতা সামনে-পেছনে, ডানে-বামে এবং চারদিকে ঘোরাতে হবে। প্রতিটি ব্যায়াম দশবার করে করতে হবে।

গরম বা ঠান্ডা সেঁক: গরম বা ঠান্ডা সেঁক সাময়িক ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। কোনো অস্থিসন্ধি ফুলে গেলে ১০-১৫ মিনিট ঠান্ডা সেঁক দিতে পারেন। তবে সরাসরি বরফ দেওয়া যাবে না। এতে আইসবার্ন হতে পারে। ব্যথা দীর্ঘদিনের হলে কিংবা ফোলা না থাকলে গরম পানির সেঁক দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

সঠিক দেহভঙ্গি: আমাদের বসা, হাঁটা, দাঁড়ানোর সময় মেরুদণ্ডকে সোজা রাখা প্রয়োজন। মেরুদণ্ড ঝুঁকে কোনো কাজ করা যাবে না।

ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন বেশি হলে অস্থিসন্ধির ওপর চাপ পড়ে। কাজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

 লেখক: ফিজিওথেরাপি পরামর্শক, পিটিআরসি